দেশেই তৈরি হচ্ছে মিতসুবিশি ও প্রোটনের গাড়ি, জুনে বাজারে আসছে নতুন মডেল

- আপডেট সময় ১১:৩৭:১৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫
- / 57
দেশেই তৈরি হচ্ছে বিশ্বখ্যাত জাপানি ব্র্যান্ড মিতসুবিশি ও মালয়েশিয়ান ব্র্যান্ড প্রোটনের নতুন মডেলের গাড়ি। গাজীপুরের কাশিমপুরের ভবানীপুর গ্রামে অবস্থিত র্যানকন ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে গড়ে উঠেছে আধুনিক র্যানকন অটো ইন্ডাস্ট্রিজের কারখানা, যেখানে এই গাড়িগুলোর উৎপাদন চলছে।
আগে এই কারখানায় বিদেশ থেকে আমদানি করা যন্ত্রাংশ সংযোজন করা হতো। এখন গাড়ির মূল কাঠামো রং করা, যন্ত্রাংশ সংযোজন ও মান যাচাইয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো স্থানীয়ভাবেই সম্পন্ন হচ্ছে। কারখানাটিকে আধুনিক করতে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে কাজ চলেছে এবং এতে বিনিয়োগ হয়েছে প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা। র্যানকন কর্তৃপক্ষের মতে, দেশীয় উৎপাদন প্রযুক্তিগত অগ্রগতির পাশাপাশি গ্রাহকদের জন্য সাশ্রয়ী দামে গাড়ি কেনার সুযোগ তৈরি করবে।
গত মঙ্গলবার র্যানকন শিল্প পার্ক পরিদর্শন করেন একদল সাংবাদিক। সেখানে তিনটি পৃথক কারখানা রয়েছে—র্যানকন মোটরবাইক, র্যানকন ইলেকট্রনিকস ও র্যানকন অটো ইন্ডাস্ট্রিজ। ২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠিত র্যানকন মোটরবাইক কারখানায় তৈরি হয় জাপানি সুজুকির মোটরসাইকেল। ২০১৬ সালের র্যানকন ইলেকট্রনিকসে তৈরি হয় তোশিবা, এলজি ও স্যামসাংয়ের টেলিভিশন ও ফ্রিজ। আর র্যানকন অটো ইন্ডাস্ট্রিজে তৈরি হচ্ছে ব্যক্তিগত ও বাণিজ্যিক যানবাহন। এই শিল্প পার্কে কর্মরত আছেন প্রায় ৮০০ শ্রমিক ও প্রকৌশলী।
র্যানকন অটো ইন্ডাস্ট্রিজের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা শিহাব আহমেদ জানান, ২০১৭ সালে মিতসুবিশি আউটল্যান্ডার মডেলের গাড়ি সংযোজনের মাধ্যমে র্যানকনের যাত্রা শুরু হয়। বর্তমানে এখানে মিতসুবিশি এক্সপ্যান্ডার ও প্রোটন এক্স-৭০ মডেলের ব্যক্তিগত গাড়ি, চীনের জ্যাক পিকআপ ট্রাক এবং মার্সিডিজ-বেনজ প্রযুক্তির বাস সংযোজন করা হচ্ছে।
কারখানায় মিতসুবিশি ও প্রোটন গাড়ির কাঠামো আমদানি করে রং করা ও যন্ত্রাংশ সংযোজনের পর আন্তর্জাতিক মানের টেস্ট ট্র্যাকে গাড়ির গতি, ব্রেক, সাসপেনশনসহ সব কার্যক্ষমতা পরীক্ষা করা হয়। ভবিষ্যতে এমজি ব্র্যান্ডের গাড়িও সংযোজনের পরিকল্পনা রয়েছে। ২০২৬ সালের মধ্যে চার ধরনের ব্যক্তিগত ও দুই ধরনের বাণিজ্যিক গাড়ি সংযোজনের লক্ষ্য রয়েছে র্যানকনের।
র্যানকন নির্বাহী পরিচালক মো. বদিউজ্জামান জানান, কারখানার বর্তমান সক্ষমতা অনুযায়ী বছরে দুই হাজার ইউনিট মিতসুবিশি এক্সপ্যান্ডার, ৩০০-৪০০ ইউনিট প্রোটন এক্স-৭০, ৬০০ ইউনিট পিকআপ ট্রাক এবং ৩৬০ ইউনিট মার্সিডিজ বাস তৈরি সম্ভব।
মিতসুবিশি এক্সপ্যান্ডার (সাত আসনের) ও প্রোটন এক্স-৭০ (পাঁচ আসনের) গাড়ির পরীক্ষামূলক উৎপাদন ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। আনুষ্ঠানিক বাজারজাতকরণ শুরু হবে আগামী জুনে। মিতসুবিশি এক্সপ্যান্ডার গাড়িটি প্রতি লিটার জ্বালানিতে শহরে চলবে ৮ থেকে ৯ কিলোমিটার। প্রতিটি গাড়িতে থাকবে পাঁচ বছরের গ্যারান্টি।
র্যানকন কর্মকর্তারা জানান, জাপানি মানের গাড়ি দেশেই উৎপাদনের মাধ্যমে বাংলাদেশে গাড়ি শিল্পে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে যাচ্ছে।