কারাবন্দি দিবসে পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের বিক্ষোভ, উত্তাল রাজপথ

- আপডেট সময় ১০:৫৫:৫১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫
- / 16
গাজায় রক্তঝরা দিন পেরিয়ে এলেও থেমে নেই ইসরাইলি আগ্রাসন। এরই মধ্যে ১৭ এপ্রিল ফিলিস্তিনি কারাবন্দি দিবসে উত্তাল হয়ে উঠেছে পশ্চিম তীরের রাজপথ। হাজারো ফিলিস্তিনি হাতে প্রিয়জনের ছবি ও চোখে শোকের ছায়া নিয়ে রামাল্লাসহ বিভিন্ন শহরে নেমে এসেছেন। তাদের একটাই দাবি ইসরাইলি কারাগারে থাকা স্বজনদের মুক্তি।
১৯৭৪ সাল থেকে প্রতি বছর এই দিনে ‘প্যালেস্টিনিয়ান প্রিজোনার্স ডে’ পালন করে আসছে ফিলিস্তিনিরা। এবারের দিবসটি আরও বেশি বেদনাদায়ক, কারণ গাজা উপত্যকায় চলছে ইসরাইলি বাহিনীর ভয়াবহ হামলা ও গণহত্যা। বন্দিদের প্রতি শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ বহু পুরনো হলেও, গাজা যুদ্ধ শুরুর পর তা নতুন মাত্রা পেয়েছে।
ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা ওয়াফার তথ্য অনুযায়ী, দিবসটির আগের দিন অর্থাৎ ১৬ এপ্রিল পশ্চিম তীরজুড়ে নানা স্থানে বিক্ষোভ হয়েছে। নাবলুসের শহীদ স্কয়ারে অনুষ্ঠিত একটি বিশাল সমাবেশে শত শত মানুষ অংশ নেন। তুবাস, বেথলেহেম, কালকিলিয়া ও রামাল্লার রাজপথেও ছিল একই চিত্র।
বিক্ষোভকারীরা বলেন, ইসরাইলি কারাগারে থাকা বন্দিরা প্রতিনিয়ত অন্ধকার কক্ষে নির্মম নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। কেউ কেউ বছরের পর বছর বিচার ছাড়াই বন্দি। তারা বলেন, যুদ্ধবিরতির আলোচনায় বন্দিদের মুক্তির বিষয়টি যেন প্রধান শর্ত হয়।
কালকিলিয়ার প্রিজনার্স ক্লাবের পরিচালক লাফি মানসুর জানান, গাজায় চলমান যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে পশ্চিম তীরে ইসরাইলি সেনারা প্রায় ১০ হাজার ফিলিস্তিনিকে আটক করেছে, যা আগের তুলনায় দ্বিগুণ। হামাস বলছে, গাজা যুদ্ধের সময় আটক হওয়া ফিলিস্তিনিদের নিরাপত্তার দায়িত্ব ইসরাইলেরই।
এদিকে গাজায় প্রতিদিনই বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ৩৫ জন নিহত হয়েছেন। মানবিক বিপর্যয় এখন চরমে। খাদ্য, পানি, ওষুধের ঘাটতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে মিশরের মধ্যস্থতায় ৪৫ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পেয়েছে হামাস। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, প্রথম সপ্তাহেই অর্ধেক জিম্মিকে মুক্তি দেবে ইসরাইল, আর বিনিময়ে গাজায় প্রবেশ করবে খাদ্য ও ত্রাণ সহায়তা। হামাস জানিয়েছে, প্রস্তাবটি তারা খতিয়ে দেখছে।
মিশরের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও গাজায় মানবিক বিপর্যয় ঠেকাতে দ্রুত যুদ্ধবিরতির প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন।
ফিলিস্তিনের এই সংগ্রাম আজ কেবল ভূখণ্ডের নয়, বরং মানবাধিকারের প্রশ্নে গোটা বিশ্বের বিবেককে নাড়া দিচ্ছে।