স্বাস্থ্যে সচেতনতা
গরমে হিট স্ট্রোক কেন হয়? কীভাবে রক্ষা পাবেন

- আপডেট সময় ০৫:৪৩:৪৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ মে ২০২৫
- / 57
গ্রীষ্মের তীব্র তাপদাহ আমাদের শরীরের জন্য সবচেয়ে বড় স্বাস্থ্যঝুঁকি হয়ে দাঁড়ায় হিটস্ট্রোক। এটি এমন একটি শারীরিক অবস্থা যেখানে শরীরের তাপমাত্রা বিপজ্জনকভাবে বৃদ্ধি পায় এবং তাপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা কাজ করতে ব্যর্থ হয়। এই প্রতিবেদনে গরমে হিটস্ট্রোকের কারণ ও প্রতিরোধের উপায় উল্লেখ করা হলো।
হিটস্ট্রোক কী?
হিটস্ট্রোক হলো একটি অবস্থা যেখানে শরীরের তাপমাত্রা ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) বা তার বেশি হয়ে যায়। এ সময় শরীর ঘাম ত্যাগ করতে পারে না এবং তাপ নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়, যা গুরুতর শারীরিক ক্ষতির কারণ হতে পারে। এটি মস্তিষ্ক ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের জন্য বিপজ্জনক।
হিটস্ট্রোক হওয়ার প্রধান কারণ
প্রচণ্ড তাপদাহঃ
- গরমে বাইরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে শরীর অতিরিক্ত তাপ গ্রহণ করে। যদি শরীর ঘামতে না পারে, তবে তাপ জমে যায় এবং হিটস্ট্রোক হতে পারে।
অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রমঃ
- গরম আবহাওয়ায় অতিরিক্ত কাজ করা বা ব্যায়াম করলে শরীর অতিরিক্ত তাপ তৈরি করে, যা হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়। দুপুরের গরমে এই ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকা উচিত।
ডিহাইড্রেশন (পানির অভাব)ঃ
- গরমে শরীর থেকে প্রচুর পানি হারানো হয়। পর্যাপ্ত পানি না পেলে শরীর সঠিকভাবে ঠান্ডা হতে পারে না, ফলে তাপমাত্রা বেড়ে যায়।
বয়স ও শারীরিক অবস্থাঃ
- বয়স্ক ও শিশুদের হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি। যারা হৃদরোগ, কিডনি রোগ বা শ্বাসকষ্টে ভুগছেন, তারা বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ।

হিটস্ট্রোকের লক্ষণ
হিটস্ট্রোকের প্রাথমিক লক্ষণগুলো সাধারণত দ্রুত দেখা দেয়:
- তীব্র মাথাব্যথা
অতিরিক্ত ঘাম না হওয়া
শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি
দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস
শুষ্ক ত্বক
বমি বা বমির অনুভূতি
অবসাদ বা অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার অনুভূতি
হিটস্ট্রোকের প্রতিরোধের উপায়ঃ
- রোদে বের হওয়া এড়িয়ে চলুন
দুপুর ১২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত প্রচণ্ড রোদে বের হওয়া থেকে বাঁচুন। - নিয়মিত পানি পান করুন
ডিহাইড্রেশন এড়াতে প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন। - হালকা ও ঢিলেঢালা পোশাক পরুন
সুতি কাপড় পরুন যা শরীরকে শ্বাসপ্রশ্বাসের জন্য উপযুক্ত রাখবে। - এয়ার কন্ডিশনার বা পাখার ব্যবহার করুন
ঘরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে এয়ার কন্ডিশনার বা পাখা ব্যবহার করুন। - শারীরিক পরিশ্রমের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন
গরমে অতিরিক্ত পরিশ্রম করা থেকে বিরত থাকুন। শরীরের অবস্থার উন্নতি না হলে বিশ্রাম নিন এবং ঠান্ডা পানীয় পান করুন।

হিটস্ট্রোকের সময় সাহায্য পাওয়ার উপায়ঃ
যদি কাউকে হিটস্ট্রোকের শিকার হতে দেখা যায়, তবে দ্রুত তাকে একটি ঠান্ডা জায়গায় নিয়ে যান। তার শরীরে ঠান্ডা পানি স্প্রে করুন অথবা বরফের সেঁক দিন। সম্ভব হলে, দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান। সময়মতো চিকিৎসা না পেলে হিটস্ট্রোক প্রাণঘাতী হতে পারে।