ঢাকা ১০:১১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫, ১৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
সারা দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত ১০ হাজার ছাড়াল, ২৪ ঘণ্টায় নতুন ৪২৯ জন জুলাই ঘোষণাপত্র বাস্তবায়নে সরকারের অগ্রগতি নেই: অভিযোগ নাহিদ ইসলামের পাকিস্তানকে ৩৪০ কোটি ডলারের বাণিজ্যিক ঋণ নবায়ন দিল চীন প্রেমিকার বিয়ের খবর শুনে কিশোরের ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা পদ্মা নদীতে ভয়াবহ ভাঙন: কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় আতঙ্কে নদীপাড়ের মানুষ ক্যাম্পাসে সন্ত্রাস ফিরিয়ে আনতে ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে একটি মহল: ছাত্রশিবির সভাপতি হারিয়ে যাচ্ছে আবহমান বাংলার ঐতিহ্যবাহী ‘গুলতি’ মিসাইল সাথে রাখলেও আমি, আপনি কেউই নিরাপদ নই: উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ শেরপুরের হলদীগ্রাম সীমান্তে ২৭৬ বোতল ভারতীয় মদ জব্দ পাকিস্তান ও ভারতে বন্যা পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতি, মৃত্যু সংখ্যা বেড়ে ৭৯

ইরানের কারাগারে ইসরায়েলি হামলায় ৭১ জন নিহত, নিখোঁজ বহু বন্দি

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১০:২৯:২২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫
  • / 6

ছবি: সংগৃহীত

 

তেহরানের এভিন কারাগারে ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ৭১ জনের মৃত্যু হয়েছে। রোববার ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আইআরএনএ এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। নিহতদের মধ্যে বন্দি, তাদের স্বজন ও কারাগারের কর্মীরাও রয়েছেন।

ইরানের বিচার বিভাগের মুখপাত্র আসগার জাহাঙ্গীর এ তথ্য জানালেও হতাহতদের নাম প্রকাশ করেননি। হামলার পর থেকে অনেক বন্দির পরিবারের সঙ্গে তাদের প্রিয়জনদের কোনো যোগাযোগ হয়নি, ফলে উদ্বেগে রয়েছেন স্বজনরা।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, এভিন কারাগারে কয়েক হাজার বন্দি আছেন, যাদের মধ্যে বিরোধী রাজনৈতিক কর্মী, মানবাধিকারকর্মী, সাংবাদিক, আইনজীবী ও শিক্ষার্থী রয়েছেন। এছাড়া, অনেক বিদেশি ও দ্বৈত নাগরিকও সেখানে আটক, যাদের বেশিরভাগকেই গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে কারাবন্দি করা হয়েছে।

মানবাধিকার সংগঠনগুলোর দাবি, এ কারাগারে বন্দিদের ওপর নির্যাতন, ধর্ষণ, মানসিক নিপীড়ন এবং একাকী কারাবাসের ঘটনা নিত্যনৈমিত্তিক। অনেক সাবেক বন্দিও এই নির্যাতনের সত্যতা স্বীকার করেছেন।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় হামলার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। ফলে এই হামলার বিষয়টি স্বাধীনভাবে যাচাই করা যায়নি। তবে ২৩ জুনের হামলার দিন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানিয়েছিলেন, এভিন কারাগারের পাশাপাশি ইরানের আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে।

এর মধ্যে ছিল বাসিজ বাহিনীর সদর দপ্তর, যারা ইরানে সরকারবিরোধী আন্দোলন দমনে সক্রিয়। ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ১২ দিনের এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত ৬০০ জনের বেশি ইরানি নিহত হয়েছেন।

এভিন কারাগারে হামলায় কারাগারের প্রধান প্রসিকিউটর আলি ঘানাতকার নিহত হয়েছেন বলে জানায় ইরানি সংবাদমাধ্যম। তিনি শান্তিতে নোবেলজয়ী নারগিস মোহাম্মদিসহ অনেক বিরোধী রাজবন্দীর মামলার প্রধান তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন। হামলার পর কারাগারের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, যা বন্দিদের পরিবারে নতুন করে আতঙ্ক তৈরি করেছে।

এক বন্দির বোন আয়দা ইউনেসি সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, ‘আমাদের প্রিয়জন কোথায়?’ তিনি জানান, ২০২০ সাল থেকে আটক থাকা তার ভাই আলি ইউনেসির খোঁজ মিলছে না।

হামলার পর কিছু বন্দিকে তেহরানের অন্যান্য কারাগারে স্থানান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আইআরএনএ, তবে কতজন বা কোথায় তা স্পষ্ট নয়। স্বজনদের না জানিয়ে এই স্থানান্তরে ক্ষুব্ধ অনেক পরিবার।

