নিম্ন আদালতের বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধি স্থগিত করল আপিল বিভাগ

- আপডেট সময় ১২:০৪:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫
- / 8
নিম্ন আদালতের বিচারকদের জন্য প্রণীত শৃঙ্খলাবিধি অনুমোদন করে সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি আবদুল ওয়াহহাব মিঞার নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চের আদেশ স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ।
রোববার (২৯ জুন) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এই স্থগিতাদেশ দেন।
আইনজীবীদের ভাষ্য অনুযায়ী, এই আদেশের ফলে অধস্তন আদালতের বিচারকদের শৃঙ্খলার বিষয়টি সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ সংশ্লিষ্ট মামলার নিষ্পত্তিতে আর কোনো আইনি বাধা থাকছে না।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৪ সালে অধস্তন আদালতের বিচারকদের বেতন গ্রেড একধাপ কমিয়ে দিলে তৎকালীন জেলা জজ ও জুডিশিয়াল অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মাসদার হোসেনসহ ২১৮ জন বিচারক হাইকোর্টে রিট করেন। শুনানি শেষে ১৯৯৫ সালের ১৯ নভেম্বর হাইকোর্ট সেই সিদ্ধান্ত স্থগিত করে এবং বিসিএস ক্যাডারের আওতায় বিচারকদের অন্তর্ভুক্তির বৈধতা নিয়ে রুল জারি করে।
পরবর্তীতে ১৯৯৭ সালের ৭ মে হাইকোর্ট জুডিশিয়াল সার্ভিসকে স্বতন্ত্র সার্ভিস ঘোষণা করেন এবং এই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করে। ১৯৯৯ সালের ২ ডিসেম্বর আপিল বিভাগ ১২টি নির্দেশনা দিয়ে বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে আলাদা করার চূড়ান্ত রায় দেন।
মাসদার হোসেন মামলার এই ঐতিহাসিক রায়ের প্রায় আট বছর পর ২০০৭ সালে বিচার বিভাগকে আলাদা করা হলেও নির্দেশনার কিছু অংশ বাস্তবায়ন ঝুলে থাকে।
পরবর্তীতে আইন মন্ত্রণালয় বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধির একটি খসড়া সুপ্রিম কোর্টে পাঠায়, যা ১৯৮৫ সালের সরকারি কর্মচারী শৃঙ্খলা বিধিমালার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ হওয়ায় আপিল বিভাগ তা মাসদার হোসেন মামলার রায়ের পরিপন্থী বলে উল্লেখ করেন। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এই বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং খসড়াটি সংশোধন করে চূড়ান্ত আকারে আদালতে উপস্থাপনের নির্দেশ দেন।
তবে সরকারের সঙ্গে মতবিরোধের কারণে এই বিধিমালা গেজেট আকারে প্রকাশ ঝুলে যায়। এর মধ্যেই ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েন বিচারপতি এস কে সিনহা, যার ফলে তিনি ছুটি নিয়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন এবং পরবর্তীতে পদত্যাগ করেন।
বিচারপতি সিনহার পদত্যাগের পর ২০১৮ সালের ৩ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞার নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ নিম্ন আদালতের বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধি অনুমোদন করে আদেশ দেন।
তবে এই গেজেটের মাধ্যমে শাসন বিভাগের বিচার বিভাগের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে দাবি করে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবীরা, যার মধ্যে ছিলেন ড. কামাল হোসেন, রফিক-উল হক, এম আমীর-উল ইসলাম, মইনুল হোসেন, এ এফ হাসান আরিফ ও ফিদা এম কামাল।