ঢাকা ০৬:২০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫, ১৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
সাবেক মন্ত্রী নুরুজ্জামান ও তার স্ত্রীর স্থাবর সম্পদ জব্দ, ৫৭টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ শিক্ষার্থীদের জন্য সরকারি দপ্তরে পার্টটাইম চাকরির উদ্যোগ ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত রাজনৈতিক কর্মসূচিতে শান্তি বজায় থাকবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নোয়াখালীতে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে যাওয়া এক বিধবাকে গণধর্ষণ লক্ষ্মীপুরে ছেলের হাতে বৃদ্ধ পিতা খুন, ছেলে আটক পাকিস্তান-চীন উদ্যোগে নতুন আঞ্চলিক জোট গঠনের ইঙ্গিত, রয়েছে বাংলাদেশও শেখ হাসিনার মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার যথাসময়ে শেষ হবে: চিফ প্রসিকিউটর এখন সবাই সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করুন, আন্দোলন যা হওয়ার হয়েছে: অর্থ উপদেষ্টা তুরস্কে ভয়াবহ দাবানলের তাণ্ডব, হুমকির মুখে ঘরবাড়ি-শিল্পাঞ্চল নতুন নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে চায় চীন: মির্জা ফখরুল

চা-শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি ও রেশন দাবিতে সিলেটে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৫:১৭:৩৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ মে ২০২৫
  • / 40

ছবি সংগৃহীত

 

সিলেট শহরতলির বুরজান চা-বাগানের ইজারা বাতিল, ২০ সপ্তাহের বকেয়া মজুরি ও রেশন পরিশোধসহ ১১ দফা দাবি আদায়ে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন হাজারো চা-শ্রমিক। আজ রোববার দুপুরে সিলেট-কোম্পানীগঞ্জ-ভোলাগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের লাক্কাতুরা এলাকায় এই কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা।

দুপুর একটা থেকে শুরু হওয়া এই অবরোধ চলে বেলা তিনটা পর্যন্ত। এর মধ্যে বুরজান টি ফ্যাক্টরিসহ ছড়াগাং, কালাগুল ও বুরজান চা-বাগানের বিপুল সংখ্যক শ্রমিক এতে অংশ নেন। তাঁদের হাতে ছিল নানা স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড ‘বকেয়া বেতন ও বোনাস পরিশোধ করো’, ‘রেশন দিতে হবে’, ‘জুলাইয়ের চেতনা শ্রমিক শোষণ আর নয়’, ‘বসতঘর নির্মাণ ও সংস্কার কার্যক্রম চালু করো’ ইত্যাদি।

অবরোধের কারণে মহাসড়কের দুই পাশে যানজটের সৃষ্টি হয়। বহু যানবাহন আটকে পড়ে, দেখা দেয় চরম ভোগান্তি। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তাঁরা শ্রমিকদের বোঝানোর চেষ্টা চালান। তবে লিখিত ও চূড়ান্ত আশ্বাস না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন শ্রমিকরা।

এ সময় সেনাবাহিনীর সদস্যরা দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেন। তাঁরা অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি কয়েকটি যানবাহনের চলাচলের ব্যবস্থা করে দেন।

বিক্ষোভকারী শ্রমিকরা জানান, দীর্ঘদিন ধরেই তাঁরা বেতন, রেশনসহ অন্যান্য মৌলিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত। বারবার প্রশাসনের কাছে ধর্ণা দিয়েও কোনো স্থায়ী সমাধান হয়নি। পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন তাঁরা। তাই বাধ্য হয়েই কঠোর আন্দোলনে নেমেছেন।

বেলা সোয়া তিনটার দিকে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেন সিলেট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খোশনূর রুবাইয়াৎ। তিনি শ্রমিকদের একটি পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে তাত্ক্ষণিক বৈঠকে বসার ঘোষণা দেন এবং বলেন, “বুরজান টি কোম্পানির ইজারা বাতিলের বিষয়টি জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে। অন্য যৌক্তিক দাবিগুলোও বাস্তবায়নে প্রশাসন আন্তরিকভাবে চেষ্টা করবে।”

