ঢাকা ০১:৫৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
সবুজবাগে বিদেশী পিস্তল ও গুলিসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে ডিবি তুরস্কে স্কি রিসোর্টে অগ্নিকাণ্ড: মালিকসহ ৯ জন গ্রেপ্তার ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্ট সামিটে প্রধান উপদেষ্টাকে আমন্ত্রণ চিটাগং কিংসকে উড়িয়ে দিয়ে ঢাকা ক্যাপিটালসের টানা তৃতীয় জয়   গাজায় ব্যর্থতার দায়ে পদত্যাগের প্রস্তুতিতে শিন বেত প্রধান রনেন বার যেসব পণ্যে ভ্যাট কমালো এনবিআর গাজায় ব্যর্থতার দায়ে এবার পদত্যাগের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরাইলি অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেত-এর প্রধান রনেন বার। পুতিনের ভূমিকা নিয়ে ট্রাম্পের উদ্বেগ, নতুন নিষেধাজ্ঞার ইঙ্গিত ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্ত: বৈদেশিক সহায়তায় ৯০ দিনের সাময়িক স্থগিতাদেশ ইতালি থেকে আসা সেই বিমানে তল্লাশির পর যা জানা গেল

হেলথ টিপস

অল্প বয়সে কোমর ব্যথা? জেনে নিন, কারণ ও ঘরোয়া চিকিৎসা  

খবরের কথা ডেস্ক

ছবি সংগৃহীত

 

কোমর ব্যথা এখন আর কেবল বয়স্কদের সমস্যা নয়। আধুনিক জীবনের ব্যস্ততা ও অস্বাস্থ্যকর অভ্যাসের কারণে তরুণদের মধ্যেও কোমর ব্যথার প্রাদুর্ভাব ক্রমশ বাড়ছে। এ সমস্যা যথাসময়ে সমাধান না করলে তা দৈনন্দিন জীবনে মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। তবে সঠিক তথ্য ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করলে সহজেই এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

অল্প বয়সে কোমর ব্যথা কেন হয়

অল্প বয়সে কোমর ব্যথার কিছু বিশেষ কারণ রয়েছে:

লাইফস্টাইল ও অভ্যাস: অল্প বয়সে কোমর ব্যথা সাধারণত অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ও অভ্যাসের কারণে হয়ে থাকে। দীর্ঘক্ষণ বসে কাজ করা, সঠিক ভঙ্গিমায় না বসা বা হাঁটা, ভারী ওজন তুলতে গিয়ে পেশির ক্ষতি হওয়া এবং শারীরিক পরিশ্রমের অভাব কোমর ব্যথার কারণ হতে পারে। এছাড়াও, অতিরিক্ত মোবাইল বা কম্পিউটার ব্যবহারে সামনে ঝুঁকে থাকার ফলে মেরুদণ্ডের উপর চাপ সৃষ্টি হয়। আধুনিক জীবনে কম শারীরিক কার্যক্রম এবং দীর্ঘ সময় বসে কাজ করার ফলে কোমর ব্যথা হতে পারে। সঠিক পুষ্টি এবং পর্যাপ্ত ব্যায়ামের অভাবও কোমরের ব্যথার একটি বড় কারণ। নিয়মিত ব্যায়াম, সঠিক ভঙ্গিমায় বসা এবং ভারী ওজন তোলার সময় সতর্কতা অবলম্বন করলে এই সমস্যা এড়ানো সম্ভব।

মোবাইল ও কম্পিউটার ব্যবহারের অতিরিক্ত সময়: কোমর ব্যথার একটি অন্যতম প্রধান কারণ হলো মোবাইল ও কম্পিউটার ব্যবহারের সময় দীর্ঘক্ষণ ভুল ভঙ্গিতে বসা। অতিরিক্ত সময় ধরে একই অবস্থানে থাকায় পেশীগুলোতে চাপ পড়ে এবং মেরুদণ্ডের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। দীর্ঘ সময় ধরে মোবাইল বা কম্পিউটার ব্যবহারের কারণে কোমরের মাংসপেশিতে চাপ পড়ে এবং ব্যথা হতে পারে। নিয়মিত বিরতি এবং সঠিক ভঙ্গি বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ।

