শিল্পে গ্যাসসংকট, বিপর্যস্ত উৎপাদন: ব্যয়বৃদ্ধিতে ক্ষতির মুখে উদ্যোক্তারা

- আপডেট সময় ০১:১১:১৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫
- / 22
দেশজুড়ে গ্যাসের চাহিদা বাড়লেও সরবরাহ কমছে দিনকে দিন। দুই বছর আগেও জাতীয় গ্রিডে প্রতিদিন সরবরাহ হতো প্রায় তিন হাজার মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস, বর্তমানে তা নেমে এসেছে দুই হাজার ৬৯৮ মিলিয়ন ঘনফুটে। ফলে, শিল্প-কারখানার উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।
সিরামিক, ইস্পাত, টেক্সটাইলসহ নানা খাতে উৎপাদন অর্ধেকে নেমে এসেছে। এর মধ্যেই ক্যাপটিভ পাওয়ারসহ শিল্পে গ্যাসের দাম ৩৩ শতাংশ বাড়ানোয় ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন শিল্পোদ্যোক্তারা। গ্যাসের সরবরাহ না বাড়িয়ে দাম বাড়ানোকে অনৈতিক বলছেন তারা। বহু কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে, রপ্তানি আয় কমছে, কর্মসংস্থান স্থবির হয়ে পড়েছে।
পেট্রোবাংলা জানিয়েছে, দেশে গ্যাসের চাহিদা প্রায় চার হাজার ২০০ মিলিয়ন ঘনফুট। সরবরাহ হচ্ছে দুই হাজার ৬৯৮ মিলিয়ন ঘনফুট। এর মধ্যে এক হাজার ৮৪২ মিলিয়ন ঘনফুট আসছে দেশীয় গ্যাসক্ষেত্র থেকে এবং বাকি ৮৫৬ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি থেকে।
চট্টগ্রাম, গাজীপুর, সাভার, নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদীর শিল্পাঞ্চলে গ্যাসের সংকট প্রকট। উৎপাদন প্রায় অর্ধেকে নেমেছে। বিকল্প জ্বালানি ব্যবহার করায় ব্যয় বেড়েছে বহুগুণ।
গাজীপুরের কেয়া গ্রুপের ছয় কারখানায় অনুমোদিত চাপ ৫০ পিএসআই হলেও বর্তমানে তা ৫-৭ পিএসআই। ফলে মেশিন চালাতে পারছেন না উদ্যোক্তারা। কালিয়াকৈরের কারখানায় দৈনিক উৎপাদন ৬০ টন থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ১০ টনে।
চট্টগ্রামের সিইউএফএল ১৮ দিন ধরে গ্যাস না পাওয়ায় সার উৎপাদন বন্ধ। প্রতিদিন গড়ে তিন কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে। চট্টগ্রামে প্রতিদিন ২৬০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা থাকলেও সরবরাহ হচ্ছে ২৩৩ মিলিয়ন ঘনফুট।
সাভার-আশুলিয়ায় প্রায় দেড় হাজার শিল্প-কারখানার উৎপাদন ব্যাহত। গ্যাসচাপ ১৫ পিএসআই দরকার হলেও তা অর্ধেকে নেমে এসেছে। বিকল্প জ্বালানি ব্যবহারেও সংকট কাটছে না।
কেরানীগঞ্জেও গ্যাসসংকট, দিনে এলপিজি গ্যাসে কাজ চালাতে হচ্ছে। রাতেও গ্যাসের চাপ অপ্রতুল।
নরসিংদীতে ডাইং ও টেক্সটাইল কারখানাগুলো দিনের বেশিরভাগ সময় বন্ধ রাখতে হচ্ছে। সিএনজি স্টেশনগুলোও বন্ধ। গ্যাসের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে লোডশেডিং। শ্রমিকদের বসিয়ে রাখতে হচ্ছে, বাড়ছে ব্যাংকঋণের চাপ।
শিল্পোদ্যোক্তারা বলছেন, দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে শিল্প খাত মুখ থুবড়ে পড়বে, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি থমকে যাবে।