ঢাকা ০৪:২০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫, ১৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
মগবাজারের হোটেলে স্ত্রী-সন্তানসহ প্রবাসীর রহস্যজনক মৃত্যু ফরিদপুরে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের হোতা কুটি মিয়া অস্ত্র ও মাদকসহ গ্রেফতার এইচএসসি পরীক্ষায় দ্বিতীয় দিনে অনুপস্থিত ২২ হাজার শিক্ষার্থী, বহিষ্কার ৪১ ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক হবে সম্মান এবং পারস্পরিক স্বার্থে: আমীর খসরু ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন দাবি বিএনপির, আপসের প্রশ্ন নেই: দুদু ইরানে আইএইএ মহাপরিচালকের মৃত্যুদণ্ডের দাবির কড়া প্রতিক্রিয়া মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দেশে নতুন করে ১৩ জনের করোনা শনাক্ত, ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু নেই বিসিবির সভা আগামীকাল, এজেন্ডায় থাকছে কী? আজ গাজায় ইসরায়েলি হামলায় তিন শিশুসহ নিহত ১৪ জন শীর্ষক: রেমিট্যান্স প্রবাহে ঊর্ধ্বগতি: জুনের ২৮ দিনেই এসেছে ২৫৩ কোটি ডলার

ডিআর কঙ্গোতে ভয়াবহ বন্যা: মৃতের সংখ্যা শতাধিক, বহু গ্রাম বিলীন

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১১:৫০:৩২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১২ মে ২০২৫
  • / 52

ছবি: সংগৃহীত

 

ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোর দক্ষিণ কিভু প্রদেশে মুষলধারে বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যায় একাধিক গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে। স্থানীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানা গেছে, এই দুর্যোগে এখন পর্যন্ত ১০০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার ভোরের মধ্যে প্রবল বর্ষণে কাসাবা নদীর পানি উপচে পড়ে, যার ফলে আশপাশের বিস্তীর্ণ এলাকা বন্যায় প্লাবিত হয়। উজান থেকে নেমে আসা তীব্র পানির তোড়ে ভেসে আসে বড় বড় পাথর, গাছপালা ও কাদামাটি যা ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে দেয়।

আঞ্চলিক কর্মকর্তা বার্নার্ড আকিলি জানান, “বন্যার শিকারদের অধিকাংশই শিশু ও বৃদ্ধ। আহত হয়েছেন অন্তত ২৮ জন। ধ্বংস হয়ে গেছে প্রায় ১৫০টি বসতবাড়ি।”

স্থানীয় প্রশাসক স্যামি কালোনজি জানান, এ পর্যন্ত ১০৪ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ‘অত্যন্ত ভয়াবহ’। দক্ষিণ কিভুর স্বাস্থ্যমন্ত্রী থিওফিল ওয়ালুলিকা মুজালিও বলেন, “টেলিযোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ও পর্যাপ্ত উদ্ধার সামগ্রী না থাকায় উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে।” তিনি আরও জানান, “বর্তমানে কেবল রেড ক্রসই উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে এবং স্থানীয় প্রশাসনের লোকজনও ঘটনাস্থলে কাজ করছেন।”

স্থানীয় এক বাসিন্দা বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন, শনিবার পর্যন্ত মৃতদেহের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১১৯।

উল্লেখ্য, দক্ষিণ কিভু সহ গ্রেট লেকস এলাকার পার্বত্য অঞ্চলগুলোতে প্রায়ই প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটে থাকে। নির্বিচারে বন উজাড়ের কারণে ভূমির স্থিতিশীলতা কমে যাওয়ায় বন্যা ও ভূমিধসের ঘটনা বাড়ছে। ২০২৩ সালে একই অঞ্চলের লেক কিভুর তীরবর্তী এলাকায় বন্যায় প্রাণ হারান প্রায় ৪০০ জন। গত মাসেও রাজধানী কিনশাসায় বন্যায় মারা যান ৩৩ জন।