অস্বাস্থ্যকর খাবার: অল্প বয়সে কোমর ব্যথার একটি বড় কারণ অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া। জাঙ্ক ফুড, অতিরিক্ত চর্বি ও চিনি সমৃদ্ধ খাবার শরীরের ওজন বাড়ায়, যা মেরুদণ্ডে অতিরিক্ত চাপ ফেলে। এছাড়া, অপর্যাপ্ত পুষ্টির কারণে হাড় এবং পেশির গঠন দুর্বল হয়, ফলে কোমরে ব্যথা শুরু হয়। অস্বাস্থ্যকর খাবার খাবার খাওয়ার কারণে কোমরের সমস্যা বাড়তে পারে। সঠিক পুষ্টি গ্রহণই সুস্থ কোমরের মূল চাবিকাঠি।

অতিরিক্ত ওজন: অল্প বয়সে কোমর ব্যথার একটি সাধারণ কারণ হলো অতিরিক্ত ওজন। যখন শরীরের ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হয়, তখন মেরুদণ্ড এবং কোমরের হাড়ের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে। ফলে পেশি দুর্বল হয়ে পড়ে এবং কোমরে ব্যথা অনুভূত হয়। স্থূলতা দীর্ঘমেয়াদে মেরুদণ্ডের ক্ষতি করতে পারে, তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা কোমর ব্যথা প্রতিরোধের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায়।

লিগামেন্টের ক্ষতি: কোমর ব্যথার অন্যতম কারণ হলো লিগামেন্টের ক্ষতি। এটি মূলত অতিরিক্ত ভার উত্তোলন, ভুল অঙ্গবিন্যাস, বা হঠাৎ আঘাতের কারণে হতে পারে। লিগামেন্টে ক্ষতি হলে কোমরের স্থিতিশীলতা কমে যায়, যা তীব্র ব্যথা সৃষ্টি করে এবং দৈনন্দিন কাজকর্মে সমস্যা হতে পারে।

অনিয়মিত শরীরচর্চা: কোমর ব্যথা হওয়ার আরো একটি প্রধান কারণ হলো অনিয়মিত শরীরচর্চা। যখন শরীরের পেশীগুলি শক্ত হয় না এবং নিয়মিত ব্যায়াম করা হয় না, তখন কোমরের অংশে অতিরিক্ত চাপ পড়ে। এতে করে কোমর ব্যথা দেখা দিতে পারে। শরীরচর্চার মাধ্যমে পেশীগুলিকে শক্তিশালী করা এবং নমনীয়তা বজায় রাখা কোমরের ব্যথা প্রতিরোধে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত শরীরচর্চা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

কোমর ব্যথার ঘরোয়া চিকিৎসা

কোমর ব্যথার জন্য ঘরোয়া কিছু চিকিৎসা প্রক্রিয়া রয়েছে যা কিছুটা উপশম দিতে পারে:

আইস থেরাপি (Ice Therapy)

কোমর ব্যথার দ্রুত উপশমের জন্য আইস থেরাপি খুবই কার্যকর। ব্যথা হওয়া স্থানে বরফের প্যাক দিন এবং ১৫-২০ মিনিট ধরে রাখুন। এই পদ্ধতি প্রদাহ কমাতে এবং ব্যথা শামলাতে সহায়ক। দিনে ২-৩ বার এই থেরাপি প্রয়োগ করা যেতে পারে। তবে, সরাসরি ত্বকে বরফ লাগাবেন না; বরফের প্যাক বা তোয়ালে দিয়ে ব্যবহার করুন। দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

হট কম্প্রেস থেরাপি (Hot-compress)

গরম কম্প্রেস থেরাপি কোমর ব্যথার উপশমে কার্যকরী হতে পারে। একটি পরিষ্কার কাপড় গরম পানি বা গরম জলপট্টি দিয়ে ভিজিয়ে কোমরের ব্যথাযুক্ত স্থানে প্রলেপ দিন। এটি রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে এবং পেশির টান কমায়। দিনে ২-৩ বার ১৫-২০ মিনিটের জন্য হট কম্প্রেস ব্যবহার করুন। তবে, যদি ব্যথা ক্রমশ বাড়ে বা দীর্ঘস্থায়ী হয়, চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত।

স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ

কোমর ব্যথা কমাতে স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ অত্যন্ত কার্যকরী। প্রতিদিন সকালে কোমরের পেশী হালকা স্ট্রেচিং করা উচিত। এর জন্য প্রথমে চেয়ারে বসে সোজা হন এবং ধীরে ধীরে সামনের দিকে ঝুঁকুন। এরপর কোমরের দিকে হাত প্রসারিত করুন এবং ১৫-২০ সেকেন্ড ধরে রাখুন। এই এক্সারসাইজটি দিনে ২-৩ বার করা যেতে পারে। নিয়মিত স্ট্রেচিং করলে কোমরের পেশী নমনীয় থাকে এবং ব্যথা কমে আসে।

