কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতে নিরবতা, ঈদে পর্যটকদের জন্য প্রস্তুতি চলছে

- আপডেট সময় ১০:৩৫:১৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫
- / 37
রমজানের শুরুতে কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকত এবং বিনোদন কেন্দ্রগুলো পর্যটকশূন্য হয়ে পড়েছে। এতে হোটেল-মোটেল জোন ও সাগরপাড়ের হাজার হাজার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে, ফলে এক মাসের জন্য বেকার হয়ে পড়েছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট অসংখ্য শ্রমিক-কর্মচারী।
গত প্রায় সাড়ে ৪ মাস ভালো ব্যবসার পর রমজানের শুরুতেই পর্যটক কমে যাওয়ায় ব্যবসায়ীরা দুঃশ্চিন্তায় পড়েছেন। তবে আগামী রোজার ঈদ ঘিরে আবারও পর্যটন খাতে প্রাণ সঞ্চারের আশা করছেন তারা। বর্তমানে নগণ্য সংখ্যক কিছু পর্যটক সৈকতে এসেছেন, যারা বিস্তৃত বালিয়াড়ীর ফাঁকা সৈকতে বিনোদন নিচ্ছেন।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) বিকেলে সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে গেলে দেখা যায়, চিরচেনা যানজট নেই, সড়ক ফাঁকা এবং বিচের দুপাশের অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ। শহরের প্রায় সব রেস্তোরাঁর চিত্রও একই রকম। প্রায় সাড়ে ৫ শতাধিক হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট ও গেস্টহাউসের কক্ষ খালি পড়ে আছে।
সৈকতের কোলাহলমুখর পরিবেশ এখন বিরাজ করছে সুনশান নিরবতা। জনশূন্য সৈকতে অলস সময় কাটাচ্ছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, বিচ বাইক ও জেটস্কি চালক, ঘোড়াওয়ালা এবং ফটোগ্রাফাররা। খালি পড়ে থাকা সৈকতের ছাতা ও চেয়ারগুলো যেন পর্যটন খাতে হাহাকার করছে।
তবুও কিছু সংখ্যক পর্যটক কক্সবাজারে এসেছেন, যাদের অধিকাংশই ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্য। হোটেল-মোটেলের কক্ষ ভাড়া, খাবারের দাম ও পরিবহন ভাড়া স্বাভাবিকের চেয়ে কম হলেও খাবার রেস্তোরাঁ খুঁজতে তারা দুর্ভোগে পড়ছেন। ফাঁকা সৈকতে তারা বিনোদন নিচ্ছেন, অনেকেই জানিয়েছেন, পর্যটক কম থাকায় তাদের ঘুরে বেড়ানো সহজ হচ্ছে।
বর্তমানে হোটেল-মোটেল জোনের অধিকাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। তবে, ঈদে ব্যাপক পর্যটক সমাগমের আশায় কিছু হোটেল ও রেস্তোরাঁয় সংস্কার কাজ চলছে। সাগরপাড়ের লাইফগার্ড কর্মীরা নিরাপত্তার পাশাপাশি পেশাগত দক্ষতা উন্নয়নের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, রমজান এলেই কক্সবাজারে পর্যটকের সংখ্যা কমে যায়। তবে তারা আশাবাদী, ঈদুল ফিতরের ছুটিতে পর্যটকদের ঢল নামবে এবং কক্সবাজার আবারও ফিরে পাবে তার চিরচেনা কোলাহল। শহরের পাঁচ শতাধিক হোটেল-গেস্ট হাউস রিসোর্টের ৯৫ শতাংশই বর্তমানে খালি।
ফটোগ্রাফার মুজিবুর রহমান বলেন, “এখন পর্যটক নেই বললেই চলে। আমাদের আয় একদম কমে গেছে, তবে ঈদের পর ভালো ব্যবসার আশা করছি।” অপরদিকে, শামুক-ঝিনুক বিক্রেতা জসিম উদ্দিন বলেন, “রমজান মাসে ব্যবসা খুব ধীরগতির হয়, কিন্তু আমরা ঈদের জন্য অপেক্ষা করছি।”
কক্সবাজার কলাতলী হোটেল রিসোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুকিম খান জানান, “রমজান মাসে পর্যটকের সংখ্যা কমে যাওয়া নতুন কিছু নয়। আমরা ইতিবাচকভাবে নিয়েছি। কর্মীদের ছুটিতে পাঠিয়েছি, তবে ঈদের ছুটিতে কক্সবাজার আবারও পর্যটকদের ভিড়ে মুখর হয়ে উঠবে।”
তিনি আরও বলেন, “বর্তমানে হোটেল-মোটেলের অধিকাংশ রুম ফাঁকা। প্রায় হোটেল রিসোর্টগুলোতে ৬০ শতাংশ ছাড়ে রুম পাওয়া যাচ্ছে। আশা করছি, ঈদের পরদিন থেকে কক্সবাজার পূর্ণাঙ্গ পর্যটকে ভরে যাবে। সাময়িক এই মন্দাভাব পেরিয়ে ঈদের ছুটিতে আবারও পর্যটকের ঢল নামবে এমন আশায় বুক বাঁধছেন ব্যবসায়ীরা।”