০৪:৩৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫
শিরোনাম :
‘জুলাই যোদ্ধা’ শনাক্তে গোয়েন্দা তদন্ত শুরু কুয়াকাটার হোটেলে ঝুলন্ত মরদেহ, স্বামী পরিচয়ে থাকা যুবকের খোঁজ নেই যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার তালিকা বৃদ্ধি: যোগ হচ্ছে ফিলিস্তিনসহ আরও ছয় দেশ ‘২৫ তারিখ ইনশা আল্লাহ দেশে ফিরছি’: তারেক রহমান হাদিকে গুলি: প্রধান আসামি ফয়সালের বাবা–মা গ্রেপ্তার, অস্ত্র উদ্ধার সেই মুসলিমকে ‘জাতীয় হিরো’ আখ্যা দিয়ে যা বললেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশ্যে সন্ধ্যায় ভাষণ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা জনসমাগমের মধ্যে দক্ষিণখানে যুবলীগ নেতা খুন জাতীয় স্মৃতিসৌধে প্রধান উপদেষ্টা ও রাষ্ট্রপতির শ্রদ্ধা গাজায় যুদ্ধবিরতি মানতে ইসরায়েলকে হোয়াইট হাউসের সতর্কবার্তা, নেতানিয়াহুকে সরাসরি বার্তা

বর্ষার শুরুতেই যমুনায় ভয়াবহ ভাঙন, দিশেহারা শতাধিক পরিবার

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০১:০১:১৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫
  • / 149

ছবি সংগৃহীত

 

বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই ভয়াবহ নদীভাঙনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে পাবনার বেড়া উপজেলার যমুনা নদীপাড়ে। গত এক মাস ধরে টানা ভাঙনের ফলে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে অন্তত ২০টি বসতঘর ও অর্ধশতাধিক বিঘা ফসলি জমি। হুমকির মুখে পড়েছে একটি মসজিদ, একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ শতাধিক পরিবার। স্থানীয়রা বলছেন, এভাবে চলতে থাকলে পুরো গ্রামই যমুনায় হারিয়ে যেতে পারে।

বেড়া উপজেলার পুরান ভারেঙ্গা ইউনিয়নের চর বক্তারপুর গ্রামে প্রায় দুই যুগ ধরে যমুনার তীরে বসবাস করছেন কৃষক হানিফ শেখের স্ত্রী আক্তার বানু। তাঁর জীবনে বর্ষা মানেই উদ্বেগ আর আতঙ্ক। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নদীপাড়ে বসে অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন আক্তার বানু। তিনি বলেন, “গত তিন বছরে তিনবার আমাদের ঘর ভেঙে গেছে। এবারও কুরবানির ঈদের আনন্দ কেড়ে নিয়েছে ভাঙনের ভয়। সারাক্ষণ আতঙ্কে থাকি, কখন যে আবার নদী ভাঙে!”

বিজ্ঞাপন

আক্তার বানুর মতো একই দুর্দশায় পড়েছেন চর বক্তারপুর, বক্তারপুর, চর বুড়ামারা, সিংহাসন ও আগবাকশো গ্রামের হাজারো মানুষ। তাদের অভিযোগ, বারবার ঘরবাড়ি হারিয়ে নতুন করে গড়তে পারছেন না অর্থাভাবে। অনেকেই বাড়িঘর খুলে রেখেছেন, আবার কেউ অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন।

চর বক্তারপুর গ্রামের বেল্লাল শেখ ও সেকেন বিশ্বাস জানান, কুরবানির ঈদের দিনই নদীতে বিলীন হয় কয়েকটি ঘরবাড়ি। বর্ষা এলেই এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়। শাজাহান আলী, নাদের শেখ ও মামুন শেখ জানান, অন্তত ছয়বার নদীভাঙনের শিকার হয়েছেন তারা। আগে যেখান থেকে নদী ছিল আধা কিলোমিটার দূরে, এখন সেখানেই বসতঘর বানাতে হচ্ছে। তাঁদের দাবি, এবার স্থায়ীভাবে ভাঙনরোধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