প্রশাসনের এই আশ্বাসের পর শ্রমিকরা অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন। তবে তাঁরা স্পষ্ট করে দেন, প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে গড়িমসি হলে তাঁরা আরও কঠোর কর্মসূচিতে যাবেন।

সিলেটের চা-শ্রমিকদের এই আন্দোলন আবারও প্রমাণ করলো মজুরি ও ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত মানুষের ধৈর্যচ্যুতি ঘটলে, তারা রাজপথে নামতে বাধ্য হয়। এখন দেখার বিষয়, প্রশাসন তাদের আশ্বাস কতটা দ্রুত বাস্তবায়ন করে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

চা-শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি ও রেশন দাবিতে সিলেটে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ

আপডেট সময় ০৫:১৭:৩৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ মে ২০২৫

 

সিলেট শহরতলির বুরজান চা-বাগানের ইজারা বাতিল, ২০ সপ্তাহের বকেয়া মজুরি ও রেশন পরিশোধসহ ১১ দফা দাবি আদায়ে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন হাজারো চা-শ্রমিক। আজ রোববার দুপুরে সিলেট-কোম্পানীগঞ্জ-ভোলাগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের লাক্কাতুরা এলাকায় এই কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা।

দুপুর একটা থেকে শুরু হওয়া এই অবরোধ চলে বেলা তিনটা পর্যন্ত। এর মধ্যে বুরজান টি ফ্যাক্টরিসহ ছড়াগাং, কালাগুল ও বুরজান চা-বাগানের বিপুল সংখ্যক শ্রমিক এতে অংশ নেন। তাঁদের হাতে ছিল নানা স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড ‘বকেয়া বেতন ও বোনাস পরিশোধ করো’, ‘রেশন দিতে হবে’, ‘জুলাইয়ের চেতনা শ্রমিক শোষণ আর নয়’, ‘বসতঘর নির্মাণ ও সংস্কার কার্যক্রম চালু করো’ ইত্যাদি।

অবরোধের কারণে মহাসড়কের দুই পাশে যানজটের সৃষ্টি হয়। বহু যানবাহন আটকে পড়ে, দেখা দেয় চরম ভোগান্তি। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তাঁরা শ্রমিকদের বোঝানোর চেষ্টা চালান। তবে লিখিত ও চূড়ান্ত আশ্বাস না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন শ্রমিকরা।

এ সময় সেনাবাহিনীর সদস্যরা দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেন। তাঁরা অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি কয়েকটি যানবাহনের চলাচলের ব্যবস্থা করে দেন।

বিক্ষোভকারী শ্রমিকরা জানান, দীর্ঘদিন ধরেই তাঁরা বেতন, রেশনসহ অন্যান্য মৌলিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত। বারবার প্রশাসনের কাছে ধর্ণা দিয়েও কোনো স্থায়ী সমাধান হয়নি। পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন তাঁরা। তাই বাধ্য হয়েই কঠোর আন্দোলনে নেমেছেন।

বেলা সোয়া তিনটার দিকে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেন সিলেট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খোশনূর রুবাইয়াৎ। তিনি শ্রমিকদের একটি পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে তাত্ক্ষণিক বৈঠকে বসার ঘোষণা দেন এবং বলেন, “বুরজান টি কোম্পানির ইজারা বাতিলের বিষয়টি জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে। অন্য যৌক্তিক দাবিগুলোও বাস্তবায়নে প্রশাসন আন্তরিকভাবে চেষ্টা করবে।”

প্রশাসনের এই আশ্বাসের পর শ্রমিকরা অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন। তবে তাঁরা স্পষ্ট করে দেন, প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে গড়িমসি হলে তাঁরা আরও কঠোর কর্মসূচিতে যাবেন।

সিলেটের চা-শ্রমিকদের এই আন্দোলন আবারও প্রমাণ করলো মজুরি ও ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত মানুষের ধৈর্যচ্যুতি ঘটলে, তারা রাজপথে নামতে বাধ্য হয়। এখন দেখার বিষয়, প্রশাসন তাদের আশ্বাস কতটা দ্রুত বাস্তবায়ন করে।