সীমাহীন জ্বালানির সন্ধানে চীনের যুগান্তকারী আবিষ্কার! চলবে ৬০ হাজার বছর
বিশ্বজুড়ে যখন জ্বালানি সংকট ও পরিবেশ দূষণের উদ্বেগ বাড়ছে, তখন এক অবিশ্বাস্য আবিষ্কারের দাবি করেছে চীন। দেশটির ভূবিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ইনার মঙ্গোলিয়ার বায়ান ওবো খনিজ কমপ্লেক্সে বিশাল পরিমাণ থোরিয়ামের সন্ধান মিলেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই জ্বালানি চীনের বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ৬০ হাজার বছর পর্যন্ত টিকে থাকতে পারে!
থোরিয়াম হলো একটি তেজস্ক্রিয় ধাতু, যা পরমাণু শক্তির বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি ইউরেনিয়ামের তুলনায় নিরাপদ এবং পারমাণবিক চুল্লিতে ব্যবহারের ক্ষেত্রে দুর্ঘটনার ঝুঁকি অনেক কম। গবেষকদের দাবি, নতুন এই উৎস উত্তোলন ও ব্যবহারের মাধ্যমে চীন শুধু নিজ দেশেই নয়, বিশ্বজুড়ে শক্তির চাহিদা মেটানোর সক্ষমতা অর্জন করতে পারে।
দক্ষিণ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বায়ান ওবো খনিতে কমপক্ষে ১০ লাখ টন থোরিয়াম মজুত রয়েছে। গবেষকদের মতে, শুধু এই একটি খনির থোরিয়াম উত্তোলন করলেই তা জীবাশ্ম জ্বালানির বিকল্প হিসেবে বিশ্বব্যাপী শক্তির সংকট দূর করতে পারে। এমনকি, পাঁচ বছরের ব্যবধানে চীনের এক লোহার আকরিকের খনির বর্জ্য থেকেই এত পরিমাণ থোরিয়াম পাওয়া সম্ভব যা যুক্তরাষ্ট্রের কমপক্ষে এক হাজার বছরের বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাতে সক্ষম!
বর্তমানে, চীন, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া পরমাণু শক্তির নতুন ও নিরাপদ উৎসের সন্ধানে প্রতিযোগিতায় নেমেছে। থোরিয়াম-চালিত পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র, বিশেষ করে “মল্টেন-সল্ট রিঅ্যাক্টর,” ভবিষ্যতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে একটি বিপ্লব আনতে পারে। এটি শুধু শক্তির নির্ভরযোগ্য উৎস নয়, বরং পরিবেশবান্ধবও।
তবে, থোরিয়ামের বাণিজ্যিক ব্যবহার এখনও পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে। এটি পূর্ণমাত্রায় কাজে লাগাতে হলে উন্নত প্রযুক্তি, গবেষণা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। চীন যদি থোরিয়াম শক্তি উৎপাদনে সফল হয়, তবে এটি বিশ্ব জ্বালানি বাজারে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারে এবং শক্তির ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে পারে।