ঢাকা ০৪:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৬ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

এলডিসি উত্তরণের চ্যালেঞ্জ ও রপ্তানি বৈচিত্র্য প্রসারিত করার আহ্বান বাণিজ্য উপদেষ্টার

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০২:০৬:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫
  • / 32

ছবি: সংগৃহীত

 

বাংলাদেশ ২০২৬ সালের নভেম্বরে নিম্ন আয়ের দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তিনি বলেন, এই রূপান্তর কেবল আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি নয়, বরং অর্থনৈতিক কাঠামোকে আরও শক্তিশালী করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।

বুধবার ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের রপ্তানি বৈচিত্র্য: এলডিসি স্নাতক পরবর্তী চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন চূড়ান্ত হলেও আমাদের আসল চ্যালেঞ্জ হলো রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণ করা। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে নিজেদের রোড ম্যাপ তৈরি করতে হবে, যাতে ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা যায়। আলোচনা নয়, এখন সময় বাস্তবমুখী কর্মপরিকল্পনা নেওয়ার। বিশ্লেষণ করে দেখতে হবে, কীভাবে আমরা গ্র্যাজুয়েশনের পরও প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকতে পারি।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন এফবিসিসিআই প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন, ট্রেড ও ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মইনুল খান এবং বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান।

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, আমি যখন সিরামিক রপ্তানি শুরু করি, তখন এই খাতের বিভিন্ন দিক বিশ্লেষণ করেছিলাম শ্রম খরচ, জ্বালানি ব্যয়, বিনিয়োগের সম্ভাবনা। সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা দ্বিগুণ করা সম্ভব হয়েছে। তবে এখনো রপ্তানির পরিমাণ আমাদের প্রত্যাশিত নয়। সামনের দিনগুলোতে এ খাতের উন্নয়নে আরও বড় উদ্যোগ নিতে হবে।

তিনি বলেন, দুর্নীতি পুরোপুরি বন্ধ করা না গেলেও দুর্নীতির পথ কঠিন করা সম্ভব। অতীতের ফ্যাসিস্ট সরকার আমলে বিশাল অঙ্কের অর্থ পাচার হয়েছিল, যা এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। আমাদের নজর দিতে হবে বাজার ব্যবস্থাপনায়, যাতে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে থাকে। বিশেষ করে চালের দাম স্থিতিশীল রাখতে খাদ্য উপদেষ্টার সঙ্গে পরামর্শ করা হবে।

দেশীয় বাজার দিন দিন বড় হচ্ছে, অথচ রপ্তানি বাজার তেমন প্রসারিত হচ্ছে না। এর প্রধান কারণ, একই খাতে একাধিক ব্যবসায়ী সংগঠনের উপস্থিতি, যা সম্মিলিত কণ্ঠস্বর তৈরি করতে ব্যর্থ হচ্ছে। ব্যবসায় প্রতিযোগিতা থাকবেই, তবে কৌশলগত সিদ্ধান্ত নিতে না পারলে বাজার হারানোর শঙ্কা থেকেই যায়।

তিনি বলেন, অনেকে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) ও সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (সিইপিএ) নিয়ে আলোচনা করছেন। তবে এসব চুক্তি বাস্তবায়ন সহজ নয়। আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতার জন্য সুনির্দিষ্ট নীতি গ্রহণ করতে হবে, যাতে বাংলাদেশ তার রপ্তানি সম্ভাবনা সর্বোচ্চ কাজে লাগাতে পারে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এলডিসি উত্তরণের চ্যালেঞ্জ ও রপ্তানি বৈচিত্র্য প্রসারিত করার আহ্বান বাণিজ্য উপদেষ্টার

আপডেট সময় ০২:০৬:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫

 

বাংলাদেশ ২০২৬ সালের নভেম্বরে নিম্ন আয়ের দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তিনি বলেন, এই রূপান্তর কেবল আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি নয়, বরং অর্থনৈতিক কাঠামোকে আরও শক্তিশালী করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।

বুধবার ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) আয়োজিত ‘বাংলাদেশের রপ্তানি বৈচিত্র্য: এলডিসি স্নাতক পরবর্তী চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন চূড়ান্ত হলেও আমাদের আসল চ্যালেঞ্জ হলো রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণ করা। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে নিজেদের রোড ম্যাপ তৈরি করতে হবে, যাতে ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা যায়। আলোচনা নয়, এখন সময় বাস্তবমুখী কর্মপরিকল্পনা নেওয়ার। বিশ্লেষণ করে দেখতে হবে, কীভাবে আমরা গ্র্যাজুয়েশনের পরও প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকতে পারি।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন এফবিসিসিআই প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন, ট্রেড ও ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মইনুল খান এবং বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান।

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, আমি যখন সিরামিক রপ্তানি শুরু করি, তখন এই খাতের বিভিন্ন দিক বিশ্লেষণ করেছিলাম শ্রম খরচ, জ্বালানি ব্যয়, বিনিয়োগের সম্ভাবনা। সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা দ্বিগুণ করা সম্ভব হয়েছে। তবে এখনো রপ্তানির পরিমাণ আমাদের প্রত্যাশিত নয়। সামনের দিনগুলোতে এ খাতের উন্নয়নে আরও বড় উদ্যোগ নিতে হবে।

তিনি বলেন, দুর্নীতি পুরোপুরি বন্ধ করা না গেলেও দুর্নীতির পথ কঠিন করা সম্ভব। অতীতের ফ্যাসিস্ট সরকার আমলে বিশাল অঙ্কের অর্থ পাচার হয়েছিল, যা এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। আমাদের নজর দিতে হবে বাজার ব্যবস্থাপনায়, যাতে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে থাকে। বিশেষ করে চালের দাম স্থিতিশীল রাখতে খাদ্য উপদেষ্টার সঙ্গে পরামর্শ করা হবে।

দেশীয় বাজার দিন দিন বড় হচ্ছে, অথচ রপ্তানি বাজার তেমন প্রসারিত হচ্ছে না। এর প্রধান কারণ, একই খাতে একাধিক ব্যবসায়ী সংগঠনের উপস্থিতি, যা সম্মিলিত কণ্ঠস্বর তৈরি করতে ব্যর্থ হচ্ছে। ব্যবসায় প্রতিযোগিতা থাকবেই, তবে কৌশলগত সিদ্ধান্ত নিতে না পারলে বাজার হারানোর শঙ্কা থেকেই যায়।

তিনি বলেন, অনেকে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) ও সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (সিইপিএ) নিয়ে আলোচনা করছেন। তবে এসব চুক্তি বাস্তবায়ন সহজ নয়। আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতার জন্য সুনির্দিষ্ট নীতি গ্রহণ করতে হবে, যাতে বাংলাদেশ তার রপ্তানি সম্ভাবনা সর্বোচ্চ কাজে লাগাতে পারে।