অগ্নিকান্ড ও দুর্ঘটনা
দেশব্যাপী অগ্নিকাণ্ড: ২০২৪ সালে ২৬ হাজারের বেশি ঘটনা, ১৪০ জনের মৃত্যু
২০২৪ সালে বাংলাদেশে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ব্যাপক আকারে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা উদ্বেগজনক। সারা দেশে মোট ২৬ হাজার ৬৫৯টি আগুনের ঘটনা ঘটেছে, যার মধ্যে দিনে গড়ে ৭৩টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। বৈদ্যুতিক গোলযোগ, বিড়ি-সিগারেটের জ্বলন্ত টুকরা, চুলা ও গ্যাস সংক্রান্ত সমস্যার কারণে আগুনের ঘটনা বেশি ঘটেছে। এসব ঘটনায় ৩৪১ জন আহত এবং ১৪০ জন নিহত হয়েছেন।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ২০২৪ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, অগ্নিকাণ্ডে সম্পদের ক্ষতি ৪৪৬ কোটি টাকার বেশি। তবে ফায়ার সার্ভিসের তৎপরতায় এক হাজার ৯৭৪ কোটি টাকার সম্পদ রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে। আগুনের সূত্র হিসেবে বৈদ্যুতিক গোলযোগের কারণে ৯ হাজার ৬৯টি ঘটনা (৩৩.৯৮%), বিড়ি-সিগারেটের আগুন থেকে ৪ হাজার ১৩৯টি (১৫.৫২%), চুলা থেকে ৩ হাজার ৫৬টি (১১.৪৬%) এবং গ্যাস লিকেজ থেকে ৭০৪টি ঘটনা ঘটেছে।
আবাসিক ভবনেই সবচেয়ে বেশি আগুনের ঘটনা ঘটেছে, যা মোট ২৬.৭৪%। এছাড়া খড়ের গাদায় ১৬.৯২%, রান্নাঘরে ৯.০৪% এবং দোকানে ৭.০৭% আগুনের ঘটনা ঘটেছে। পরিবহন ক্ষেত্রে বাস বাদে অন্যান্য যানবাহনে ২৬৮টি, বাসে ১১৪টি এবং ট্রেনে ১৩টি আগুনের ঘটনা ঘটে।
২০২৪ সালে ফেব্রুয়ারি, মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটেছে, যেখানে প্রতিদিন গড়ে ১০২টি আগুনের ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া জানুয়ারিতে ২ হাজার ৫১৪টি, জুলাইয়ে ১ হাজার ৪২৭টি এবং আগস্টে ২ হাজার ১৬৩টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
আহত ও নিহতদের মধ্যে পুরুষদের সংখ্যা বেশি, তবে নারীও এর মধ্যে অনেকটাই আক্রান্ত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে পুরুষ ২৩৭ জন এবং নারী ১০৪ জন, নিহতদের মধ্যে পুরুষ ১০৭ জন ও নারী ৩৩ জন।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা কমাতে এবং জনগণকে সচেতন করতে ফায়ার সার্ভিস ১৮ হাজার ৯৮৩টি মহড়া, ৩০৩৬টি জরিপ এবং ১৫ হাজার ৬৮৩টি গণসংযোগ করেছে। এছাড়া পোশাক শিল্প কারখানায় ৩৯২১টি প্রশিক্ষণ কোর্স পরিচালিত হয়েছে, যেখানে এক লাখ ৫৬ হাজার ৮৪০ জন শ্রমিককে অগ্নিদুর্ঘটনায় করণীয় সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, ফায়ার সার্ভিস ১৪৭টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ১৪৯টি প্রতিষ্ঠানকে দুই কোটি ৫৮ লাখ টাকা জরিমানা করেছে এবং তিনটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।