ভুক্তভোগী রওশন বিশ্বাসের স্ত্রী জোসনা খাতুন বলেন, “শিশু সন্তান ও গবাদিপশু নিয়ে নির্ঘুম রাত কাটে। ঈদের দিন ঘর সরাতে হয়েছে। রান্না-বান্না, খাওয়া কিছুই হয়নি। কতবার আর ঘর সরাব?”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বেড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) হায়দার আলী বলেন, “ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।”

নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসীর এখন একটাই দাবি স্থায়ীভাবে ভাঙনরোধ করে তাদের বসতভিটা ও জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক।

নিউজটি শেয়ার করুন

বর্ষার শুরুতেই যমুনায় ভয়াবহ ভাঙন, দিশেহারা শতাধিক পরিবার

আপডেট সময় ০১:০১:১৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫

 

বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই ভয়াবহ নদীভাঙনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে পাবনার বেড়া উপজেলার যমুনা নদীপাড়ে। গত এক মাস ধরে টানা ভাঙনের ফলে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে অন্তত ২০টি বসতঘর ও অর্ধশতাধিক বিঘা ফসলি জমি। হুমকির মুখে পড়েছে একটি মসজিদ, একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ শতাধিক পরিবার। স্থানীয়রা বলছেন, এভাবে চলতে থাকলে পুরো গ্রামই যমুনায় হারিয়ে যেতে পারে।

বেড়া উপজেলার পুরান ভারেঙ্গা ইউনিয়নের চর বক্তারপুর গ্রামে প্রায় দুই যুগ ধরে যমুনার তীরে বসবাস করছেন কৃষক হানিফ শেখের স্ত্রী আক্তার বানু। তাঁর জীবনে বর্ষা মানেই উদ্বেগ আর আতঙ্ক। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নদীপাড়ে বসে অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন আক্তার বানু। তিনি বলেন, “গত তিন বছরে তিনবার আমাদের ঘর ভেঙে গেছে। এবারও কুরবানির ঈদের আনন্দ কেড়ে নিয়েছে ভাঙনের ভয়। সারাক্ষণ আতঙ্কে থাকি, কখন যে আবার নদী ভাঙে!”

বিজ্ঞাপন

আক্তার বানুর মতো একই দুর্দশায় পড়েছেন চর বক্তারপুর, বক্তারপুর, চর বুড়ামারা, সিংহাসন ও আগবাকশো গ্রামের হাজারো মানুষ। তাদের অভিযোগ, বারবার ঘরবাড়ি হারিয়ে নতুন করে গড়তে পারছেন না অর্থাভাবে। অনেকেই বাড়িঘর খুলে রেখেছেন, আবার কেউ অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন।

চর বক্তারপুর গ্রামের বেল্লাল শেখ ও সেকেন বিশ্বাস জানান, কুরবানির ঈদের দিনই নদীতে বিলীন হয় কয়েকটি ঘরবাড়ি। বর্ষা এলেই এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়। শাজাহান আলী, নাদের শেখ ও মামুন শেখ জানান, অন্তত ছয়বার নদীভাঙনের শিকার হয়েছেন তারা। আগে যেখান থেকে নদী ছিল আধা কিলোমিটার দূরে, এখন সেখানেই বসতঘর বানাতে হচ্ছে। তাঁদের দাবি, এবার স্থায়ীভাবে ভাঙনরোধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

ভুক্তভোগী রওশন বিশ্বাসের স্ত্রী জোসনা খাতুন বলেন, “শিশু সন্তান ও গবাদিপশু নিয়ে নির্ঘুম রাত কাটে। ঈদের দিন ঘর সরাতে হয়েছে। রান্না-বান্না, খাওয়া কিছুই হয়নি। কতবার আর ঘর সরাব?”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বেড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) হায়দার আলী বলেন, “ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।”

নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসীর এখন একটাই দাবি স্থায়ীভাবে ভাঙনরোধ করে তাদের বসতভিটা ও জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক।