ঢাকা ০৭:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫, ১৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্তে বিজিবির ৯ কোটি টাকার এলএসডি ও ফেনসিডিল উদ্ধার গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে দুই বছরের শিশুর মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ২৬২ জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে জামায়াতের ৩৬ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা বিশেষ অভিযানে ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে গ্রেফতার ১,৫৪০ জন ইউক্রেনে সামরিক সহায়তা বাড়াচ্ছে ইউরোপ, পুতিনের যুক্তভুক্তির উচ্চাকাঙ্ক্ষা বহাল এনবিআরের পূর্ণ শাটডাউনে অচল দেশের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম রিজার্ভে স্বস্তি: বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছাড়াল ৩০ বিলিয়ন ডলার ফক্স নিউজের বিরুদ্ধে ৭৮ কোটি ডলারের মানহানি মামলা ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নরের বাফুফে ট্রায়ালে প্রবাসী ঝড়: হামজা-শমিতের পর এবার আসলেন আরো ৪৩ ফুটবলার সর্দি কাশি দূর করার ১১টি ঘরোয়া উপায়

সৌদিতে ‘হুরুব’ আতঙ্কে বাংলাদেশি প্রবাসীরা, পড়ছেন প্রতারণার ফাঁদে

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০২:২৩:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ মে ২০২৫
  • / 68

ছবি সংগৃহীত

 

সাম্প্রতিক সময়ে সৌদি আরবে প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য আতঙ্কের নাম হয়ে উঠেছে ‘হুরুব’। নিয়োগকর্তাদের একতরফা এই ঘোষণা ও দালালদের প্রতারণার কারণে প্রতিনিয়ত চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন হাজার হাজার প্রবাসী। এর ফলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয়ে অনেকেই দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হচ্ছেন।

গত ২৮ এপ্রিল সৌদি আরব থেকে ‘আউটপাস’ নিয়ে দেশে ফিরেছেন শতাধিক বাংলাদেশি, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই হুরুব সমস্যায় জর্জরিত ছিলেন। জানা গেছে, সৌদি আরবে যেতে একজন বাংলাদেশিকে গড়ে ৪ লাখ ৫০ হাজার থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ করতে হয়। কিন্তু এত টাকা খরচ করেও অনেকেই প্রতারণার শিকার হন দালালদের হাতে। ফলে তাঁরা কাঙ্ক্ষিত বেতনের কাজ না পেয়ে বাধ্য হন কর্মস্থল পরিবর্তনে, আর সেখানেই বাধে বিপত্তি।

সৌদি আইনে, কোনো কর্মী পূর্বানুমতি ছাড়া কর্মস্থল ত্যাগ করলে নিয়োগকর্তা তাঁকে ‘হুরুব’ বা পলাতক বলে রিপোর্ট করতে পারেন। এই রিপোর্ট করা যায় ইমিগ্রেশন অফিসে গিয়েও, আবার অনলাইনেও। হুরুব ঘোষণার পর ২০ দিনের মধ্যে যদি কর্মী নিজ কর্মস্থলে ফিরে আসেন, তাহলে নিয়োগকর্তা চাইলে হুরুব প্রত্যাহার করতে পারেন। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে না ফিরলে সেই কর্মীকে সৌদি আরবে ‘অবৈধ’ হিসেবে গণ্য করা হয় এবং তাঁকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়।

ভুক্তভোগীদের একজন, মো. হাসান, সম্প্রতি দেশে ফিরেছেন হুরুব জটিলতায় পড়ে। সাত মাস আগে সাড়ে ৫ লাখ টাকা খরচ করে তিনি সৌদিতে যান। কিন্তু যে প্রতিষ্ঠানে তিনি কাজ করছিলেন, সেখান থেকে নামমাত্র বেতন পেতেন। তাই বাধ্য হয়ে তিনি অন্যত্র কাজ খুঁজতে গেলে পূর্বের মালিক তাঁর বিরুদ্ধে হুরুব ঘোষণা করেন। পরে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে কয়েক মাস জেল খেটে দেশে ফিরতে হয় তাঁকে।

