নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে এখনো পুরোপুরি আশ্বস্ত নয় বিএনপি: মোশাররফ হোসেন

- আপডেট সময় ১১:৫৯:১৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫
- / 6
নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্যে বিএনপি এখনো শতভাগ আশ্বস্ত নয় বলে মন্তব্য করেছেন দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশাররফ হোসেন। তিনি জানান, প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে কিছু অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে।
সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশোতে তিনি বলেন, বিএনপি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন চায়। কেন এই সময়সীমা? তার পেছনে রয়েছে স্পষ্ট কিছু কারণ। ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হলে সুষ্ঠু পরিবেশে ভোটগ্রহণ সম্ভব। তবে কেউ কেউ প্রস্তাব করছেন রমজানের আগে কিংবা রাজনৈতিক সমঝোতার ভিত্তিতে অন্য সময়ে নির্বাচন করার। ড. ইউনূস এবং সরকার যদি মনে করেন, ডিসেম্বরেই নির্বাচন হলে বিএনপির শর্ত মেনে নেয়া হচ্ছে, তাহলে বিএনপি রাজনৈতিক সমঝোতায়ও বিশ্বাসী।
মোশাররফ হোসেন বলেন, রাজনীতিতে পারস্পরিক বোঝাপোড়া সবচেয়ে বড় শক্তি। সেক্ষেত্রে ফেব্রুয়ারি বা মার্চে নির্বাচন হলে বিএনপির আপত্তি নেই। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টার কথায় যে ধরণের অনিশ্চয়তা রয়েছে, তাতে বিএনপি পুরোপুরি স্বস্তিতে নেই।
তিনি আরও বলেন, একটি প্রচারণা চালানো হচ্ছে যে বিএনপি শুধুই নির্বাচন চায়, কোনো সংস্কার চায় না। অথচ বাস্তবতা ভিন্ন। এপ্রিল মাসে দেশে কখনো নির্বাচন হয়নি, কারণ এ সময় বৈরি আবহাওয়া এবং রমজানের কারণে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত থাকে। মার্চের মাঝামাঝি থেকে রমজান শুরু, এরপর এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা, ফলে এপ্রিলের নির্বাচন অবাস্তব। তিনি অভিযোগ করেন, পরিকল্পিতভাবে এমন সময়ের কথা বলা হচ্ছে যেন এপ্রিলে ভোট সম্ভব না হয়, এবং আবার ডিসেম্বরেই ফিরে যেতে হয়।
মোশাররফ হোসেন আরও বলেন, দেশের সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক সংকট, ব্যাংকে অর্থের ঘাটতি, বৈদেশিক সহায়তার অভাব এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মনোবল ভেঙে যাওয়ার ফলে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, ২৬টি দেশের ইন্টেরিম সরকারের অভিজ্ঞতা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, কোনো দেশেই ইন্টেরিম সরকার সফল হতে পারেনি।
বিএনপির এই নেতা সতর্ক করে বলেন, অর্থনৈতিক স্থবিরতা, আইনশৃঙ্খলার অবনতি এবং সামাজিক অনিশ্চয়তা মিলিয়ে বাংলাদেশ একটি মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে আছে। এই ঝুঁকি দীর্ঘ হলে রাষ্ট্রের টিকে থাকা কঠিন হয়ে যাবে। তাই বিএনপি চায় ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন হোক, যাতে অর্থনীতি ও সমাজ স্বাভাবিক ধারায় ফিরতে পারে। তবে বৃহত্তর স্বার্থে কোনো রাজনৈতিক সমঝোতা হলে বিএনপি আলোচনায় বসতে প্রস্তুত বলেও জানান তিনি।