নারী সুরক্ষায় পুলিশের ডিজিটাল রূপান্তর: চালু হচ্ছে শর্টকোড ৩৩৩৩
নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ ও পুলিশের কার্যক্রম আরও আধুনিক করতে সরকার চারটি গুরুত্বপূর্ণ ডিজিটাল উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এর অংশ হিসেবে নতুন শর্টকোড ৩৩৩৩ চালু করা হচ্ছে, যা নারীরা নির্যাতনের শিকার হলে সহজেই অভিযোগ জানাতে ব্যবহার করতে পারবেন।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদারের পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়। প্রধান উপদেষ্টা, ডাক ও টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব জানান, পুলিশের অভ্যন্তরীণ কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একটি পুলিশ কমান্ড অ্যাপ তৈরির কাজ শুরু হয়েছে।
এছাড়াও, ইন্সিডেন্টস ট্র্যাকিং সফটওয়্যার, অনলাইন সাধারণ ডায়েরি (জিডি), শর্টকোডের মাধ্যমে মামলা বা এফআইআর দাখিলসহ পুলিশের বিভিন্ন আধুনিকায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। নারীদের সহিংসতা প্রতিরোধে চালু হওয়া ৩৩৩৩ শর্টকোডটি জাতীয় হেল্পলাইন ৩৩৩-এর সাথে যুক্ত থাকবে। এই নম্বরে কল করে বা এসএমএস পাঠিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ জানানো যাবে। এছাড়া, কল সেন্টারটিতে শুধুমাত্র নারী কর্মীদের নিয়োগ দেওয়া হবে, যাতে নারীরা নিরাপদ পরিবেশে অভিযোগ জানাতে পারেন।
তবে, এই সেবাটি আপাতত জরুরি সেবা ৯৯৯-এ যুক্ত করা হবে না, বরং ৩৩৩৩ নম্বরটি স্বতন্ত্রভাবে পরিচালিত হবে। অনলাইনে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) ব্যবস্থাতেও পরিবর্তন আসছে, যেখানে অনলাইন এফআইআর দাখিলের সুবিধা যুক্ত হবে। কল সেন্টার থেকে প্রোফাইল ডাউনলোডের পর সংশ্লিষ্ট থানায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে অভিযোগ পাঠানো হবে।
এদিকে, পুলিশের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের জন্য একটি নতুন ‘পুশ-টু-টক’ অ্যাপ তৈরি হচ্ছে, যা হোয়াটসঅ্যাপের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হবে। হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারে তথ্য ফাঁসের ঝুঁকি থাকায়, নতুন অ্যাপটিতে তথ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
পুলিশের জন্য আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তিগত উন্নয়ন হচ্ছে ‘ইন্সিডেন্টস ট্র্যাকিং সিস্টেম’, যার মাধ্যমে সব ধরনের বার্তা ও যোগাযোগ সংরক্ষণ করা যাবে। ফলে কোনো অপরাধের পরিপ্রেক্ষিতে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে সফটওয়্যার ট্র্যাক করতে পারবে। এতে সেবা আরও গতিশীল ও সময় সাশ্রয়ী হবে, একইসঙ্গে পুলিশ সদস্যদের কাজের চাপও কমবে।
প্রযুক্তিগত এ উদ্যোগগুলো বাস্তবায়নে আইসিটি বিভাগ সব ধরনের কারিগরি সহায়তা দেবে বলে জানান ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। ইতোমধ্যেই পুলিশ কমান্ড অ্যাপের প্রটোটাইপ তৈরি করা হয়েছে এবং এর উন্নয়ন চলমান। পুলিশের কার্যক্রমকে আরও নিরাপদ, স্বচ্ছ ও প্রযুক্তিনির্ভর করতে এই উদ্যোগগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।