ঢাকা ০৮:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫, ২১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
নিয়ম ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের দুই দিনে ৩,৬২২ মামলা চাঁদপুরে সেরা সাঁতারু বাছাইয়ে ট্যালেন্ট হান্ট অনুষ্ঠিত, অংশগ্রহণ ২ শতাধিক সাঁতারু ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে ছাত্রদল নেতা নিহত, আহত অন্তত ১৫ জন আশুরা আমাদের সত্য ও ন্যায়ের পথে সাহস জোগায়: প্রধান উপদেষ্টা হাতিরঝিলে ‘এগিয়ে বাংলাদেশ’ দৌড় প্রতিযোগিতা, অংশগ্রহণে ৮০০ প্রতিযোগী ইসলামবিরোধী কার্যকলাপে কঠোর অবস্থানের হুঁশিয়ারি খেলাফত আমিরের শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ব্যাটিং ব্যর্থতা, ২৪৯ রানের লক্ষ্য দিল বাংলাদেশ জামালপুরে নগর মাতৃসদনে ভুল চিকিৎসায় এক নবজাতকের মৃত্যু, আটক ২ নার্স দেশে করোনায় ২৪ ঘণ্টায় একজনের মৃত্যু, নতুন শনাক্ত ৬ আওয়ামী নেতাদের দমন-পীড়ন ছিল ইয়াজিদ বাহিনীর সমতুল্য: তারেক রহমান

চট্টগ্রামে রেললাইনে মৃত্যু বাড়ছে, দেড় বছরে নিহত ২৪৪: রেলওয়ে পুলিশ সূত্র

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১২:৩৭:৪২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ জুলাই ২০২৫
  • / 4

ছবি সংগৃহীত

 

 

চট্টগ্রাম রেলওয়ে জেলায় রেললাইন ঘিরে দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার আশঙ্কাজনক হারে বেড়েই চলেছে। রেলওয়ে পুলিশ ও জিআরপি সূত্র জানায়, গত দেড় বছরে (২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত) ট্রেনে কাটা পড়ে প্রাণ হারিয়েছেন ২৪৪ জন। এর মধ্যে ২০২৪ সালের প্রথম ছয় মাসেই মৃত্যু হয়েছে ৮৯ জনের।

রেলওয়ে প্রশাসনের মতে, রেললাইনের ওপর হাঁটা, মোবাইলে কথা বলা কিংবা আড্ডা দেয়াই এই মৃত্যুর প্রধান কারণ। গত ১৯ জুন রাতে চট্টগ্রামের মীরসরাই উপজেলার বারৈয়ারহাট এলাকায় তিন তরুণ ট্রেনে কাটা পড়ে মারা যান। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, দ্রুতগামী ট্রেনের হুইসেল শুনেও তারা সরে যেতে পারেননি।

রেলওয়ে পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরে নিহত ৮৯ জনের মধ্যে ৪৪ জনই রেললাইনে বসে আড্ডা দেওয়ার সময় দুর্ঘটনার শিকার হন। আর ২০২৩ সালে ১৫৫ জনের মৃত্যুর ঘটনায় ১১২ জনই ছিলেন রেললাইনের ওপর অবস্থানরত।

চট্টগ্রাম জেলা রেলওয়ে পুলিশের সুপার শাকিলা সোলতানা জানান, “সবচেয়ে বড় কারণ হলো অসতর্কতা। অনেকেই হেডফোন কানে দিয়ে রেললাইনের ওপর দিয়ে হেঁটে যায়, ফলে ট্রেনের সাইরেন শুনতে না পেয়ে দুর্ঘটনায় পড়ে।”
দ্রুত রেলক্রসিং পার হতে গিয়ে গত বছরে ২৯ জন এবং চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ২৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন। অন্য যানবাহনের সঙ্গে সংঘর্ষেও দেড় বছরে মারা গেছেন আরও ১২ জন।

স্থানীয়রা বলছেন, নিরাপদ পারাপারের জন্য অনেক স্থানে সেতু বা আন্ডারপাসের ব্যবস্থা নেই। ফলে লোকজন বাধ্য হয়ে রেললাইন পার হন। এর মধ্যে মোবাইলে কথা বলতে বলতে পথ চলা ও ট্রেন আসলেও দৌড়ে পার হওয়ার চেষ্টা দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ায়।

রেল কর্তৃপক্ষও স্বীকার করছে, এই মৃত্যুর মিছিল ঠেকাতে কার্যকর ব্যবস্থা এখনো নেওয়া সম্ভব হয়নি। লাইনের দুই পাশে বাজার, বসতি এবং অসচেতনভাবে চলাচলকে দুর্ঘটনার বড় কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন কর্মকর্তারা।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম বলেন, “ট্রেনকে কমপক্ষে ১০০ মিটার আগে থেকে ব্রেক করতে হয়। কিন্তু পথচারীরা মোবাইলে কথা বলতে বলতে বা হেডফোন কানে দিয়ে হেঁটে যাওয়ায় ট্রেনের হুইসেল শুনতে পায় না, তখনই এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে।”