শরীরচর্চা

কোমর ব্যথা কমাতে নিয়মিত শরীরচর্চা অত্যন্ত কার্যকরী। প্রতিদিন ১৫-২০ মিনিট হাঁটাহাঁটি করুন এবং কোমরের পেশীগুলিকে শক্তিশালী করতে সঠিক ব্যায়াম করুন। পিঠের উপর শুয়ে কাঁধের নিচে একটি তোষক রেখে পা তুলুন, এটি কোমরের পেশী মজবুত করতে সাহায্য করে। এছাড়া, কোমরের নিচের অংশের স্ট্রেচিংও জরুরি। সঠিক শরীরচর্চা কোমরের ব্যথা কমাতে সহায়ক।

সঠিক বসার অভ্যাস

কোমর ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে সঠিক বসার অভ্যাস অপরিহার্য। কম্পিউটার বা টিভির সামনে বসার সময় সোজা বসুন, পিঠের সমর্থনে চাদর ব্যবহার করুন এবং নিয়মিত বিরতিতে উঠুন। এভাবে কোমরের চাপ কমবে এবং ব্যথা হ্রাস পাবে।

কোমর ব্যথার ঔষধবিহীন আকুপাংচার চিকিৎসা

সাধারন চিকিৎসায় কোমর ব্যথার নিরাময় না হলে অনেকের ক্ষেত্রে অপারেশনের প্রয়োজন হয়ে থাকে। তবে আকুপাংচার চিকিৎসার মাধ্যমে কোন প্রকার ঔষধ ও অপারেশন ছাড়া কোমর ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। আকুপাংচার একটি চীনা চিকিৎসা পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে কোন প্রকার ঔষধ এর ব্যবহার করা হয় না। বাংলাদেশে এই পদ্ধতিতে চিকিৎসা দিয়ে আসছে  দেশসেরা আকুপাংচার স্পেশালিষ্ট ডা. এস. এম. শহীদুল ইসলাম। তিনি বর্তমানে বাংলাদেশের সেরা ব্যথা নিরাময় হাসপাতাল SUOXI Hospital (Acupuncture) এ চিকিৎসা প্রদান করছেন।

অল্প বয়সে কোমর ব্যথা একটি সাধারণ সমস্যা হলেও এটি উপেক্ষা করা উচিত নয়। সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। ঘরোয়া চিকিৎসা, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা গ্রহণ করলে কোমর ব্যথার সমস্যা সহজেই মোকাবিলা করা যায়। তাই, সচেতনতা ও সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে কোমরের স্বাস্থ্য ভালো রাখা সম্ভব।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপডেট সময় ০৫:১৬:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫
৫২১ বার পড়া হয়েছে

হেলথ টিপস

অল্প বয়সে কোমর ব্যথা? জেনে নিন, কারণ ও ঘরোয়া চিকিৎসা  

আপডেট সময় ০৫:১৬:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫

 

কোমর ব্যথা এখন আর কেবল বয়স্কদের সমস্যা নয়। আধুনিক জীবনের ব্যস্ততা ও অস্বাস্থ্যকর অভ্যাসের কারণে তরুণদের মধ্যেও কোমর ব্যথার প্রাদুর্ভাব ক্রমশ বাড়ছে। এ সমস্যা যথাসময়ে সমাধান না করলে তা দৈনন্দিন জীবনে মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। তবে সঠিক তথ্য ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করলে সহজেই এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

অল্প বয়সে কোমর ব্যথা কেন হয়

অল্প বয়সে কোমর ব্যথার কিছু বিশেষ কারণ রয়েছে:

লাইফস্টাইল ও অভ্যাস: অল্প বয়সে কোমর ব্যথা সাধারণত অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ও অভ্যাসের কারণে হয়ে থাকে। দীর্ঘক্ষণ বসে কাজ করা, সঠিক ভঙ্গিমায় না বসা বা হাঁটা, ভারী ওজন তুলতে গিয়ে পেশির ক্ষতি হওয়া এবং শারীরিক পরিশ্রমের অভাব কোমর ব্যথার কারণ হতে পারে। এছাড়াও, অতিরিক্ত মোবাইল বা কম্পিউটার ব্যবহারে সামনে ঝুঁকে থাকার ফলে মেরুদণ্ডের উপর চাপ সৃষ্টি হয়। আধুনিক জীবনে কম শারীরিক কার্যক্রম এবং দীর্ঘ সময় বসে কাজ করার ফলে কোমর ব্যথা হতে পারে। সঠিক পুষ্টি এবং পর্যাপ্ত ব্যায়ামের অভাবও কোমরের ব্যথার একটি বড় কারণ। নিয়মিত ব্যায়াম, সঠিক ভঙ্গিমায় বসা এবং ভারী ওজন তোলার সময় সতর্কতা অবলম্বন করলে এই সমস্যা এড়ানো সম্ভব।