হাসান বলেন, “হুরুব মানে পলাতক। এর পরিণতি ভয়াবহ। আমি নিজেই জেলে গিয়েছি, দেশে ফিরেছি শূন্য হাতে। বর্তমানে হাজার হাজার বাংলাদেশি এই সমস্যায় ভুগছেন। যারা সৌদি আরবে যাবেন, তারা অবশ্যই নিয়োগকারী, আকামার মেয়াদ ও কাজের ধরন ভালোভাবে যাচাই করে যাবেন। নয়তো আমির মতোই সব হারিয়ে দেশে ফিরতে হবে।”

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্যে কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে হলে দালাল চক্রের দৌরাত্ম্য রোধ, সঠিক নিয়োগপ্রক্রিয়া এবং শ্রমিকদের সচেতনতা বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই।

নিউজটি শেয়ার করুন

সৌদিতে ‘হুরুব’ আতঙ্কে বাংলাদেশি প্রবাসীরা, পড়ছেন প্রতারণার ফাঁদে

আপডেট সময় ০২:২৩:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ মে ২০২৫

 

সাম্প্রতিক সময়ে সৌদি আরবে প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য আতঙ্কের নাম হয়ে উঠেছে ‘হুরুব’। নিয়োগকর্তাদের একতরফা এই ঘোষণা ও দালালদের প্রতারণার কারণে প্রতিনিয়ত চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন হাজার হাজার প্রবাসী। এর ফলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয়ে অনেকেই দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হচ্ছেন।

গত ২৮ এপ্রিল সৌদি আরব থেকে ‘আউটপাস’ নিয়ে দেশে ফিরেছেন শতাধিক বাংলাদেশি, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই হুরুব সমস্যায় জর্জরিত ছিলেন। জানা গেছে, সৌদি আরবে যেতে একজন বাংলাদেশিকে গড়ে ৪ লাখ ৫০ হাজার থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ করতে হয়। কিন্তু এত টাকা খরচ করেও অনেকেই প্রতারণার শিকার হন দালালদের হাতে। ফলে তাঁরা কাঙ্ক্ষিত বেতনের কাজ না পেয়ে বাধ্য হন কর্মস্থল পরিবর্তনে, আর সেখানেই বাধে বিপত্তি।

সৌদি আইনে, কোনো কর্মী পূর্বানুমতি ছাড়া কর্মস্থল ত্যাগ করলে নিয়োগকর্তা তাঁকে ‘হুরুব’ বা পলাতক বলে রিপোর্ট করতে পারেন। এই রিপোর্ট করা যায় ইমিগ্রেশন অফিসে গিয়েও, আবার অনলাইনেও। হুরুব ঘোষণার পর ২০ দিনের মধ্যে যদি কর্মী নিজ কর্মস্থলে ফিরে আসেন, তাহলে নিয়োগকর্তা চাইলে হুরুব প্রত্যাহার করতে পারেন। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে না ফিরলে সেই কর্মীকে সৌদি আরবে ‘অবৈধ’ হিসেবে গণ্য করা হয় এবং তাঁকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়।

ভুক্তভোগীদের একজন, মো. হাসান, সম্প্রতি দেশে ফিরেছেন হুরুব জটিলতায় পড়ে। সাত মাস আগে সাড়ে ৫ লাখ টাকা খরচ করে তিনি সৌদিতে যান। কিন্তু যে প্রতিষ্ঠানে তিনি কাজ করছিলেন, সেখান থেকে নামমাত্র বেতন পেতেন। তাই বাধ্য হয়ে তিনি অন্যত্র কাজ খুঁজতে গেলে পূর্বের মালিক তাঁর বিরুদ্ধে হুরুব ঘোষণা করেন। পরে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে কয়েক মাস জেল খেটে দেশে ফিরতে হয় তাঁকে।

হাসান বলেন, “হুরুব মানে পলাতক। এর পরিণতি ভয়াবহ। আমি নিজেই জেলে গিয়েছি, দেশে ফিরেছি শূন্য হাতে। বর্তমানে হাজার হাজার বাংলাদেশি এই সমস্যায় ভুগছেন। যারা সৌদি আরবে যাবেন, তারা অবশ্যই নিয়োগকারী, আকামার মেয়াদ ও কাজের ধরন ভালোভাবে যাচাই করে যাবেন। নয়তো আমির মতোই সব হারিয়ে দেশে ফিরতে হবে।”

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্যে কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে হলে দালাল চক্রের দৌরাত্ম্য রোধ, সঠিক নিয়োগপ্রক্রিয়া এবং শ্রমিকদের সচেতনতা বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই।