মবের সহিংসতা বিচার ব্যবস্থার প্রতি অনাস্থা নয়, ১৭ বছরের ক্রোধ: অ্যাটর্নি জেনারেল

- আপডেট সময় ১১:৫৫:২৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৬ জুলাই ২০২৫
- / 5
অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, সাম্প্রতিক মবের সহিংস ঘটনাগুলো বিচার বিভাগের প্রতি মানুষের অনাস্থার প্রকাশ নয়, বরং এটি গত ১৭ বছরের জমে থাকা ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। তবে এই ক্ষোভ সমীচীন নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
শনিবার (৫ জুলাই) রাজধানীতে অনুষ্ঠিত ‘জুলাই আন্দোলনের চেতনা বাস্তবায়নে করণীয়’ শীর্ষক এক বিতর্ক অনুষ্ঠানে প্রশ্নোত্তর পর্বে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
মব সন্ত্রাস কি বিচারব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থাহীনতার ইঙ্গিত দেয় কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, “এটি আসলে বিচারব্যবস্থার প্রতি অনাস্থা নয়। এই মবের সহিংসতা এক ধরনের ক্রোধ, যা মানুষের ভেতরে দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে জমে আছে। স্বজন হারানোর ক্ষোভ, সাড়ে চার হাজারের বেশি গণতান্ত্রিক কর্মীর ক্রসফায়ারে নিহত হওয়ার ক্ষোভ, ৭০০-এর বেশি গুম হওয়ার ঘটনার ক্ষোভ এবং ৬০ লাখের বেশি মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও গায়েবি মামলা দায়ের করে আদালতে দাঁড় করানোর ক্ষোভ সব মিলিয়ে এই ক্ষোভ মানুষের মনে পুঞ্জিভূত হয়েছে।”
তিনি বলেন, “এই ক্ষোভ আমরা কখনোই প্রত্যাশা করি না। এই ক্ষোভ অনাকাঙ্ক্ষিত, এটি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এই ক্ষোভ জুলাই বিপ্লবের মূল চেতনার সঙ্গে যায় না। যারা এমন ক্ষোভ দেখাচ্ছেন, তাদের প্রতি আমার অনুরোধ থাকবে— নিজেদের সংযত রাখুন।
গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের বাংলাদেশ গড়তে হলে জুলাই আন্দোলনের চেতনাকে ধারণ করে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিচারের দাবি তুলুন, যাতে ন্যায়বিচার বাস্তবায়ন করতে সংশ্লিষ্টরা যথাযথ পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হন এবং দোষীদের বিচারের আওতায় আনা যায়।”
নুরুল হুদার মবের হাতে নিহত হওয়ার প্রসঙ্গ টেনে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, “নিশ্চয়ই এই ঘটনায় দোষীদের বিচার হওয়া প্রয়োজন। তবে যে প্রক্রিয়ায় নুরুল হুদা প্রাণ হারালেন, সেই প্রক্রিয়া কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। আমরা এমন বিচার চাই না। এভাবে বিচার হলে তা আমাদের সকল গণতান্ত্রিক অর্জনকে প্রশ্নের মুখে ফেলতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের জনগণের আস্থা ধরে রাখতে হলে ন্যায়বিচারের সঠিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করাই আমাদের দায়িত্ব। আইন নিজের হাতে তুলে নিলে গণতান্ত্রিক শৃঙ্খলা বিনষ্ট হয়, যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।”