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম রেলওয়ে জেলায় প্রধান ও শাখা মিলিয়ে রেললাইনের দৈর্ঘ্য ৫০০ কিলোমিটারের বেশি। উন্নত বিশ্বে রেলপথকে নিরাপদ যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করা হলেও, বাংলাদেশের চট্টগ্রামে উল্টো চিত্রই দেখা যাচ্ছে। সচেতনতা ও নিরাপদ পারাপারের যথাযথ ব্যবস্থা না থাকলে এই মৃত্যুর মিছিল থামানো কঠিন হয়ে পড়বে।

নিউজটি শেয়ার করুন

চট্টগ্রামে রেললাইনে মৃত্যু বাড়ছে, দেড় বছরে নিহত ২৪৪: রেলওয়ে পুলিশ সূত্র

আপডেট সময় ১২:৩৭:৪২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ জুলাই ২০২৫

 

 

চট্টগ্রাম রেলওয়ে জেলায় রেললাইন ঘিরে দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার আশঙ্কাজনক হারে বেড়েই চলেছে। রেলওয়ে পুলিশ ও জিআরপি সূত্র জানায়, গত দেড় বছরে (২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত) ট্রেনে কাটা পড়ে প্রাণ হারিয়েছেন ২৪৪ জন। এর মধ্যে ২০২৪ সালের প্রথম ছয় মাসেই মৃত্যু হয়েছে ৮৯ জনের।

রেলওয়ে প্রশাসনের মতে, রেললাইনের ওপর হাঁটা, মোবাইলে কথা বলা কিংবা আড্ডা দেয়াই এই মৃত্যুর প্রধান কারণ। গত ১৯ জুন রাতে চট্টগ্রামের মীরসরাই উপজেলার বারৈয়ারহাট এলাকায় তিন তরুণ ট্রেনে কাটা পড়ে মারা যান। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, দ্রুতগামী ট্রেনের হুইসেল শুনেও তারা সরে যেতে পারেননি।

রেলওয়ে পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরে নিহত ৮৯ জনের মধ্যে ৪৪ জনই রেললাইনে বসে আড্ডা দেওয়ার সময় দুর্ঘটনার শিকার হন। আর ২০২৩ সালে ১৫৫ জনের মৃত্যুর ঘটনায় ১১২ জনই ছিলেন রেললাইনের ওপর অবস্থানরত।

চট্টগ্রাম জেলা রেলওয়ে পুলিশের সুপার শাকিলা সোলতানা জানান, “সবচেয়ে বড় কারণ হলো অসতর্কতা। অনেকেই হেডফোন কানে দিয়ে রেললাইনের ওপর দিয়ে হেঁটে যায়, ফলে ট্রেনের সাইরেন শুনতে না পেয়ে দুর্ঘটনায় পড়ে।”
দ্রুত রেলক্রসিং পার হতে গিয়ে গত বছরে ২৯ জন এবং চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ২৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন। অন্য যানবাহনের সঙ্গে সংঘর্ষেও দেড় বছরে মারা গেছেন আরও ১২ জন।

স্থানীয়রা বলছেন, নিরাপদ পারাপারের জন্য অনেক স্থানে সেতু বা আন্ডারপাসের ব্যবস্থা নেই। ফলে লোকজন বাধ্য হয়ে রেললাইন পার হন। এর মধ্যে মোবাইলে কথা বলতে বলতে পথ চলা ও ট্রেন আসলেও দৌড়ে পার হওয়ার চেষ্টা দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ায়।

রেল কর্তৃপক্ষও স্বীকার করছে, এই মৃত্যুর মিছিল ঠেকাতে কার্যকর ব্যবস্থা এখনো নেওয়া সম্ভব হয়নি। লাইনের দুই পাশে বাজার, বসতি এবং অসচেতনভাবে চলাচলকে দুর্ঘটনার বড় কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন কর্মকর্তারা।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম বলেন, “ট্রেনকে কমপক্ষে ১০০ মিটার আগে থেকে ব্রেক করতে হয়। কিন্তু পথচারীরা মোবাইলে কথা বলতে বলতে বা হেডফোন কানে দিয়ে হেঁটে যাওয়ায় ট্রেনের হুইসেল শুনতে পায় না, তখনই এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে।”

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম রেলওয়ে জেলায় প্রধান ও শাখা মিলিয়ে রেললাইনের দৈর্ঘ্য ৫০০ কিলোমিটারের বেশি। উন্নত বিশ্বে রেলপথকে নিরাপদ যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করা হলেও, বাংলাদেশের চট্টগ্রামে উল্টো চিত্রই দেখা যাচ্ছে। সচেতনতা ও নিরাপদ পারাপারের যথাযথ ব্যবস্থা না থাকলে এই মৃত্যুর মিছিল থামানো কঠিন হয়ে পড়বে।