কৃষি ও গবেষণায় বাংলাদেশকে সহযোগিতা আহ্বান চীনের

- আপডেট সময় ১১:৪২:১৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২ জুন ২০২৫
- / 4
ঢাকায় সফররত চীনা বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাও জানিয়েছেন, কৃষি, পাট ও সামুদ্রিক মাছসহ গবেষণাভিত্তিক খাতে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদারে আগ্রহী চীন। রবিবার ঢাকায় আয়োজিত চীন-বাংলাদেশ বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। সম্মেলনে চীনা ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের একটি বড় প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন তিনি।
পরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে ওয়েনতাও বলেন, “আমার সঙ্গে আসা চীনা কোম্পানিগুলো অত্যন্ত উৎসাহী। আপনার দেওয়া উন্নয়নভিত্তিক দিকনির্দেশনা তাদেরকে বাংলাদেশে বিনিয়োগে আত্মবিশ্বাসী করেছে।”
বাংলাদেশের ভোক্তা বাজার নিয়ে তিনি বলেন, “রাত ১০টার পরও বিপণিবিতানে মানুষের উপস্থিতি দেখে আমি বিস্মিত। পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের নবম বৃহত্তম ভোক্তা বাজারে পরিণত হবে।”
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে এখনো বিশাল সম্ভাবনা অনাবিষ্কৃত রয়ে গেছে, বিশেষ করে কৃষি ও নদী-সমুদ্রভিত্তিক মাছ চাষে। চীনের সহযোগিতায় প্রতিটি গ্রামকে একটি উৎপাদন ইউনিটে রূপান্তর সম্ভব।”
চীনা বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, “কৃষিতে পূর্ণমাত্রায় কোন খাতে সহযোগিতা সম্ভব, তা জানতে আগ্রহী আমরা। বিশেষ করে জমি উন্নয়ন, পানি সংরক্ষণ এবং আধুনিক চারা রোপণের প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করতে পারি।” তিনি আরও বলেন, “আমার দৃষ্টিতে কৃষি শুধু একটি শিল্প নয়, এটি একটি সামাজিক সংগঠনের মতো।”
মৎস্য ও সামুদ্রিক সম্পদ নিয়ে চীনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে ওয়েনতাও বলেন, “গভীর সমুদ্র মাছ ধরায় চীন বিশ্বে অগ্রণী ভূমিকা রাখছে। বাংলাদেশের কাছ থেকে এই খাতে নির্দিষ্ট প্রস্তাব পেলে আমরা যৌথভাবে কাজ করতে পারি।”
পাট খাত নিয়েও গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, “চীন প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে প্রায় ১০ কোটি ডলারের পাট আমদানি করে, যা মোট রপ্তানির প্রায় ১০ শতাংশ। গবেষণা ও পণ্যের বৈচিত্র্য আনলে এ পরিমাণ বহুগুণে বাড়তে পারে।”
চীনা প্রতিনিধিরা ইতিমধ্যে বাংলাদেশের পাটপণ্য নিয়ে গবেষণার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলেও জানান তিনি। অধ্যাপক ইউনূস প্রস্তাব দেন, বাংলাদেশের পাটপণ্য ডিজাইনাররা চীনা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করলে উন্নতমানের পণ্য তৈরি সম্ভব।
চীনা মন্ত্রীর উষ্ণ ও বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাবের প্রশংসা করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “আপনার কথা আমার কানে সংগীতের মতো শোনায়। এত বড় বিনিয়োগকারী দল নিয়ে আসার জন্য ধন্যবাদ। এটি পুরো জাতির জন্য একটি ভালো বার্তা।”