ঢাকা ০৯:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫, ১৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
নিঃশব্দ আতঙ্কের ছায়া: বোবায় ধরা বা স্লিপ প্যারালাইসিসের বৈজ্ঞানিক রহস্য। রংপুরে হিন্দুপল্লীতে হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৫ কোনো ধরনের নিরাপত্তা শঙ্কা নেই ৫ আগস্ট ঘিরে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মতলব উত্তরে কিস্তি নিয়ে বিরোধ, চাচার ঘুষিতে প্রাণ গেল ভাতিজার সাবেক প্রধান বিচারপতির সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর লেস্টারে ইতিহাস গড়া দাওয়াতি সম্মেলন, শুরু হলো নতুন দাওয়াতি যুগ নিখোঁজের পর ইউনিয়ন পরিষদের টয়লেট থেকে শিশুর মরদেহ উদ্ধার রিয়ালে ১০ নম্বর জার্সির নতুন উত্তরাধিকারী এমবাপে অভিনেত্রী নন্দিনীর গাড়ির ধাক্কায় আহত যুবকের মৃত্যু শুল্কবিরতির মেয়াদ বাড়বে কিনা, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন ট্রাম্প

ইতিহাসে মওলানা ভাসানীর মূল্যায়ন হয়নি : নাহিদ ইসলাম

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৬:১৫:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫
  • / 6

ছবি: সংগৃহীত

 

ভাসানীর অবদান স্মরণ করে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, মওলানা ভাসানীকে ইতিহাসে যথাযথভাবে মূল্যায়ন করা হয়নি। শেরে বাংলা ফজলুল হক এবং মওলানা ভাসানীর মতো নেতাদের বাদ দিয়ে ইতিহাসের বিকৃতি করা হয়েছে। অথচ শেখ মুজিবুর রহমানও ভাসানীর রাজনৈতিক ধারার উত্তরসূরি। ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম নেপথ্য কারিগর ছিলেন মওলানা ভাসানী। আমরা তার আদর্শ বুকে ধারণ করে জাতীয় নাগরিক পার্টিকে দেশের সামনে একটি বিকল্প শক্তি হিসেবে দাঁড় করাতে চাই।

আমরা পিন্ডি ভেঙেছি দিল্লির দাসত্ব করার জন্য নয়। মওলানা ভাসানী পাকিস্তানের শাসকদের বিরুদ্ধে যেমন লড়েছেন, তেমনি দিল্লির আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধেও সোচ্চার ছিলেন।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) দুপুরে টাঙ্গাইল শহরের নিরালা মোড়ে এনসিপি আয়োজিত ‘জুলাই পদযাত্রা’র সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, এই টাঙ্গাইলের প্রতিইঞ্চি মাটি সংগ্রামের সাক্ষী। কৃষকের ঘামে গড়া এই টাঙ্গাইলেই মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বে বহু ঐতিহাসিক আন্দোলনের সূচনা হয়েছে। ভাসানী শুধু বাংলাদেশের নয়, উপমহাদেশের অনন্য এক রাজনৈতিক প্রবাদপুরুষ। আসামের বাঙালি মুসলমান কৃষকদের জমির অধিকার আদায়ে তার সংগ্রাম আজও প্রাসঙ্গিক। তিনি ছিলেন গণমানুষের নেতা, তৃণমূল রাজনীতির পথিকৃৎ। ভাসানীই প্রথম বুঝেছিলেন পাকিস্তানের সঙ্গে এক ছাদের নিচে বাঙালির টিকে থাকা অসম্ভব। কাগমারী সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি পাকিস্তানি শাসকদের বিদায়ঘণ্টা বাজিয়েছিলেন।

জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক বলেন, গত কয়েকদিন ধরে রংপুরের একটি উপজেলায় হিন্দুদের বাড়ি ঘরে হামলা ও লুটপাট করা হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। আমাদের নবীজিকে সেখানে কটূক্তি করা হয়েছে। আমরা এর অবশ্যই বিচার চাই। কিন্তু সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সভ্যতার উপর কেউ আঘাত করে- এমন ঘটনা আমরা কখনই মেনে নিবো না। অন্য ধর্মের উপর আঘাত করা আমাদের নবীজি শিক্ষা দেয়নি। নবীজি সব সময়ই অন্য ধর্মের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেন। এই ঘটনা যারা ঘটিয়েছে তাদের উদ্দেশ্য ধর্মীয় নয় রাজনৈতিক, তাদের উদ্দেশ্য সাম্প্রদায়িক এবং তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে লুটপাট করা। রংপুরে যারা ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের অব্যশ্যই বিচারের আওতায় আনতে হবে। যিনি ধর্ম অবমাননা করেছেন তাকেও বিচারের আওতায় আনতে হবে। আমরা ধর্মীয় সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়তে চাই।

