নাইজেরিয়ায় কুখ্যাত সন্ত্রাসী তুরজির ঘাঁটিতে প্রতিরক্ষা অভিযান, নিহত শতাধিক

- আপডেট সময় ০৬:১৬:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫
- / 7
নাইজেরিয়ার জামফারা রাজ্যে সরকারি সহায়তায় পরিচালিত এক প্রতিরক্ষা অভিযানে কুখ্যাত সন্ত্রাসী নেতা বেলো তুরজির শক্ত ঘাঁটিতে হামলা চালিয়ে তার শতাধিক যোদ্ধাকে হত্যা করা হয়েছে। বুধবার গভীর রাতে রাজ্যের নিরাপত্তা উপদেষ্টা আহমদ মাঙ্গা এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
গত কয়েক বছর ধরে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিম ও মধ্যাঞ্চলের গ্রামাঞ্চলে ‘ব্যান্ডিট’ নামে পরিচিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর দৌরাত্ম্য বেড়েই চলেছে। তারা আদর্শবাদ নয়, বরং মুক্তিপণ আদায়, গবাদি পশু চুরি এবং লুটপাটের মতো অপরাধে জড়িত। সম্প্রতি এই চক্রগুলো উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জিহাদি গোষ্ঠীর সঙ্গে জোটবদ্ধ হওয়ায় নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মধ্যে নতুন উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, জামফারার শিনকাফি এলাকায় সিভিলিয়ান প্রটেকশন গার্ড (সিপিজি), গোয়েন্দা সংস্থা (ডিএসএস) এবং বর্নো রাজ্যের মিলিশিয়াদের সমন্বয়ে গঠিত যৌথ বাহিনী এই অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানের নেতৃত্বে ছিলেন সাবেক ব্যান্ডিট নেতা বাশারী মানিয়া, যিনি বর্তমানে সরকারি বাহিনীর সহযোগী হিসেবে কাজ করছিলেন। ঘণ্টাব্যাপী বন্দুকযুদ্ধে ১০০-এর বেশি সন্ত্রাসী নিহত হয়।
নিরাপত্তা সূত্র জানায়, তুরজি অভিযানের তথ্য আগে থেকেই জেনে ফেলায় আশপাশের অন্যান্য ঘাঁটি থেকে অতিরিক্ত যোদ্ধা ডেকে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। এতে সংঘর্ষ আরও তীব্র হয়ে ওঠে। এই অভিযানে কমপক্ষে ২০ জন সিভিল মিলিশিয়া এবং ভিজিলান্টি নিহত হন, যাদের মধ্যে মানিয়াও ছিলেন।
৩১ বছর বয়সী বেলো তুরজি ২০১১ সালে পশুপালনের জীবন ছেড়ে অপরাধের জগতে পা রাখেন। তিনি জামফারা ও সোকোতো রাজ্যের বহু গ্রামে ত্রাস সৃষ্টি করেছেন। একাধিকবার শান্তি চুক্তি করলেও প্রতিবারই তা ভঙ্গ করে সন্ত্রাস চালিয়ে গেছেন। ২০২১ সালে এক ভিডিও বার্তায় তিনি বিদেশি গ্যাংদের সহযোগিতায় নাইজেরিয়াকে অস্থিতিশীল করার হুমকিও দেন।
নাইজেরিয়ায় ব্যান্ডিট সহিংসতার শুরু মূলত জমি ও পানির দখল নিয়ে পশুপালক ফুলানি ও কৃষকদের মধ্যে সংঘর্ষ থেকে। পরে এটি অপরাধচক্র ও অস্ত্র পাচারের বড় নেটওয়ার্কে পরিণত হয়। বেলো তুরজির মতো নেতারা জিহাদি গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলে, যা দেশটির নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
এই অভিযানকে ব্যান্ডিটদের বিরুদ্ধে একটি বড় সফলতা বলা হলেও, বিশ্লেষকরা মনে করছেন তুরজির মতো নেতাদের সম্পূর্ণভাবে নির্মূল না করা পর্যন্ত স্থায়ী শান্তি নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। সাধারণ মানুষ ও পর্যবেক্ষকরা আশা করছেন, এই অভিযান যেন একটি দীর্ঘমেয়াদী নিরাপত্তার ভিত্তি গড়ে তুলতে পারে।
সূত্র: এএফপি