অস্ট্রিয়ার স্কুলে রক্তক্ষয়ী হামলা: নিহত বেড়ে ১১, বন্দুকধারী ছিল কে?

- আপডেট সময় ০১:২৫:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ জুন ২০২৫
- / 9
অস্ট্রিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর গ্রাজের একটি হাইস্কুলে ভয়াবহ বন্দুক হামলায় কমপক্ষে ১১ জন নিহত হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে এ হামলার ঘটনা ঘটে, যা দেশটির ইতিহাসে যুদ্ধবিরতির সময়ের অন্যতম প্রাণঘাতী সহিংসতা হিসেবে ধরা হচ্ছে।
স্থানীয় সময় সকাল ১০টার দিকে দক্ষিণাঞ্চলীয় স্টাইরিয়া প্রদেশের রাজধানী গ্রাজে অবস্থিত একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গুলি চালানো হয়। পুলিশ ও শহরের মেয়র নিশ্চিত করেছেন, নিহতদের মধ্যে সাতজন শিক্ষার্থী, দুইজন প্রাপ্তবয়স্ক এবং হামলাকারী নিজেও রয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন অন্তত ৩০ জন।
পুলিশ জানায়, বন্দুকধারী ছিলেন ২১ বছর বয়সী এক সাবেক ছাত্র, যিনি এক সময় ওই স্কুলেই পড়তেন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের মতে, তিনি অতীতে সহপাঠীদের দ্বারা নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। তবে তার এই হামলার পেছনে সেই ক্ষোভই কারণ কিনা, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
হামলাকারী পিস্তল ও শটগান ব্যবহার করে দুটি শ্রেণিকক্ষে গুলি চালান, যার একটি ছিল তার পূর্বের ক্লাসরুম। পরে তাকে স্কুলের এক বাথরুমে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তদন্তকারীরা ধারণা করছেন, তিনি আত্মহত্যা করেছেন এবং হামলাটি এককভাবেই সংঘটিত।
ঘটনার পর স্কুলটি সম্পূর্ণভাবে খালি করে ফেলা হয় এবং পুলিশ, অ্যাম্বুলেন্স ও একটি হেলিকপ্টার মোতায়েন করা হয়। অভিভাবকদের জন্য নিরাপদ অবস্থানে থাকার ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর ক্রিশ্চিয়ান স্টকার একে ‘জাতীয় ট্র্যাজেডি’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “এই ঘটনা আমাদের জাতিকে গভীরভাবে নাড়িয়ে দিয়েছে।” রাষ্ট্রপতি আলেক্সান্ডার ভ্যান ডার বেলেন বলেন, “নিহত তরুণদের সামনে ছিল একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ। এই ক্ষতি কখনোই পূরণ হবে না।”
ঘটনার পরপরই অস্ট্রিয়ান সরকার তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে।
ইইউ পররাষ্ট্রনীতি প্রধান কায়া ক্যালাস বলেন, “প্রত্যেক শিশুর অধিকার রয়েছে নিরাপদে স্কুলে পড়াশোনা করার।” ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ফন ডার লেইন একে ‘ভবিষ্যতের প্রতীকে’ আঘাত বলে বর্ণনা করেছেন। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও এমন ঘটনার নিন্দা জানান।
উল্লেখ্য, অস্ট্রিয়ায় আগ্নেয়াস্ত্রের প্রচলন ইউরোপের মধ্যে অন্যতম বেশি। প্রতি ১০০ জনে প্রায় ৩০টি অস্ত্র রয়েছে। যদিও মেশিনগান ও পাম্প-অ্যাকশন গান নিষিদ্ধ, তবে ব্যক্তিগতভাবে পিস্তল বা রিভলভার রাখার অনুমতি রয়েছে।
এমন মর্মান্তিক ঘটনায় অস্ট্রিয়ার শান্তিপূর্ণ ভাবমূর্তি আজ প্রশ্নের মুখে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, “এটা তো আমেরিকায় ঘটে, আমাদের শহরে এমন কিছু ঘটবে ভাবতেই পারিনি।”