হামলায় এভিনের ক্লিনিক, ইঞ্জিনিয়ারিং ভবন, সাক্ষাৎ হল ও বিচারালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আশপাশের ঘরবাড়ি ও সম্পদও ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে বলে জানিয়েছেন জাহাঙ্গীর।

প্রসঙ্গত, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় ইরান-ইসরায়েলের ১২ দিনের যুদ্ধের আপাতত সমাপ্তি হয়েছে।

সূত্র: নিউইয়র্ক টাইমস

নিউজটি শেয়ার করুন

ইরানের কারাগারে ইসরায়েলি হামলায় ৭১ জন নিহত, নিখোঁজ বহু বন্দি

আপডেট সময় ১০:২৯:২২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫

 

তেহরানের এভিন কারাগারে ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ৭১ জনের মৃত্যু হয়েছে। রোববার ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আইআরএনএ এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। নিহতদের মধ্যে বন্দি, তাদের স্বজন ও কারাগারের কর্মীরাও রয়েছেন।

ইরানের বিচার বিভাগের মুখপাত্র আসগার জাহাঙ্গীর এ তথ্য জানালেও হতাহতদের নাম প্রকাশ করেননি। হামলার পর থেকে অনেক বন্দির পরিবারের সঙ্গে তাদের প্রিয়জনদের কোনো যোগাযোগ হয়নি, ফলে উদ্বেগে রয়েছেন স্বজনরা।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, এভিন কারাগারে কয়েক হাজার বন্দি আছেন, যাদের মধ্যে বিরোধী রাজনৈতিক কর্মী, মানবাধিকারকর্মী, সাংবাদিক, আইনজীবী ও শিক্ষার্থী রয়েছেন। এছাড়া, অনেক বিদেশি ও দ্বৈত নাগরিকও সেখানে আটক, যাদের বেশিরভাগকেই গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে কারাবন্দি করা হয়েছে।

মানবাধিকার সংগঠনগুলোর দাবি, এ কারাগারে বন্দিদের ওপর নির্যাতন, ধর্ষণ, মানসিক নিপীড়ন এবং একাকী কারাবাসের ঘটনা নিত্যনৈমিত্তিক। অনেক সাবেক বন্দিও এই নির্যাতনের সত্যতা স্বীকার করেছেন।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় হামলার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। ফলে এই হামলার বিষয়টি স্বাধীনভাবে যাচাই করা যায়নি। তবে ২৩ জুনের হামলার দিন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানিয়েছিলেন, এভিন কারাগারের পাশাপাশি ইরানের আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে।

এর মধ্যে ছিল বাসিজ বাহিনীর সদর দপ্তর, যারা ইরানে সরকারবিরোধী আন্দোলন দমনে সক্রিয়। ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ১২ দিনের এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত ৬০০ জনের বেশি ইরানি নিহত হয়েছেন।

এভিন কারাগারে হামলায় কারাগারের প্রধান প্রসিকিউটর আলি ঘানাতকার নিহত হয়েছেন বলে জানায় ইরানি সংবাদমাধ্যম। তিনি শান্তিতে নোবেলজয়ী নারগিস মোহাম্মদিসহ অনেক বিরোধী রাজবন্দীর মামলার প্রধান তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন। হামলার পর কারাগারের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, যা বন্দিদের পরিবারে নতুন করে আতঙ্ক তৈরি করেছে।

এক বন্দির বোন আয়দা ইউনেসি সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, ‘আমাদের প্রিয়জন কোথায়?’ তিনি জানান, ২০২০ সাল থেকে আটক থাকা তার ভাই আলি ইউনেসির খোঁজ মিলছে না।

হামলার পর কিছু বন্দিকে তেহরানের অন্যান্য কারাগারে স্থানান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আইআরএনএ, তবে কতজন বা কোথায় তা স্পষ্ট নয়। স্বজনদের না জানিয়ে এই স্থানান্তরে ক্ষুব্ধ অনেক পরিবার।

হামলায় এভিনের ক্লিনিক, ইঞ্জিনিয়ারিং ভবন, সাক্ষাৎ হল ও বিচারালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আশপাশের ঘরবাড়ি ও সম্পদও ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে বলে জানিয়েছেন জাহাঙ্গীর।

প্রসঙ্গত, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় ইরান-ইসরায়েলের ১২ দিনের যুদ্ধের আপাতত সমাপ্তি হয়েছে।

সূত্র: নিউইয়র্ক টাইমস