ঢাকা ০৫:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫, ২৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
পাবনায় তীব্র নদী ভাঙনে বিলীনের ‍মুখে ফেরিঘাট! আতঙ্কে এলাকবাসী গাইবান্ধায় যৌথবাহিনীর অভিযানে ১০ জুয়াড়ি আটক আমার বিরুদ্ধে একজন নারী ভক্তকে ব্যবহার করে এমন মামলা উদ্দেশ্যপ্রণোদি: ডিপজল পুলিশ পরিচয়ে নারায়ণগঞ্জে দুর্ধর্ষ ডাকাতি, লুট অর্ধকোটি টাকার মালামাল গুজরাটে সেতু ধসে ৯ জনের মর্মান্তিক প্রাণহানি, আহত আরও ৬ দীর্ঘমেয়াদি নয় মৌলিক সংস্কার বাস্তবায়নেই বেশি জোর দিচ্ছে সরকার: অর্থ উপদেষ্টা হাতিরঝিলে যুবদল কর্মী হত্যায় সুব্রত বাইন ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর অডিট রিপোর্টে মানের ঘাটতি, বিনিয়োগে আস্থার বাধা: অর্থ উপদেষ্টা টেক্সাসে ভয়াবহ বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১০৯, নিখোঁজ দেড় শতাধিক শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের দলীয়ভাবে গণহত্যার বিচার হওয়া উচিত: মির্জা ফখরুল

তালেবানের শীর্ষ দুই নেতার বিরুদ্ধে আইসিসির গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১১:৪৯:০৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৯ জুলাই ২০২৫
  • / 6

ছবি সংগৃহীত

 

আফগানিস্তানের তালেবান শাসকদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) আইসিসির এক বিবৃতিতে জানানো হয়, তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা এবং দেশটির প্রধান বিচারপতি আবদুল হাকিম হাক্কানির বিরুদ্ধে নারী ও কিশোরীদের ওপর নির্যাতনমূলক নীতিমালার কারণে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ২০২১ সালে আফগানিস্তানে তালেবান পুনরায় ক্ষমতায় আসার পর দেশটিতে নারীদের প্রতি ধারাবাহিকভাবে দমন-পীড়নমূলক আচরণ শুরু হয়। মেয়েদের স্কুলে যাওয়া নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়, বিশেষ করে ১২ বছরের বেশি বয়সী মেয়েদের শিক্ষার সুযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। একই সঙ্গে নারীদের বিভিন্ন পেশাগত ক্ষেত্র থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়।

তালেবান কর্তৃপক্ষ এমনকি নারীসঙ্গী ছাড়া ভ্রমণের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করে। জনসমক্ষে নারীদের কথা বলার বিষয়েও কঠোর নিয়ম চালু করা হয়। এসব নীতিমালাকে নারীদের প্রতি ‘সিস্টেমেটিক নিপীড়ন’ হিসেবে উল্লেখ করেছে আইসিসি।

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের মতে, এসব নীতির মাধ্যমে তালেবান শুধু আফগান সমাজে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেনি, বরং নারীদের মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতা হরণ করেছে। জাতিসংঘ এসব পদক্ষেপকে স্পষ্টভাবে লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্য হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।

আইসিসির পরোয়ানার বিষয়ে তালেবান এক প্রতিক্রিয়ায় জানায়, তারা এই আদালতকে স্বীকৃতি দেয় না এবং পরোয়ানাকে ‘একটি শত্রুতাপূর্ণ রাজনৈতিক পদক্ষেপ’ হিসেবে বিবেচনা করছে। তালেবান আরও দাবি করে, তারা ইসলামি আইন ও আফগান সংস্কৃতির আলোকে নারীদের অধিকার রক্ষা করছে।

তবে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, এসব নীতি মূলত নারীদের সমাজের মূলধারার বাইরে ঠেলে দেয় এবং একটি প্রজন্মকে শিক্ষা ও আত্মনির্ভরশীলতা থেকে বঞ্চিত করে।

তালেবান নেতৃত্বের বিরুদ্ধে আইসিসির এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এটি শুধু আফগানিস্তানের পরিস্থিতিকেই নয়, বরং লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের আন্তর্জাতিক বিচারব্যবস্থাকে আরও জোরদার করার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

তালেবানের শীর্ষ দুই নেতার বিরুদ্ধে আইসিসির গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি

আপডেট সময় ১১:৪৯:০৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৯ জুলাই ২০২৫

 

আফগানিস্তানের তালেবান শাসকদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) আইসিসির এক বিবৃতিতে জানানো হয়, তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা এবং দেশটির প্রধান বিচারপতি আবদুল হাকিম হাক্কানির বিরুদ্ধে নারী ও কিশোরীদের ওপর নির্যাতনমূলক নীতিমালার কারণে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ২০২১ সালে আফগানিস্তানে তালেবান পুনরায় ক্ষমতায় আসার পর দেশটিতে নারীদের প্রতি ধারাবাহিকভাবে দমন-পীড়নমূলক আচরণ শুরু হয়। মেয়েদের স্কুলে যাওয়া নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়, বিশেষ করে ১২ বছরের বেশি বয়সী মেয়েদের শিক্ষার সুযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। একই সঙ্গে নারীদের বিভিন্ন পেশাগত ক্ষেত্র থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়।

তালেবান কর্তৃপক্ষ এমনকি নারীসঙ্গী ছাড়া ভ্রমণের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করে। জনসমক্ষে নারীদের কথা বলার বিষয়েও কঠোর নিয়ম চালু করা হয়। এসব নীতিমালাকে নারীদের প্রতি ‘সিস্টেমেটিক নিপীড়ন’ হিসেবে উল্লেখ করেছে আইসিসি।

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের মতে, এসব নীতির মাধ্যমে তালেবান শুধু আফগান সমাজে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেনি, বরং নারীদের মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতা হরণ করেছে। জাতিসংঘ এসব পদক্ষেপকে স্পষ্টভাবে লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্য হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।

আইসিসির পরোয়ানার বিষয়ে তালেবান এক প্রতিক্রিয়ায় জানায়, তারা এই আদালতকে স্বীকৃতি দেয় না এবং পরোয়ানাকে ‘একটি শত্রুতাপূর্ণ রাজনৈতিক পদক্ষেপ’ হিসেবে বিবেচনা করছে। তালেবান আরও দাবি করে, তারা ইসলামি আইন ও আফগান সংস্কৃতির আলোকে নারীদের অধিকার রক্ষা করছে।

তবে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, এসব নীতি মূলত নারীদের সমাজের মূলধারার বাইরে ঠেলে দেয় এবং একটি প্রজন্মকে শিক্ষা ও আত্মনির্ভরশীলতা থেকে বঞ্চিত করে।

তালেবান নেতৃত্বের বিরুদ্ধে আইসিসির এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এটি শুধু আফগানিস্তানের পরিস্থিতিকেই নয়, বরং লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের আন্তর্জাতিক বিচারব্যবস্থাকে আরও জোরদার করার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।