মোবাইল ও কম্পিউটার ব্যবহারের অতিরিক্ত সময়: কোমর ব্যথার একটি অন্যতম প্রধান কারণ হলো মোবাইল ও কম্পিউটার ব্যবহারের সময় দীর্ঘক্ষণ ভুল ভঙ্গিতে বসা। অতিরিক্ত সময় ধরে একই অবস্থানে থাকায় পেশীগুলোতে চাপ পড়ে এবং মেরুদণ্ডের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। দীর্ঘ সময় ধরে মোবাইল বা কম্পিউটার ব্যবহারের কারণে কোমরের মাংসপেশিতে চাপ পড়ে এবং ব্যথা হতে পারে। নিয়মিত বিরতি এবং সঠিক ভঙ্গি বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ।

অস্বাস্থ্যকর খাবার: অল্প বয়সে কোমর ব্যথার একটি বড় কারণ অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া। জাঙ্ক ফুড, অতিরিক্ত চর্বি ও চিনি সমৃদ্ধ খাবার শরীরের ওজন বাড়ায়, যা মেরুদণ্ডে অতিরিক্ত চাপ ফেলে। এছাড়া, অপর্যাপ্ত পুষ্টির কারণে হাড় এবং পেশির গঠন দুর্বল হয়, ফলে কোমরে ব্যথা শুরু হয়। অস্বাস্থ্যকর খাবার খাবার খাওয়ার কারণে কোমরের সমস্যা বাড়তে পারে। সঠিক পুষ্টি গ্রহণই সুস্থ কোমরের মূল চাবিকাঠি।

অতিরিক্ত ওজন: অল্প বয়সে কোমর ব্যথার একটি সাধারণ কারণ হলো অতিরিক্ত ওজন। যখন শরীরের ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হয়, তখন মেরুদণ্ড এবং কোমরের হাড়ের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে। ফলে পেশি দুর্বল হয়ে পড়ে এবং কোমরে ব্যথা অনুভূত হয়। স্থূলতা দীর্ঘমেয়াদে মেরুদণ্ডের ক্ষতি করতে পারে, তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা কোমর ব্যথা প্রতিরোধের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায়।

লিগামেন্টের ক্ষতি: কোমর ব্যথার অন্যতম কারণ হলো লিগামেন্টের ক্ষতি। এটি মূলত অতিরিক্ত ভার উত্তোলন, ভুল অঙ্গবিন্যাস, বা হঠাৎ আঘাতের কারণে হতে পারে। লিগামেন্টে ক্ষতি হলে কোমরের স্থিতিশীলতা কমে যায়, যা তীব্র ব্যথা সৃষ্টি করে এবং দৈনন্দিন কাজকর্মে সমস্যা হতে পারে।

অনিয়মিত শরীরচর্চা: কোমর ব্যথা হওয়ার আরো একটি প্রধান কারণ হলো অনিয়মিত শরীরচর্চা। যখন শরীরের পেশীগুলি শক্ত হয় না এবং নিয়মিত ব্যায়াম করা হয় না, তখন কোমরের অংশে অতিরিক্ত চাপ পড়ে। এতে করে কোমর ব্যথা দেখা দিতে পারে। শরীরচর্চার মাধ্যমে পেশীগুলিকে শক্তিশালী করা এবং নমনীয়তা বজায় রাখা কোমরের ব্যথা প্রতিরোধে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত শরীরচর্চা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

কোমর ব্যথার ঘরোয়া চিকিৎসা

কোমর ব্যথার জন্য ঘরোয়া কিছু চিকিৎসা প্রক্রিয়া রয়েছে যা কিছুটা উপশম দিতে পারে:

আইস থেরাপি (Ice Therapy)

