সপ্তমবারের মতো ভাঙনের মুখে জাতীয় পার্টি (জাপা)। আওয়ামী লীগ শাসনামলে সব বিষয়ে সরকারের সুরে কথা বলে গৃহপালিত বিরোধী দলের তকমা পাওয়া জাপা শেখ হাসিনার পতনে ৫ আগস্টের পর চাপে পড়েছে। দলটিকে ফ্যাসিবাদের দোসর আখ্যা দিয়েছে অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতৃত্ব। জাপা কার্যালয়েও হামলা হয়েছে। ছাত্রনেতৃত্ব তাঁকে স্বৈরাচারের দোসর আখ্যা দেওয়ায় সরকারও কোথাও ডাকছে না দলটিকে। দলীয় সম্মেলন নিয়ে মাসখানেকের পাল্টাপাল্টি অবস্থানের পর গতকাল সোমবার জাপার মহাসচিব পদ থেকে মুজিবুল হক চুন্নুকে সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এবং কো-চেয়ারম্যান এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদারকেও সব পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। যদিও জি এম কাদেরের এ সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করেছেন আনিস, হাওলাদার ও চুন্নু। তারা বলেছেন, সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার পর কাউকে পদ থেকে সরানোর এখতিয়ার চেয়ারম্যানের নেই। তাঁর স্বেচ্ছাচারিতা মানা হবে না। আজ মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরবেন তারা।

নতুন মহাসচিব শামীম পাটোয়ারী বলেছেন, গঠনতন্ত্রে প্রদত্ত ক্ষমতায় সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জি এম কাদের, যা ইতোমধ্যে কার্যকর হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে গত মে মাসে জাপার প্রেসিডিয়াম সভায় সিদ্ধান্ত হয়, ২৮ জুন দলের কাউন্সিলে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করা হবে। জুনের শুরুতে ব্যারিস্টার আনিস ঘোষণা দেন, তিনি চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হবেন। রুহুল আমিন জানান, মহাসচিব প্রার্থী হবেন। কিন্তু ১৮ জুন জি এম কাদের জানান, প্রধান উপদেষ্টার কর্মসূচির কারণে ২৮ জুন চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্র ভাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। তাই সম্মেলন হবে না। সম্মেলন স্থগিতের সিদ্ধান্তে আনিস ও হাওলাদাররা বিবৃতিতে ক্ষোভ জানিয়েছিলেন। ২৮ জুন সম্মেলন করার ঘোষণা দিয়েছিলেন তারা। পাল্টা হিসেবে একই দিনে একই স্থানে সমাবেশ ডাকেন জি এম কাদের। শেষ পর্যন্ত কোনো পক্ষই কর্মসূচি গ্রহণ করেনি।

মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, জি এম কাদের সারাক্ষণ গণতন্ত্রের কথা বলেন। যখন তাঁকে বললাম, ‘২০ ধারা সংস্কার করেন।’ তিনি রাজি হলেন না; বরং আমাকে মহাসচিব পদ থেকে সরিয়ে দিলেন। তবে তাঁর এ সিদ্ধান্ত অসাংবিধানিক। ১৯৮৬ সালে প্রতিষ্ঠার পর জাপার ৯ জন মহাসচিবের আটনজনই স্বাভাবিক নিয়মে বিদায় নিতে পারেননি। একই ধারা অব্যাহত রেখেছেন জি এম কাদের।