তিনি আরো বলেন, এখন বাংলাদেশে কোন শক্তিশালী কৃষক সংগঠন নাই। ফলে কৃষকদের কথা বলার কোন প্ল্যাটফর্ম নাই। কৃষকরা তাদের ন্যায্য অধিকার পায়না। কৃষকরা সরকারের ভর্তুকি পায় না। আবার শস্য বিক্রি করতে গেলে দাম পায় না। আমরা এমন একটা বাংলাদেশ চাই যেখানে কৃষক তাদের ন্যায্য অধিকার পাবে।

টাঙ্গাইল শাড়ি সম্পর্কে তিনি বলেন, টাঙ্গাইলের শাড়ির জিআই পণ্য নিয়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ। ‘টাঙ্গাইল শাড়ি’ নামে কীভাবে ভারতের জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিতে পারে। টাঙ্গাইল শাড়ির জিআই স্বত্ব কখনোই ভারত নিতে পারে না। অবিলম্বে তা প্রত্যাহার করতে হবে। আমরা তাত শিল্পের পুনরুদ্ধার চাই।

সংক্ষিপ্ত এ পথসভায় উত্তরাঞ্চলের মূখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, আগামির বাংলাদেশে প্রশাসনকে একটা জিনিস স্পষ্ট করে বলতে চাই ’২৪ পরবর্তী বাংলাদেশের প্রশাসনকে, পুলিশসহ অন্যান্য বাহিনীকেও ‘বাংলাদেশের জন্য’ দেখতে চাই। বাংলাদেশের মানুষের জন্য দেখতে চাই। আমরা কোন দল, ব্যক্তি গোষ্ঠীর জন্য আর প্রশাসনকে ব্যবহৃত হতে দেখতে চাইনা। আগামির বাংলাদেশে কোন মিডিয়াকেও কোন ব্যক্তি-গোষ্ঠী বা দলের দালাল হিসেবে দেখতে চাইনা। এসময় তিনি দেশে কোন চাঁদাবাজিও দেখতে চাননা বলে জানান।

উত্তরাঞ্চলের সংগঠক আজাদ খান ভাসানীর সভাপতিত্বে সমাবেশে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়কারী নাসির উদ্দিন পাটোয়ারীর সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, সিনিয়র যগ্ম-আহŸায়ক সামান্তা শারমিন, সিনিয়র যুগ্ম-সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, সিনিয়র সদস্য সচিব সারোয়ার নিভা, ডা. তাজনুভা জাবিন সহ অন্যরা। এর আগে এনসিপির নেতারা জুলাই আন্দোলনে শহীদ ও আহত পরিবারের সদস্যদের সাথে মতবিনিময় করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

ইতিহাসে মওলানা ভাসানীর মূল্যায়ন হয়নি : নাহিদ ইসলাম

আপডেট সময় ০৬:১৫:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫

 

ভাসানীর অবদান স্মরণ করে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, মওলানা ভাসানীকে ইতিহাসে যথাযথভাবে মূল্যায়ন করা হয়নি। শেরে বাংলা ফজলুল হক এবং মওলানা ভাসানীর মতো নেতাদের বাদ দিয়ে ইতিহাসের বিকৃতি করা হয়েছে। অথচ শেখ মুজিবুর রহমানও ভাসানীর রাজনৈতিক ধারার উত্তরসূরি। ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম নেপথ্য কারিগর ছিলেন মওলানা ভাসানী। আমরা তার আদর্শ বুকে ধারণ করে জাতীয় নাগরিক পার্টিকে দেশের সামনে একটি বিকল্প শক্তি হিসেবে দাঁড় করাতে চাই।

