ঢাকা ১২:৫১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫, ১৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
প্রেমাদাসায় তাসকিন–তানজিমের বোলিং তোপে ২৪৪ রানে থামল লঙ্কানরা ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রপ্তানি আয়ে ৮.৫৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি, উল্লেখযোগ্য পোশাক খাত জুলাই সনদ দলীয় হলে সার্বজনীনতা হারাবে: আন্দালিভ রহমান পার্থ পাকিস্তানে সরকারি গাড়িতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে কমিশনারসহ নিহত ৫, আহত ১১ আন্দোলনের মাধ্যমে ফ্যাসিস্টের পতন ঘটলেও ফ্যাসিস্টিক ব্যবস্থা এখনও বিদ্যমান: নাহিদ ইসলাম গণতন্ত্র রক্ষায় বিএনপির ত্যাগ বেশি: তারেক রহমান চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি কৃষক নিহত বৈদ্যুতিক খুঁটিতে ট্রাকের ধাক্কা, গাড়ি কেটে হেলপারকে উদ্ধার উত্তরসূরি নির্ধারণের ক্ষেত্রে কোনো বহিরাগত হস্তক্ষেপ গ্রহণযোগ্য নয়: দালাই লামা চট্টগ্রাম বন্দর পরিচালনায় নৌবাহিনীর দক্ষতার ওপর আস্থা রয়েছে: নৌপরিবহন উপদেষ্টা

ফরিদপুরের সোনালি আঁশের বাম্পার ফলনের আশা, পানি সংকটে দুশ্চিন্তায় চাষিরা

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৬:৩৪:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ জুলাই ২০২৫
  • / 1

ছবি সংগৃহীত

 

‘সোনালি আঁশে ভরপুর ভালোবাসি ফরিদপুর’ এই স্লোগান যেন বাস্তবে রূপ নিয়েছে পাটের আবাদে। ফরিদপুর জেলা দেশে পাট উৎপাদনে শীর্ষ অবস্থান ধরে রেখেছে, আর এ বছর সেই অবস্থান আরও সুদৃঢ় করেছে। জেলার উর্বর মাটি ও অনুকূল আবহাওয়ায় পাটের চাষ দিন দিন বাড়ছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, এ বছর লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে জেলার ৮৬ হাজার ৫৩১ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে, যা গতবারের চেয়ে সামান্য বেশি।

ফরিদপুরের সোনালি আঁশ শুধু পরিচয়ের অংশ নয়, কৃষকদের জীবন-জীবিকার অন্যতম প্রধান ভিত্তি। তাই পাটকে ঘিরে কৃষকদের প্রত্যাশা বরাবরই বেশি। এ বছর পাটের ফলন স্বাভাবিকের তুলনায় ভালো হওয়ার ইঙ্গিত মিলেছে। তবে জেলার কিছু নিম্নাঞ্চলে বেশি সময় ধরে পানি জমে থাকায় গাছের বৃদ্ধি প্রত্যাশিত মাত্রায় হয়নি, যার কারণে সীমিত আকারে ক্ষতি হয়েছে। তা সত্ত্বেও জেলার বেশিরভাগ চাষি ভালো ফলনের আশা করছেন।

কিন্তু উৎপাদন খরচের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা। বীজ, সার, কীটনাশক ও শ্রমিকের দাম বেড়ে যাওয়ায় প্রতি বিঘা জমিতে গড়ে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে বলে জানিয়েছেন চাষিরা। তাদের দাবি, এ পরিস্থিতিতে যদি ন্যায্য দাম না পাওয়া যায়, তাহলে লোকসান গুনতে হবে।

সালথা উপজেলার গট্টি গ্রামের চাষি হাবিবুর রহমান জানান, ‘এবার ফলন ভালো হয়েছে। এক শতাংশে ১০ থেকে ১২ কেজি পাট হবে বলে আশা করছি। তবে খাল-বিলে পর্যাপ্ত পানি নেই, জাগ দেবো কোথায় তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।’

একইভাবে, ভাওয়াল গ্রামের ফরিদ মোল্লা ও পুরুরা গ্রামের সুদের বিশ্বাস বলেন, ‘সবকিছুর দাম বেড়েছে, আবার অনাবৃষ্টির কারণে সেচ দিতে হয়েছে কয়েক দফা। কিন্তু পাট জাগ দেওয়ার জন্য খালে-বিলে, পুকুরে পানি নেই। ভালো পানি না হলে আঁশের মান নষ্ট হবে। তাই সরকার যেন ন্যায্য দাম নিশ্চিত করে।’

