ঢাকা ০২:০৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ৩১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
দুর্নীতির মামলায় হাইকোর্ট থেকে জামিন পেলেন ডা. জুবাইদা রহমান তারেক রহমানের ৩১ দফা কর্মসূচি নিয়ে মালয়েশিয়ায় বিএনপির কর্মশালা ঢাবি ভিসিকে দোষী দেখিয়ে মূল সত্য আড়াল করার পাঁয়তারা: সারজিসের অভিযোগ চট্টগ্রাম বন্দর ছাড়া অর্থনীতির নতুন দিগন্ত সম্ভব নয়: ড. ইউনূস শাহরিয়ার সাম্য হত্যাকাণ্ড: সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এখন ‘অপরাধের স্বর্গরাজ্য’: হাসনাত আব্দুল্লাহ সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাঙ্গীর আলমের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতা ট্রাম্প করেনি: ভারতের স্পষ্ট বার্তা টাইগারদের আরব আমিরাত সফর শুরু, পাকিস্তান সিরিজ নিয়ে শঙ্কা চট্টগ্রাম বন্দর ঘুরে দেখলেন প্রধান উপদেষ্টা ইরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিষেধাজ্ঞা, আলোচনার মাঝেই উত্তেজনা বৃদ্ধি

সিরিয়ার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা তুলে নিচ্ছেন ট্রাম্প, নীতিতে বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১০:৫৬:৪২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫
  • / 3

ছবি সংগৃহীত

 

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সিরিয়ার ওপর দীর্ঘদিন ধরে আরোপিত মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন। মঙ্গলবার সৌদি আরবে এক বিনিয়োগ সম্মেলনে তিনি এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের অনুরোধে ট্রাম্প এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের নির্দেশ দিতে যাচ্ছেন।

ট্রাম্প বলেন, “সিরিয়ার ওপর থেকে সব নিষেধাজ্ঞা তুলে নিচ্ছি। এখন তাদের আলোকিত হওয়ার সময় এসেছে। শুভকামনা, সিরিয়া আমাদের জন্য কিছু বিশেষ করে দেখাও।”

এই সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিতে একটি বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। জানা গেছে, ইসলামপন্থী ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে আসা সিরিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারারের সঙ্গে বুধবার সৌদি আরবে ট্রাম্পের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।

হোয়াইট হাউসের একজন কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন, রিয়াদে শারারের সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠক নির্ধারিত রয়েছে। সিরিয়ার দুটি সরকারি সূত্র জানায়, বুধবার সকালে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুসারে, ট্রাম্প এই সিদ্ধান্ত নেন সৌদি যুবরাজ বিন সালমান এবং তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের সঙ্গে আলোচনার পর। এই দুই দেশই সিরিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পক্ষে মত দিয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ফলে সিরিয়ায় আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থাগুলোর কাজের সুযোগ বাড়বে, বিদেশি বিনিয়োগ সহজ হবে এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির পুনর্গঠনের পথ প্রশস্ত হবে।

তবে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা সিরিয়ার বর্তমান প্রশাসন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। যদিও শারার ২০১৬ সালে আল কায়েদার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন, ইসরায়েল এখনো তাকে সন্দেহের চোখে দেখে। এখনো পর্যন্ত এ বিষয়ে ইসরায়েল সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

ট্রাম্প বলেন, “নিষেধাজ্ঞাগুলো একসময় গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কিন্তু এখন সময় এসেছে সিরিয়াকে সামনে এগিয়ে নেওয়ার।”

তিনি আরও জানান, দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এ সপ্তাহেই যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদ আল-শিবানির সঙ্গে বৈঠক করবেন। শিবানি এক বিবৃতিতে বলেন, “এটি আমাদের জনগণের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় পরিবর্তন। পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও আস্থার ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতে আমরা প্রস্তুত।”

প্রসঙ্গত, ২০১১ সাল থেকে চলমান সিরিয়া সংকটে ইসরায়েল গোলান মালভূমি সংলগ্ন সিরিয়ার কিছু অংশ দখল করে রেখেছে এবং সেসব এলাকায় নিয়মিত বিমান হামলা চালিয়ে আসছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে সিরিয়া শান্তিপূর্ণ সমাধানে আগ্রহ প্রকাশ করেছে এবং ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের সংকেতও দিয়েছে।

