গ্যাস সংকটে নতুন উদ্যোগ: ৩১টি কূপ সংস্কারে সরকারির পদক্ষেপ
দেশীয় গ্যাসের উৎপাদন ধারাবাহিকভাবে কমে যাওয়ায়, বিদেশ থেকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি বাড়াতে হচ্ছে, যার ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। পরিস্থিতি যদি এমন চলতে থাকে, তবে আমদানির পরিমাণও আরও বাড়বে। এ সংকট মোকাবেলায় গ্যাস উৎপাদন বৃদ্ধি করতে সরকার ৩১টি কূপ সংস্কারে গুরুত্ব দিয়েছে।
জ্বালানি বিভাগের সূত্রে জানা গেছে, সরকার মোট ১০০টি কূপের প্রকল্প বাস্তবায়ন পরিকল্পনা নিয়েছে, যার মধ্যে অনুসন্ধান, উন্নয়ন এবং সংস্কারের কূপ থাকবে। নতুন গ্যাসের সন্ধান করতে অনুসন্ধান কূপ খনন করা হয়, পুরোনো কূপগুলোর উৎপাদন বাড়াতে সংস্কার করা হয় এবং পুরোনো গ্যাসক্ষেত্রের জন্য উন্নয়ন কূপ খনন করা হয়। বর্তমানে, পরিস্থিতি বিবেচনায় কূপ সংস্কারে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।
পেট্রোবাংলার তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের মধ্যে ৫০টি কূপ খনন হলে জাতীয় গ্রিডে ৬৫ কোটি ঘনফুট গ্যাস যোগ হবে। ইতিমধ্যে, ১ কোটি ৮৪ লাখ ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা সম্ভব হয়েছে, যার মধ্যে ৭২ লাখ ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ হচ্ছে। গত ২২ জানুয়ারি, কূপ খনন বিষয়ে এক সভায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান গ্যাসের মজুত কমে যাওয়ার পাশাপাশি চাহিদা বৃদ্ধির বিষয়টি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এলএনজি আমদানিতে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হচ্ছে, যা দেশের জন্য সংকট সৃষ্টি করছে।
গত ২১ জানুয়ারি, পেট্রোবাংলা ৩১টি কূপ সংস্কারের জন্য একটি কমিটি গঠন করেছে। কমিটি, যা ১৫ সদস্যের, কূপ সংস্কারের অগ্রাধিকার নির্ধারণ, সঠিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার এবং গ্যাস উৎপাদনের সম্ভাব্যতা পর্যালোচনা করবে। এই কমিটি ৩০ দিনের মধ্যে একটি প্রতিবেদন পেট্রোবাংলার কাছে জমা দেবে।
বর্তমানে, দেশে গ্যাসের দৈনিক চাহিদা ৩৮০ কোটি ঘনফুট হলেও, ৩০০ কোটি ঘনফুট সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে, যার মধ্যে ২২০ কোটি ঘনফুট আসে দেশীয় গ্যাস থেকে এবং বাকিটা এলএনজি আমদানির মাধ্যমে পূর্ণ করা হয়। অতীতে গ্যাস অনুসন্ধান ও উৎপাদন না বাড়িয়ে এলএনজি আমদানির দিকে ঝুঁকেছিল সরকার, যার ফলে দেশীয় গ্যাস উৎপাদন ২০০ কোটি ঘনফুটের নিচে নেমে এসেছে।