বোয়ালমারীর চতুল ইউনিয়নের বাইখীর গ্রামের চাষি সুইট মন্ডলও একই দাবি জানিয়ে বলেন, ‘পাটের ন্যায্য দাম ও সরকারি সহায়তা পেলে পাট চাষ আরও প্রসারিত হবে।’

ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. শাহাদুজ্জামান আশাবাদ জানিয়ে বলেন, ‘ফরিদপুর সব সময়ই পাট উৎপাদনে এগিয়ে। এবারও বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।’

তবে পানি সংকট এবং ন্যায্য মূল্য নিয়ে কৃষকদের দুশ্চিন্তা যদি সমাধান না হয়, তাহলে এই সম্ভাবনা পূরণে বাধা আসতে পারে বলেই মনে করছেন অনেকেই।

নিউজটি শেয়ার করুন

ফরিদপুরের সোনালি আঁশের বাম্পার ফলনের আশা, পানি সংকটে দুশ্চিন্তায় চাষিরা

আপডেট সময় ০৬:৩৪:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২ জুলাই ২০২৫

 

‘সোনালি আঁশে ভরপুর ভালোবাসি ফরিদপুর’ এই স্লোগান যেন বাস্তবে রূপ নিয়েছে পাটের আবাদে। ফরিদপুর জেলা দেশে পাট উৎপাদনে শীর্ষ অবস্থান ধরে রেখেছে, আর এ বছর সেই অবস্থান আরও সুদৃঢ় করেছে। জেলার উর্বর মাটি ও অনুকূল আবহাওয়ায় পাটের চাষ দিন দিন বাড়ছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, এ বছর লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে জেলার ৮৬ হাজার ৫৩১ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে, যা গতবারের চেয়ে সামান্য বেশি।

ফরিদপুরের সোনালি আঁশ শুধু পরিচয়ের অংশ নয়, কৃষকদের জীবন-জীবিকার অন্যতম প্রধান ভিত্তি। তাই পাটকে ঘিরে কৃষকদের প্রত্যাশা বরাবরই বেশি। এ বছর পাটের ফলন স্বাভাবিকের তুলনায় ভালো হওয়ার ইঙ্গিত মিলেছে। তবে জেলার কিছু নিম্নাঞ্চলে বেশি সময় ধরে পানি জমে থাকায় গাছের বৃদ্ধি প্রত্যাশিত মাত্রায় হয়নি, যার কারণে সীমিত আকারে ক্ষতি হয়েছে। তা সত্ত্বেও জেলার বেশিরভাগ চাষি ভালো ফলনের আশা করছেন।

কিন্তু উৎপাদন খরচের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা। বীজ, সার, কীটনাশক ও শ্রমিকের দাম বেড়ে যাওয়ায় প্রতি বিঘা জমিতে গড়ে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে বলে জানিয়েছেন চাষিরা। তাদের দাবি, এ পরিস্থিতিতে যদি ন্যায্য দাম না পাওয়া যায়, তাহলে লোকসান গুনতে হবে।

সালথা উপজেলার গট্টি গ্রামের চাষি হাবিবুর রহমান জানান, ‘এবার ফলন ভালো হয়েছে। এক শতাংশে ১০ থেকে ১২ কেজি পাট হবে বলে আশা করছি। তবে খাল-বিলে পর্যাপ্ত পানি নেই, জাগ দেবো কোথায় তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।’

একইভাবে, ভাওয়াল গ্রামের ফরিদ মোল্লা ও পুরুরা গ্রামের সুদের বিশ্বাস বলেন, ‘সবকিছুর দাম বেড়েছে, আবার অনাবৃষ্টির কারণে সেচ দিতে হয়েছে কয়েক দফা। কিন্তু পাট জাগ দেওয়ার জন্য খালে-বিলে, পুকুরে পানি নেই। ভালো পানি না হলে আঁশের মান নষ্ট হবে। তাই সরকার যেন ন্যায্য দাম নিশ্চিত করে।’

বোয়ালমারীর চতুল ইউনিয়নের বাইখীর গ্রামের চাষি সুইট মন্ডলও একই দাবি জানিয়ে বলেন, ‘পাটের ন্যায্য দাম ও সরকারি সহায়তা পেলে পাট চাষ আরও প্রসারিত হবে।’

ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. শাহাদুজ্জামান আশাবাদ জানিয়ে বলেন, ‘ফরিদপুর সব সময়ই পাট উৎপাদনে এগিয়ে। এবারও বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।’

তবে পানি সংকট এবং ন্যায্য মূল্য নিয়ে কৃষকদের দুশ্চিন্তা যদি সমাধান না হয়, তাহলে এই সম্ভাবনা পূরণে বাধা আসতে পারে বলেই মনে করছেন অনেকেই।