শারার এক সময় আল কায়েদার সিরিয়া শাখা ‘নুসরা ফ্রন্ট’–এর নেতা ছিলেন এবং ইরাকে মার্কিন কারাগারে পাঁচ বছর বন্দী ছিলেন। তবে ২০১৬ সালে তিনি উগ্রপন্থা থেকে সরে আসেন এবং ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে নুসরা ফ্রন্ট আনুষ্ঠানিকভাবে বিলুপ্ত হয়। বর্তমানে তিনি সিরিয়ার পুনর্গঠনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

জাতিসংঘ এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে। সংস্থার মুখপাত্র স্তেফান দুজারিক বলেন, “সিরিয়ায় মানুষের জীবনমান উন্নয়নে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

নিউজটি শেয়ার করুন

সিরিয়ার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা তুলে নিচ্ছেন ট্রাম্প, নীতিতে বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত

আপডেট সময় ১০:৫৬:৪২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫

 

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সিরিয়ার ওপর দীর্ঘদিন ধরে আরোপিত মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন। মঙ্গলবার সৌদি আরবে এক বিনিয়োগ সম্মেলনে তিনি এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের অনুরোধে ট্রাম্প এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের নির্দেশ দিতে যাচ্ছেন।

ট্রাম্প বলেন, “সিরিয়ার ওপর থেকে সব নিষেধাজ্ঞা তুলে নিচ্ছি। এখন তাদের আলোকিত হওয়ার সময় এসেছে। শুভকামনা, সিরিয়া আমাদের জন্য কিছু বিশেষ করে দেখাও।”

এই সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিতে একটি বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। জানা গেছে, ইসলামপন্থী ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে আসা সিরিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারারের সঙ্গে বুধবার সৌদি আরবে ট্রাম্পের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।

হোয়াইট হাউসের একজন কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন, রিয়াদে শারারের সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠক নির্ধারিত রয়েছে। সিরিয়ার দুটি সরকারি সূত্র জানায়, বুধবার সকালে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুসারে, ট্রাম্প এই সিদ্ধান্ত নেন সৌদি যুবরাজ বিন সালমান এবং তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের সঙ্গে আলোচনার পর। এই দুই দেশই সিরিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পক্ষে মত দিয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ফলে সিরিয়ায় আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থাগুলোর কাজের সুযোগ বাড়বে, বিদেশি বিনিয়োগ সহজ হবে এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির পুনর্গঠনের পথ প্রশস্ত হবে।

তবে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা সিরিয়ার বর্তমান প্রশাসন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। যদিও শারার ২০১৬ সালে আল কায়েদার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন, ইসরায়েল এখনো তাকে সন্দেহের চোখে দেখে। এখনো পর্যন্ত এ বিষয়ে ইসরায়েল সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

ট্রাম্প বলেন, “নিষেধাজ্ঞাগুলো একসময় গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কিন্তু এখন সময় এসেছে সিরিয়াকে সামনে এগিয়ে নেওয়ার।”

তিনি আরও জানান, দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এ সপ্তাহেই যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদ আল-শিবানির সঙ্গে বৈঠক করবেন। শিবানি এক বিবৃতিতে বলেন, “এটি আমাদের জনগণের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় পরিবর্তন। পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও আস্থার ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতে আমরা প্রস্তুত।”

প্রসঙ্গত, ২০১১ সাল থেকে চলমান সিরিয়া সংকটে ইসরায়েল গোলান মালভূমি সংলগ্ন সিরিয়ার কিছু অংশ দখল করে রেখেছে এবং সেসব এলাকায় নিয়মিত বিমান হামলা চালিয়ে আসছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে সিরিয়া শান্তিপূর্ণ সমাধানে আগ্রহ প্রকাশ করেছে এবং ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের সংকেতও দিয়েছে।

শারার এক সময় আল কায়েদার সিরিয়া শাখা ‘নুসরা ফ্রন্ট’–এর নেতা ছিলেন এবং ইরাকে মার্কিন কারাগারে পাঁচ বছর বন্দী ছিলেন। তবে ২০১৬ সালে তিনি উগ্রপন্থা থেকে সরে আসেন এবং ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে নুসরা ফ্রন্ট আনুষ্ঠানিকভাবে বিলুপ্ত হয়। বর্তমানে তিনি সিরিয়ার পুনর্গঠনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

জাতিসংঘ এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে। সংস্থার মুখপাত্র স্তেফান দুজারিক বলেন, “সিরিয়ায় মানুষের জীবনমান উন্নয়নে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।