গাজায় ইসরাইলি অবরোধে অপুষ্টিতে ৬৬ শিশুর মৃত্যু

- আপডেট সময় ১০:৫১:০৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫
- / 6
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের টানা অবরোধ ও সহিংস হামলার মধ্যে অপুষ্টিতে অন্তত ৬৬ শিশু মৃত্যুবরণ করেছে। শনিবার (২৮ জুন) গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস থেকে এই তথ্য জানানো হয়।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজার প্রশাসন অভিযোগ করেছে, দুধ, পুষ্টিকর খাদ্য এবং অন্যান্য মানবিক সহায়তা প্রবেশে বাধা দেয়ায় এমন মর্মান্তিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। গাজার মিডিয়া প্রশাসন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইসরাইলের এই অবরোধ স্পষ্টতই যুদ্ধাপরাধ। পরিকল্পিতভাবে খাদ্যকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে বেসামরিক মানুষের জীবনে ভয়াবহ সংকট সৃষ্টি করা হচ্ছে।
এদিকে তুফাহ, দেইর আল বালাহ, রাফা, খান ইউনিসসহ গাজার বিভিন্ন এলাকায় ইসরাইলি বিমান হামলা অব্যাহত রয়েছে। শনিবার দিনভর হামলায় অন্তত ৬০ জন নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই শিশু ও নারী।
শনিবার ভোরে আল তুফাহ এলাকায় ভয়াবহ বিমান হামলায় কেঁপে ওঠে পুরো গাজা সিটি। ওই সময় বহু মানুষ আশ্রয় নিচ্ছিল জাফা স্কুলের কাছে একটি বহুতল ভবনে। বোমার আঘাতে ভবনটির তিনটি তলা একসঙ্গে ধসে পড়ে। এতে শিশুসহ বহু মানুষ নিহত হন, আহত হয়েছেন আরও অনেকেই। নিহতদের স্বজনদের কান্না আর শোকের আবহ ছড়িয়ে পড়েছে চারপাশে।
এছাড়া ফিলিস্তিনের স্টেডিয়ামের পাশে একটি আশ্রয়কেন্দ্রেও ইসরাইলি বিমান হামলায় হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। আহতদের অনেকে শিফা হাসপাতালে নেওয়ার পথেই মারা যান। যেসব মানুষ হাসপাতালে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছেন, তাদের অনেককেই চিকিৎসা দিতে পারেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, কারণ হাসপাতালের অর্ধেকের বেশি চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী ইতিমধ্যেই নিহত বা নিখোঁজ হয়েছেন।
দেইর আল বালাহ এলাকায় শনিবার দুপুরে সড়কে বোমা হামলায়ও একসঙ্গে অনেক মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম হারেৎজ জানিয়েছে, গাজায় ইসরাইলি গণহত্যায় এখন পর্যন্ত প্রায় ১ লাখ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যা অঞ্চলটির মোট জনসংখ্যার প্রায় চার শতাংশ।
হারেৎজ আরও জানায়, ইসরাইলি হামলায় সরাসরি নিহতের পাশাপাশি গাজার ভেঙে পড়া স্বাস্থ্য ব্যবস্থার কারণে ক্ষুধা, ঠান্ডা এবং নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন বহু মানুষ।
অবরোধের কারণে মানবিক সহায়তা প্রবেশও প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং রেড ক্রস জানিয়েছে, মার্চের পর এবারই প্রথম সীমিত আকারে কিছু চিকিৎসা সামগ্রী গাজায় প্রবেশের অনুমতি পেয়েছে, তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই অপ্রতুল।