পর্তুগালে রাজনৈতিক অস্থিরতা: আস্থা ভোটে পরাজিত হয়ে ১১ মাসে পদত্যাগ প্রধানমন্ত্রীর

- আপডেট সময় ০১:১৫:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫
- / 39
পর্তুগালের জাতীয় সংসদে আস্থা ভোটে পরাজিত হয়ে ক্ষমতা হারালেন প্রধানমন্ত্রী লুইস মন্টিনিগ্রো। মঙ্গলবার (১১ মার্চ) দিনভর নানা রাজনৈতিক নাটকীয়তার পর পার্লামেন্টে আনা আস্থা ভোটে অধিকাংশ সংসদ সদস্যই সরকারের বিপক্ষে অবস্থান নেন। ফলে মাত্র ১১ মাস আগে ক্ষমতায় আসা সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট বা ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এডি) সরকারের পতন ঘটে।
পর্তুগালের ২৩০ আসনের পার্লামেন্টে আস্থা ভোটে বিপক্ষে ভোট পড়ে ১৪২টি। প্রধান বিরোধী দলসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়, যা প্রধানমন্ত্রী মন্টিনিগ্রোর জন্য বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়ায়। বিরোধীদের দাবি, প্রধানমন্ত্রী তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন এবং কৌশলগতভাবে পরিস্থিতি এড়ানোর চেষ্টা করছেন।
এখন দেশের প্রেসিডেন্ট মার্সেলো রেবেলো দে সোসা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে নতুন সরকার গঠনের চেষ্টা করবেন, নতুবা আগাম নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবেন। রাজনৈতিক ঐকমত্য না হলে মে মাসে নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অস্থিরতার ধারাবাহিকতা: চার বছরে তৃতীয়বার সরকার পতন পর্তুগালে গত চার বছরে কোনো সরকারই পূর্ণ মেয়াদ শেষ করতে পারেনি। ২০২২ সালে সোশ্যালিস্ট পার্টির (পিএস) নেতা আন্তোনিও কস্তা প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। তবে তার সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় ২০২৩ সালে তদন্ত শুরু হয় এবং একই বছরের নভেম্বরে তিনি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। এরপর ২০২৪ সালের মার্চে মধ্য-ডানপন্থী ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এডি) সর্বাধিক আসন পেয়ে ক্ষমতায় এলেও নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে ব্যর্থ হয়। চরম ডানপন্থী দল চেগা (সিএইচইজিএ)-র সমর্থন নিতে গিয়ে সরকার আরও দুর্বল হয়ে পড়ে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, পর্তুগালের বর্তমান পরিস্থিতি দেশটির স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। পরপর তিনবার সরকার পরিবর্তনের ফলে প্রশাসনিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে এবং জনগণের মধ্যে আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে।
সরকার পতনের পর দেশজুড়ে চরম অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে। নতুন নির্বাচন হলে পর্তুগালের জনগণ কি এবার স্থিতিশীল সরকার উপহার পাবে, নাকি রাজনৈতিক অস্থিরতা চলতেই থাকবে তা এখন সময়ই বলে দেবে।