কোমর ব্যথার দ্রুত উপশমের জন্য আইস থেরাপি খুবই কার্যকর। ব্যথা হওয়া স্থানে বরফের প্যাক দিন এবং ১৫-২০ মিনিট ধরে রাখুন। এই পদ্ধতি প্রদাহ কমাতে এবং ব্যথা শামলাতে সহায়ক। দিনে ২-৩ বার এই থেরাপি প্রয়োগ করা যেতে পারে। তবে, সরাসরি ত্বকে বরফ লাগাবেন না; বরফের প্যাক বা তোয়ালে দিয়ে ব্যবহার করুন। দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

হট কম্প্রেস থেরাপি (Hot-compress)

গরম কম্প্রেস থেরাপি কোমর ব্যথার উপশমে কার্যকরী হতে পারে। একটি পরিষ্কার কাপড় গরম পানি বা গরম জলপট্টি দিয়ে ভিজিয়ে কোমরের ব্যথাযুক্ত স্থানে প্রলেপ দিন। এটি রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে এবং পেশির টান কমায়। দিনে ২-৩ বার ১৫-২০ মিনিটের জন্য হট কম্প্রেস ব্যবহার করুন। তবে, যদি ব্যথা ক্রমশ বাড়ে বা দীর্ঘস্থায়ী হয়, চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত।

স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ

কোমর ব্যথা কমাতে স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ অত্যন্ত কার্যকরী। প্রতিদিন সকালে কোমরের পেশী হালকা স্ট্রেচিং করা উচিত। এর জন্য প্রথমে চেয়ারে বসে সোজা হন এবং ধীরে ধীরে সামনের দিকে ঝুঁকুন। এরপর কোমরের দিকে হাত প্রসারিত করুন এবং ১৫-২০ সেকেন্ড ধরে রাখুন। এই এক্সারসাইজটি দিনে ২-৩ বার করা যেতে পারে। নিয়মিত স্ট্রেচিং করলে কোমরের পেশী নমনীয় থাকে এবং ব্যথা কমে আসে।

শরীরচর্চা

কোমর ব্যথা কমাতে নিয়মিত শরীরচর্চা অত্যন্ত কার্যকরী। প্রতিদিন ১৫-২০ মিনিট হাঁটাহাঁটি করুন এবং কোমরের পেশীগুলিকে শক্তিশালী করতে সঠিক ব্যায়াম করুন। পিঠের উপর শুয়ে কাঁধের নিচে একটি তোষক রেখে পা তুলুন, এটি কোমরের পেশী মজবুত করতে সাহায্য করে। এছাড়া, কোমরের নিচের অংশের স্ট্রেচিংও জরুরি। সঠিক শরীরচর্চা কোমরের ব্যথা কমাতে সহায়ক।

সঠিক বসার অভ্যাস

কোমর ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে সঠিক বসার অভ্যাস অপরিহার্য। কম্পিউটার বা টিভির সামনে বসার সময় সোজা বসুন, পিঠের সমর্থনে চাদর ব্যবহার করুন এবং নিয়মিত বিরতিতে উঠুন। এভাবে কোমরের চাপ কমবে এবং ব্যথা হ্রাস পাবে।

কোমর ব্যথার ঔষধবিহীন আকুপাংচার চিকিৎসা

সাধারন চিকিৎসায় কোমর ব্যথার নিরাময় না হলে অনেকের ক্ষেত্রে অপারেশনের প্রয়োজন হয়ে থাকে। তবে আকুপাংচার চিকিৎসার মাধ্যমে কোন প্রকার ঔষধ ও অপারেশন ছাড়া কোমর ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। আকুপাংচার একটি চীনা চিকিৎসা পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে কোন প্রকার ঔষধ এর ব্যবহার করা হয় না। বাংলাদেশে এই পদ্ধতিতে চিকিৎসা দিয়ে আসছে  দেশসেরা আকুপাংচার স্পেশালিষ্ট ডা. এস. এম. শহীদুল ইসলাম। তিনি বর্তমানে বাংলাদেশের সেরা ব্যথা নিরাময় হাসপাতাল SUOXI Hospital (Acupuncture) এ চিকিৎসা প্রদান করছেন।

অল্প বয়সে কোমর ব্যথা একটি সাধারণ সমস্যা হলেও এটি উপেক্ষা করা উচিত নয়। সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। ঘরোয়া চিকিৎসা, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা গ্রহণ করলে কোমর ব্যথার সমস্যা সহজেই মোকাবিলা করা যায়। তাই, সচেতনতা ও সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে কোমরের স্বাস্থ্য ভালো রাখা সম্ভব।