আমরা পিন্ডি ভেঙেছি দিল্লির দাসত্ব করার জন্য নয়। মওলানা ভাসানী পাকিস্তানের শাসকদের বিরুদ্ধে যেমন লড়েছেন, তেমনি দিল্লির আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধেও সোচ্চার ছিলেন।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) দুপুরে টাঙ্গাইল শহরের নিরালা মোড়ে এনসিপি আয়োজিত ‘জুলাই পদযাত্রা’র সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, এই টাঙ্গাইলের প্রতিইঞ্চি মাটি সংগ্রামের সাক্ষী। কৃষকের ঘামে গড়া এই টাঙ্গাইলেই মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বে বহু ঐতিহাসিক আন্দোলনের সূচনা হয়েছে। ভাসানী শুধু বাংলাদেশের নয়, উপমহাদেশের অনন্য এক রাজনৈতিক প্রবাদপুরুষ। আসামের বাঙালি মুসলমান কৃষকদের জমির অধিকার আদায়ে তার সংগ্রাম আজও প্রাসঙ্গিক। তিনি ছিলেন গণমানুষের নেতা, তৃণমূল রাজনীতির পথিকৃৎ। ভাসানীই প্রথম বুঝেছিলেন পাকিস্তানের সঙ্গে এক ছাদের নিচে বাঙালির টিকে থাকা অসম্ভব। কাগমারী সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি পাকিস্তানি শাসকদের বিদায়ঘণ্টা বাজিয়েছিলেন।

জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক বলেন, গত কয়েকদিন ধরে রংপুরের একটি উপজেলায় হিন্দুদের বাড়ি ঘরে হামলা ও লুটপাট করা হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। আমাদের নবীজিকে সেখানে কটূক্তি করা হয়েছে। আমরা এর অবশ্যই বিচার চাই। কিন্তু সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সভ্যতার উপর কেউ আঘাত করে- এমন ঘটনা আমরা কখনই মেনে নিবো না। অন্য ধর্মের উপর আঘাত করা আমাদের নবীজি শিক্ষা দেয়নি। নবীজি সব সময়ই অন্য ধর্মের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেন। এই ঘটনা যারা ঘটিয়েছে তাদের উদ্দেশ্য ধর্মীয় নয় রাজনৈতিক, তাদের উদ্দেশ্য সাম্প্রদায়িক এবং তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে লুটপাট করা। রংপুরে যারা ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের অব্যশ্যই বিচারের আওতায় আনতে হবে। যিনি ধর্ম অবমাননা করেছেন তাকেও বিচারের আওতায় আনতে হবে। আমরা ধর্মীয় সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়তে চাই।

তিনি আরো বলেন, এখন বাংলাদেশে কোন শক্তিশালী কৃষক সংগঠন নাই। ফলে কৃষকদের কথা বলার কোন প্ল্যাটফর্ম নাই। কৃষকরা তাদের ন্যায্য অধিকার পায়না। কৃষকরা সরকারের ভর্তুকি পায় না। আবার শস্য বিক্রি করতে গেলে দাম পায় না। আমরা এমন একটা বাংলাদেশ চাই যেখানে কৃষক তাদের ন্যায্য অধিকার পাবে।

টাঙ্গাইল শাড়ি সম্পর্কে তিনি বলেন, টাঙ্গাইলের শাড়ির জিআই পণ্য নিয়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ। ‘টাঙ্গাইল শাড়ি’ নামে কীভাবে ভারতের জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিতে পারে। টাঙ্গাইল শাড়ির জিআই স্বত্ব কখনোই ভারত নিতে পারে না। অবিলম্বে তা প্রত্যাহার করতে হবে। আমরা তাত শিল্পের পুনরুদ্ধার চাই।

সংক্ষিপ্ত এ পথসভায় উত্তরাঞ্চলের মূখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, আগামির বাংলাদেশে প্রশাসনকে একটা জিনিস স্পষ্ট করে বলতে চাই ’২৪ পরবর্তী বাংলাদেশের প্রশাসনকে, পুলিশসহ অন্যান্য বাহিনীকেও ‘বাংলাদেশের জন্য’ দেখতে চাই। বাংলাদেশের মানুষের জন্য দেখতে চাই। আমরা কোন দল, ব্যক্তি গোষ্ঠীর জন্য আর প্রশাসনকে ব্যবহৃত হতে দেখতে চাইনা। আগামির বাংলাদেশে কোন মিডিয়াকেও কোন ব্যক্তি-গোষ্ঠী বা দলের দালাল হিসেবে দেখতে চাইনা। এসময় তিনি দেশে কোন চাঁদাবাজিও দেখতে চাননা বলে জানান।

উত্তরাঞ্চলের সংগঠক আজাদ খান ভাসানীর সভাপতিত্বে সমাবেশে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়কারী নাসির উদ্দিন পাটোয়ারীর সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, সিনিয়র যগ্ম-আহŸায়ক সামান্তা শারমিন, সিনিয়র যুগ্ম-সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, সিনিয়র সদস্য সচিব সারোয়ার নিভা, ডা. তাজনুভা জাবিন সহ অন্যরা। এর আগে এনসিপির নেতারা জুলাই আন্দোলনে শহীদ ও আহত পরিবারের সদস্যদের সাথে মতবিনিময় করেন।