রেল যোগাযোগের উন্নয়ন: যমুনা রেলসেতুর উদ্বোধন আজ
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে যমুনা নদীর ওপর নির্মিত দেশের দীর্ঘতম ‘যমুনা রেলসেতু’ আজ, ১৮ মার্চ, উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। এর ফলে ঢাকার সঙ্গে উত্তর এবং দক্ষিণবঙ্গের রেল যোগাযোগ আরও সহজ হবে।
উদ্বোধন উপলক্ষে রেলপথ বিভাগ সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম। অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে, যমুনা রেলসেতু পূর্ব ইব্রাহিমাবাদ স্টেশন থেকে বেলা ১১টা ২০ মিনিটে উদ্বোধনী ট্রেন সিরাজগঞ্জ পশ্চিম প্রান্তের সায়েদাবাদ রেল স্টেশন পর্যন্ত যাবে। সেখানে বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে এবং পরে দুপুর ১২টায় ফেরত আসবে।
সেতুর মাধ্যমে ট্রেন ১২০ কিলোমিটার গতিতে চলাচল করতে পারবে, তবে উদ্বোধনের দিন থেকে প্রথম পর্যায়ে ৯০ কিলোমিটার গতিতে চলবে, যা সাড়ে ৩ মিনিটের মধ্যে সেতু পারাপার করবে। পূর্বে যমুনা সেতু দিয়ে ট্রেন পার হতে ২০ মিনিট লাগতো।
২০১৬ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পের নকশা প্রণয়ন করা হয় এবং সেতুর নির্মাণ ব্যয় প্রথমে ৯,৭৩৪ কোটি ৭ লাখ টাকা ধরা হয়েছিল। পরবর্তীতে প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে ১৬,৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকা হয়, যার মধ্যে ২৭.৬০% দেশীয় অর্থায়ন এবং ৭২.৪০% জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) ঋণ দিয়েছে।
১৯৯৮ সালে যমুনা বহুমুখী সেতু চালু হওয়ার পর ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ স্থাপিত হয়। ২০০৮ সালে সেতুটিতে ফাটল দেখা দিলে ট্রেনের গতি কমানো হয়। এই সমস্যা সমাধানে সরকার যমুনা নদীর ওপর আলাদা রেল সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়।
২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়ালি সেতুর নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন, এবং ২০২১ সালের মার্চে পিলার নির্মাণের জন্য পাইলিং কাজ শুরু হয়। ৪.৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই রেল সেতু দেশের দীর্ঘতম প্রথম ডাবল ট্রাকের ডুয়েল গেজ সেতু, যা ৫০টি পিলারের ওপর ৪৯টি স্প্যান নিয়ে নির্মিত হয়েছে।