জন্মহার বাড়ানোর লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রণোদনা-ভিত্তিক নীতি ঘোষণা তুরস্কের

- আপডেট সময় ০৯:৫৮:০৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫
- / 11
তুরস্কে বিয়ে কমে যাওয়া, ডিভোর্সের হার বাড়া এবং প্রবীণ জনসংখ্যা বাড়তে থাকায় নতুন করে দুশ্চিন্তায় পড়েছে দেশটির প্রশাসন। সমাজে ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে এবং ভবিষ্যতের জনসংখ্যা সংকট মোকাবেলায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে তুরস্ক সরকার। সম্প্রতি রাষ্ট্রপতি রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান একাধিক প্রণোদনামূলক পরিকল্পনার ঘোষণা দিয়েছেন, যার মূল লক্ষ্য জন্মহার বাড়ানো এবং তরুণ প্রজন্মকে পরিবার গঠনে উৎসাহিত করা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের শিশু জন্মহার ক্রমশ কমে আসা এবং বয়স্কদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার ফলে তুরস্কের সামাজিক ও অর্থনৈতিক কাঠামো হুমকির মুখে পড়তে পারে। এই আশঙ্কা থেকেই রাষ্ট্রপতি এরদোয়ান সরাসরি হস্তক্ষেপ করেছেন এবং ২০২৫ সালের শুরু থেকে নতুন একটি কর্মসূচি চালু করা হয়েছে, যেখানে সন্তান নেওয়া দম্পতিদের দেওয়া হচ্ছে অর্থনৈতিক সহায়তা।
এই কর্মসূচির আওতায় প্রথম সন্তানের জন্য দেওয়া হবে এককালীন ৫ হাজার তুর্কি লিরা। দ্বিতীয় সন্তানের জন্মে প্রতি মাসে ১ হাজার ৫০০ লিরা এবং তৃতীয় সন্তানের জন্য প্রতি মাসে ৫ হাজার লিরা করে ভাতা প্রদান করা হবে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৬ হাজার টাকার সমান। এই আর্থিক সহায়তা শুধু দেশের নাগরিকদের জন্য নয়, বরং বিদেশে বসবাসরত তুর্কি নাগরিকরাও কনস্যুলেট বা দূতাবাসের মাধ্যমে আবেদন করে এই সুবিধা গ্রহণ করতে পারবেন।
তুরস্কে গত কয়েক বছরে জীবনযাত্রার ব্যয় অনেক বেড়ে গেছে, যার ফলে তরুণ প্রজন্ম বিয়ে ও পরিবার গঠনের বিষয়ে আগ্রহ হারাচ্ছে। যারা বিয়ের সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, তাদের অনেকেই সন্তান নেওয়ার বিষয়ে দোটানায় থাকছেন। নতুন এই আর্থিক প্রণোদনা পরিবার গঠনে আগ্রহী তরুণদের জন্য একটি ইতিবাচক বার্তা হতে পারে বলে মনে করছেন সমাজবিজ্ঞানীরা।
সরকারের এই উদ্যোগকে অনেকেই বলছেন ‘ভবিষ্যতের নিরাপত্তা পরিকল্পনা’। কারণ সময় থাকতেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নিলে, আগামী দশকে তুরস্ককে বড় ধরণের সামাজিক ও জনসংখ্যাগত সংকটের মুখোমুখি হতে হতে পারে।
রাষ্ট্রপতি এরদোয়ানের মতে, “শক্তিশালী সমাজ গড়তে হলে পরিবারকে কেন্দ্র করে পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। সন্তান হচ্ছে ভবিষ্যতের বিনিয়োগ এটিকে উৎসাহিত করা সময়ের দাবি।”