রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানে সব পক্ষের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত বাংলাদেশ

- আপডেট সময় ১০:২৩:৫৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৫ জুলাই ২০২৫
- / 8
রাখাইনে রোহিঙ্গাদের টেকসই প্রত্যাবাসনের মাধ্যমে দীর্ঘস্থায়ী সমাধান খুঁজতে সব পক্ষের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত বাংলাদেশের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত তারেক মো. আরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, রাখাইনে রোহিঙ্গাদের অধিকার ও মর্যাদা রক্ষায় এবং তাদের নিরাপদ ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসনের জন্য দ্রুত অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সম্মিলিত দায়িত্ব।
জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের চলমান ৫৯তম অধিবেশনে ‘মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিম এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার পরিস্থিতি’ শীর্ষক একটি রেজ্যুলুশন গৃহীত হওয়ার প্রাক্কালে রাষ্ট্রদূত এ বক্তব্য দেন। জেনেভায় অনুষ্ঠিত এ অধিবেশনে ওআইসির উদ্যোগে প্রস্তাবিত রেজ্যুলুশনটি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।
রাষ্ট্রদূত আরিফুল ইসলাম গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, রাখাইনে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী এবং আরাকান আর্মিসহ বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে চলমান সংঘাতের কারণে মানবিক সহায়তা কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এবং রোহিঙ্গাদের দুর্দশা আরও প্রকট হয়ে উঠছে। তিনি মানবাধিকার পরিষদকে জানান, ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত রাখাইনে সহিংসতা, নিপীড়ন এবং হত্যাকাণ্ড এড়াতে প্রায় এক লাখ আঠারো হাজার রোহিঙ্গা নতুন করে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে।
বাংলাদেশের বক্তব্যে আগামী সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠেয় রোহিঙ্গা বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলনে এ সংকট সমাধানের জন্য বাস্তবভিত্তিক ও সময়নির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণের ওপরও জোর দেওয়া হয়।
রেজ্যুলুশনে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য ক্রমহ্রাসমান মানবিক সহায়তার বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এ সহায়তা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানানো হয়। একই সঙ্গে জাতিসংঘ এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সংস্থাকে রাখাইনে নিরবচ্ছিন্ন ও পর্যাপ্ত মানবিক সহায়তা প্রদান নিশ্চিত করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রাখাইনে নিরাপদ পরিবেশ তৈরি এবং রোহিঙ্গাদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত না হলে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া অর্থবহ হবে না। বাংলাদেশের উদ্যোগ এবং আন্তর্জাতিক মহলের সমন্বিত প্রচেষ্টাই রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে বলে তারা আশা প্রকাশ করেছেন।