ঢাকা ০৪:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৬ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাণিজ্য ঘাটতি বাড়ছেই, চীনে রফতানি বাড়াতে প্রয়োজন বৈচিত্র্য ও বিনিয়োগ

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১০:৫২:২১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫
  • / 35

ছবি সংগৃহীত

 

চীনের শতভাগ শুল্কমুক্ত সুবিধা পাওয়ার পরও দেশটিতে রফতানির গতি বাড়াতে পারছে না বাংলাদেশ। উল্টো প্রতিবছর বেড়েই চলেছে বাণিজ্য ঘাটতির অঙ্ক। অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, এই ব্যবধান কমাতে হলে রফতানি পণ্যে বৈচিত্র্য আনার পাশাপাশি দেশে চীনা বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে হবে। প্রধান উপদেষ্টার আসন্ন চীন সফরকে কেন্দ্র করে এই বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের তাগিদ দিয়েছেন তারা।

বাংলাদেশের আমদানি নির্ভরতার বড় একটি অংশই আসে চীন থেকে। গত অর্থবছরে দেশটি থেকে আমদানি ব্যয় দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ হাজার ৬৬৪ কোটি ডলারে, যা মোট আমদানির এক চতুর্থাংশেরও বেশি। অথচ রফতানি হয়েছে মাত্র ৪১ কোটি ডলারের পণ্য, যা মোট রফতানির এক শতাংশ মাত্র।

বাণিজ্য ভারসাম্য আনার লক্ষ্যে চীন ২০২০ সালে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রদান শুরু করে। পরবর্তী বছরগুলোতে এই সুবিধার আওতা বাড়িয়ে ২০২৩ সালের শেষ নাগাদ সব বাংলাদেশি পণ্যের রফতানিতে শতভাগ শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয় চীন।

তবে কাগজে-কলমে সুবিধা থাকলেও, বাস্তবে চীনের বাজারে প্রবেশ করতে পারছে না বাংলাদেশের পণ্য। ব্যবসায়ীদের মতে, এর পেছনে রয়েছে উৎপাদন সক্ষমতার সীমাবদ্ধতা, পণ্যের প্রতিযোগিতা ক্ষমতার ঘাটতি ও চীনের বাজার নিয়ে পর্যাপ্ত প্রস্তুতির অভাব।

বাংলাদেশ চায়না চেম্বার অব কমার্সের সাবেক নেতা আল মামুন মৃধা বলেন, “শুল্কমুক্ত সুবিধা কাজে লাগাতে হলে আমাদের আরও সক্রিয় হতে হবে চীনা বাজার ধরতে। পাশাপাশি দেশে চীনা বিনিয়োগ বাড়াতে পারলে নতুন শিল্পখাত তৈরি হবে, যা রফতানি পণ্যে বৈচিত্র্য আনবে।”

অর্থনীতিবিদ ড. মোস্তফা কে মুজেরি ও ড. মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে শুধু শুল্ক সুবিধা নয়, প্রয়োজন উৎপাদন ও রফতানি নীতির বাস্তবায়ন। একইসাথে, চীন যেসব পণ্য আমদানি করে, সেসব পণ্যে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়াতে হবে।

বিশেষজ্ঞদের মত, প্রধান উপদেষ্টার চীন সফর হতে পারে এক নতুন সম্ভাবনার দ্বার। তবে সেটা ফলপ্রসূ করতে হলে এখনই চাই সুনির্দিষ্ট কৌশল ও দূরদর্শী পরিকল্পনা।

নিউজটি শেয়ার করুন

বাণিজ্য ঘাটতি বাড়ছেই, চীনে রফতানি বাড়াতে প্রয়োজন বৈচিত্র্য ও বিনিয়োগ

আপডেট সময় ১০:৫২:২১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫

 

চীনের শতভাগ শুল্কমুক্ত সুবিধা পাওয়ার পরও দেশটিতে রফতানির গতি বাড়াতে পারছে না বাংলাদেশ। উল্টো প্রতিবছর বেড়েই চলেছে বাণিজ্য ঘাটতির অঙ্ক। অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, এই ব্যবধান কমাতে হলে রফতানি পণ্যে বৈচিত্র্য আনার পাশাপাশি দেশে চীনা বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে হবে। প্রধান উপদেষ্টার আসন্ন চীন সফরকে কেন্দ্র করে এই বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের তাগিদ দিয়েছেন তারা।

বাংলাদেশের আমদানি নির্ভরতার বড় একটি অংশই আসে চীন থেকে। গত অর্থবছরে দেশটি থেকে আমদানি ব্যয় দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ হাজার ৬৬৪ কোটি ডলারে, যা মোট আমদানির এক চতুর্থাংশেরও বেশি। অথচ রফতানি হয়েছে মাত্র ৪১ কোটি ডলারের পণ্য, যা মোট রফতানির এক শতাংশ মাত্র।

বাণিজ্য ভারসাম্য আনার লক্ষ্যে চীন ২০২০ সালে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রদান শুরু করে। পরবর্তী বছরগুলোতে এই সুবিধার আওতা বাড়িয়ে ২০২৩ সালের শেষ নাগাদ সব বাংলাদেশি পণ্যের রফতানিতে শতভাগ শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয় চীন।

তবে কাগজে-কলমে সুবিধা থাকলেও, বাস্তবে চীনের বাজারে প্রবেশ করতে পারছে না বাংলাদেশের পণ্য। ব্যবসায়ীদের মতে, এর পেছনে রয়েছে উৎপাদন সক্ষমতার সীমাবদ্ধতা, পণ্যের প্রতিযোগিতা ক্ষমতার ঘাটতি ও চীনের বাজার নিয়ে পর্যাপ্ত প্রস্তুতির অভাব।

বাংলাদেশ চায়না চেম্বার অব কমার্সের সাবেক নেতা আল মামুন মৃধা বলেন, “শুল্কমুক্ত সুবিধা কাজে লাগাতে হলে আমাদের আরও সক্রিয় হতে হবে চীনা বাজার ধরতে। পাশাপাশি দেশে চীনা বিনিয়োগ বাড়াতে পারলে নতুন শিল্পখাত তৈরি হবে, যা রফতানি পণ্যে বৈচিত্র্য আনবে।”

অর্থনীতিবিদ ড. মোস্তফা কে মুজেরি ও ড. মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে শুধু শুল্ক সুবিধা নয়, প্রয়োজন উৎপাদন ও রফতানি নীতির বাস্তবায়ন। একইসাথে, চীন যেসব পণ্য আমদানি করে, সেসব পণ্যে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়াতে হবে।

বিশেষজ্ঞদের মত, প্রধান উপদেষ্টার চীন সফর হতে পারে এক নতুন সম্ভাবনার দ্বার। তবে সেটা ফলপ্রসূ করতে হলে এখনই চাই সুনির্দিষ্ট কৌশল ও দূরদর্শী পরিকল্পনা।