ঢাকা ০৭:১৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫, ১৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
জন্মদিনে ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত ড. মুহাম্মদ ইউনূস, তারেক রহমানের অভিনন্দন থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ, সড়কে জনতার ঢল করোনায় আরও দুজনের মৃত্যু, ২৪ ঘণ্টায় নতুন শনাক্ত ৭ জন শিক্ষা সমাজ ও রাষ্ট্রের উপযোগী মানুষ গড়ে তোলে : প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা পরিবেশই নয়, অর্থনীতি ও জীববৈচিত্র্যও টিকিয়ে রাখতে বন নিরাপত্তার অন্যতম ভিত্তি: রিজওয়ানা জোটবদ্ধ ইসলামি দলই আগামী দিনে দেশের প্রধান রাজনৈতিক শক্তি হয়ে উঠবে: চরমোনাই পীর কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্তে বিজিবির ৯ কোটি টাকার এলএসডি ও ফেনসিডিল উদ্ধার গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে দুই বছরের শিশুর মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ২৬২ জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে জামায়াতের ৩৬ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা বিশেষ অভিযানে ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে গ্রেফতার ১,৫৪০ জন

ইউরোপ কাঁপাচ্ছে চীনের ‘সস্তা’ বৈদ্যুতিক গাড়ি, বাড়ছে নিরাপত্তা উদ্বেগও

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১২:০০:১৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ জুন ২০২৫
  • / 12

ছবি: সংগৃহীত

 

চীনা বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা বিওয়াইডির একটি জনপ্রিয় মডেল ‘সিগাল’। ২০২৩ সালে চীনে বিক্রি শুরু হওয়া এই গাড়িটি ইউরোপে এসেছে নতুন নামে ‘ডলফিন সার্ফ’। ইউরোপীয় বাজারের রুচি মাথায় রেখে নাম পরিবর্তন করেছে বিওয়াইডি। চলতি সপ্তাহে যুক্তরাজ্যে গাড়িটির বিক্রি শুরু হচ্ছে, যেখানে মূল্য ধরা হয়েছে প্রায় ১৮ হাজার পাউন্ড ইভি হিসেবে যা অত্যন্ত সাশ্রয়ী।

বিওয়াইডি এখন চীনের সবচেয়ে বড় গাড়ি নির্মাতা। ২০২৪ সালে তারা টেসলাকে পেছনে ফেলে বিশ্বের সর্ববৃহৎ ইভি নির্মাতায় পরিণত হয়। ইউরোপে প্রবেশের পর থেকেই প্রতিষ্ঠানটি দ্রুত বিস্তার ঘটাচ্ছে। যুক্তরাজ্যে বিওয়াইডির বিক্রয় পরিচালক স্টিভ বিটি জানান, তারা আগামী ১০ বছরে ইউরোপের শীর্ষ ব্র্যান্ড হতে চায়।

বিশ্লেষকদের মতে, বিওয়াইডির উত্থান বৈশ্বিক গাড়িশিল্পে বড় পরিবর্তন আনতে পারে। এই চাপেই যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ চীনা গাড়ির ওপর শুল্ক বাড়াতে বাধ্য হয়েছে। বার্মিংহাম বিজনেস স্কুলের অধ্যাপক ডেভিড বেইলি বলেন, আধুনিক ব্যাটারি প্রযুক্তি ও কম উৎপাদন খরচের কারণে ইউরোপীয় কোম্পানিগুলো চীনাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছে।

২০২৪ সালে বিশ্বব্যাপী ১ কোটি ৭০ লাখ ব্যাটারি ও প্লাগ-ইন হাইব্রিড গাড়ি বিক্রি হয়েছে, যার মধ্যে ১ কোটি ১০ লাখই চীনে। চীনা প্রতিষ্ঠানগুলো বৈশ্বিক বাজারে ১০ শতাংশেরও বেশি অংশীদারিত্ব অর্জন করেছে, যা ভবিষ্যতে আরও বাড়বে বলে ধারণা।

তবে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগও বাড়ছে। ইভি গাড়িগুলো ইন্টারনেট-নির্ভর হওয়ায় হ্যাকিং ও তথ্য ফাঁসের আশঙ্কা রয়েছে। ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের এমন গাড়িতে বসে সরকারি আলাপ না করার নির্দেশনাও এসেছে।

চীনের দ্রুত উন্নতির পেছনে রয়েছে ‘মেড ইন চায়না ২০২৫’ উদ্যোগ, কম শ্রমমূল্য, রাষ্ট্রীয় ভর্তুকি ও উন্নত সরবরাহ ব্যবস্থা। বিওয়াইডি একসময় ব্যাটারি উৎপাদনকারী ছিল, এখন তারা বিশ্ববাজার কাঁপাচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে চীনা ইভির ওপর আমদানি শুল্ক বাড়িয়ে ১০০ শতাংশ করেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নও ৩৫.৩ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেছে।

নিরাপত্তা গবেষকরা বলছেন, চীনা গাড়ি নিরাপত্তা হুমকি তৈরি করতে পারে, তবে উৎপাদকরা রপ্তানি বজায় রাখতে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করছেন। বাস্তবতা হলো, বিশ্বজুড়ে ব্যবহৃত স্মার্টফোন ও যন্ত্রাংশের অনেকাংশই চীনে তৈরি। তাই চীনের উত্থান শুধু প্রতিযোগিতা নয়, বরং ভবিষ্যতের অংশ বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

ইউরোপ কাঁপাচ্ছে চীনের ‘সস্তা’ বৈদ্যুতিক গাড়ি, বাড়ছে নিরাপত্তা উদ্বেগও

আপডেট সময় ১২:০০:১৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ জুন ২০২৫

 

চীনা বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা বিওয়াইডির একটি জনপ্রিয় মডেল ‘সিগাল’। ২০২৩ সালে চীনে বিক্রি শুরু হওয়া এই গাড়িটি ইউরোপে এসেছে নতুন নামে ‘ডলফিন সার্ফ’। ইউরোপীয় বাজারের রুচি মাথায় রেখে নাম পরিবর্তন করেছে বিওয়াইডি। চলতি সপ্তাহে যুক্তরাজ্যে গাড়িটির বিক্রি শুরু হচ্ছে, যেখানে মূল্য ধরা হয়েছে প্রায় ১৮ হাজার পাউন্ড ইভি হিসেবে যা অত্যন্ত সাশ্রয়ী।

বিওয়াইডি এখন চীনের সবচেয়ে বড় গাড়ি নির্মাতা। ২০২৪ সালে তারা টেসলাকে পেছনে ফেলে বিশ্বের সর্ববৃহৎ ইভি নির্মাতায় পরিণত হয়। ইউরোপে প্রবেশের পর থেকেই প্রতিষ্ঠানটি দ্রুত বিস্তার ঘটাচ্ছে। যুক্তরাজ্যে বিওয়াইডির বিক্রয় পরিচালক স্টিভ বিটি জানান, তারা আগামী ১০ বছরে ইউরোপের শীর্ষ ব্র্যান্ড হতে চায়।

বিশ্লেষকদের মতে, বিওয়াইডির উত্থান বৈশ্বিক গাড়িশিল্পে বড় পরিবর্তন আনতে পারে। এই চাপেই যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ চীনা গাড়ির ওপর শুল্ক বাড়াতে বাধ্য হয়েছে। বার্মিংহাম বিজনেস স্কুলের অধ্যাপক ডেভিড বেইলি বলেন, আধুনিক ব্যাটারি প্রযুক্তি ও কম উৎপাদন খরচের কারণে ইউরোপীয় কোম্পানিগুলো চীনাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছে।

২০২৪ সালে বিশ্বব্যাপী ১ কোটি ৭০ লাখ ব্যাটারি ও প্লাগ-ইন হাইব্রিড গাড়ি বিক্রি হয়েছে, যার মধ্যে ১ কোটি ১০ লাখই চীনে। চীনা প্রতিষ্ঠানগুলো বৈশ্বিক বাজারে ১০ শতাংশেরও বেশি অংশীদারিত্ব অর্জন করেছে, যা ভবিষ্যতে আরও বাড়বে বলে ধারণা।

তবে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগও বাড়ছে। ইভি গাড়িগুলো ইন্টারনেট-নির্ভর হওয়ায় হ্যাকিং ও তথ্য ফাঁসের আশঙ্কা রয়েছে। ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের এমন গাড়িতে বসে সরকারি আলাপ না করার নির্দেশনাও এসেছে।

চীনের দ্রুত উন্নতির পেছনে রয়েছে ‘মেড ইন চায়না ২০২৫’ উদ্যোগ, কম শ্রমমূল্য, রাষ্ট্রীয় ভর্তুকি ও উন্নত সরবরাহ ব্যবস্থা। বিওয়াইডি একসময় ব্যাটারি উৎপাদনকারী ছিল, এখন তারা বিশ্ববাজার কাঁপাচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে চীনা ইভির ওপর আমদানি শুল্ক বাড়িয়ে ১০০ শতাংশ করেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নও ৩৫.৩ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেছে।

নিরাপত্তা গবেষকরা বলছেন, চীনা গাড়ি নিরাপত্তা হুমকি তৈরি করতে পারে, তবে উৎপাদকরা রপ্তানি বজায় রাখতে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করছেন। বাস্তবতা হলো, বিশ্বজুড়ে ব্যবহৃত স্মার্টফোন ও যন্ত্রাংশের অনেকাংশই চীনে তৈরি। তাই চীনের উত্থান শুধু প্রতিযোগিতা নয়, বরং ভবিষ্যতের অংশ বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।