এছাড়া পূর্ব কঙ্গোতে দীর্ঘদিন ধরেই চলমান বিদ্রোহী সংঘাত পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে রুয়ান্ডা-সমর্থিত এম২৩ বিদ্রোহীরা উত্তর কিভু প্রদেশের রাজধানী গোমা দখল করলে সহিংসতা চরমে ওঠে। এতে প্রাণ হারান প্রায় ৩ হাজার মানুষ এবং আহত হন ২ হাজার ৮৮০ জন। বর্তমানে প্রায় ৭০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত অবস্থায় রয়েছে, যা বিশ্বের অন্যতম বড় মানবিক সংকট বলে বিবেচিত।
সূত্র: আলজাজিরা

নিউজটি শেয়ার করুন

ডিআর কঙ্গোতে ভয়াবহ বন্যা: মৃতের সংখ্যা শতাধিক, বহু গ্রাম বিলীন

আপডেট সময় ১১:৫০:৩২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১২ মে ২০২৫

 

ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোর দক্ষিণ কিভু প্রদেশে মুষলধারে বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যায় একাধিক গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে। স্থানীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানা গেছে, এই দুর্যোগে এখন পর্যন্ত ১০০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার ভোরের মধ্যে প্রবল বর্ষণে কাসাবা নদীর পানি উপচে পড়ে, যার ফলে আশপাশের বিস্তীর্ণ এলাকা বন্যায় প্লাবিত হয়। উজান থেকে নেমে আসা তীব্র পানির তোড়ে ভেসে আসে বড় বড় পাথর, গাছপালা ও কাদামাটি যা ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে দেয়।

আঞ্চলিক কর্মকর্তা বার্নার্ড আকিলি জানান, “বন্যার শিকারদের অধিকাংশই শিশু ও বৃদ্ধ। আহত হয়েছেন অন্তত ২৮ জন। ধ্বংস হয়ে গেছে প্রায় ১৫০টি বসতবাড়ি।”

স্থানীয় প্রশাসক স্যামি কালোনজি জানান, এ পর্যন্ত ১০৪ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ‘অত্যন্ত ভয়াবহ’। দক্ষিণ কিভুর স্বাস্থ্যমন্ত্রী থিওফিল ওয়ালুলিকা মুজালিও বলেন, “টেলিযোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ও পর্যাপ্ত উদ্ধার সামগ্রী না থাকায় উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে।” তিনি আরও জানান, “বর্তমানে কেবল রেড ক্রসই উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে এবং স্থানীয় প্রশাসনের লোকজনও ঘটনাস্থলে কাজ করছেন।”

স্থানীয় এক বাসিন্দা বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন, শনিবার পর্যন্ত মৃতদেহের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১১৯।

উল্লেখ্য, দক্ষিণ কিভু সহ গ্রেট লেকস এলাকার পার্বত্য অঞ্চলগুলোতে প্রায়ই প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটে থাকে। নির্বিচারে বন উজাড়ের কারণে ভূমির স্থিতিশীলতা কমে যাওয়ায় বন্যা ও ভূমিধসের ঘটনা বাড়ছে। ২০২৩ সালে একই অঞ্চলের লেক কিভুর তীরবর্তী এলাকায় বন্যায় প্রাণ হারান প্রায় ৪০০ জন। গত মাসেও রাজধানী কিনশাসায় বন্যায় মারা যান ৩৩ জন।

এছাড়া পূর্ব কঙ্গোতে দীর্ঘদিন ধরেই চলমান বিদ্রোহী সংঘাত পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে রুয়ান্ডা-সমর্থিত এম২৩ বিদ্রোহীরা উত্তর কিভু প্রদেশের রাজধানী গোমা দখল করলে সহিংসতা চরমে ওঠে। এতে প্রাণ হারান প্রায় ৩ হাজার মানুষ এবং আহত হন ২ হাজার ৮৮০ জন। বর্তমানে প্রায় ৭০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত অবস্থায় রয়েছে, যা বিশ্বের অন্যতম বড় মানবিক সংকট বলে বিবেচিত।
সূত্র: আলজাজিরা