ব্যাংক খালি, রিজার্ভ ঝুঁকিতে: টাকা ছাপিয়েও সামাল দেওয়া কঠিন: পরিকল্পনা উপদেষ্টা
টাকা ছাপিয়েও দেশের ব্যাংক খাতে সঙ্কট সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। তিনি বলেন, ব্যাংকগুলোকে টিকিয়ে রাখতে বিপুল অর্থ ছাপানো হচ্ছে, তবু সংকট কাটছে না।
সোমবার (২৪ মার্চ) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে ডেভেলপমেন্ট জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ (ডিজেএফবি) আয়োজিত ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. ওয়াহিদউদ্দিন বলেন, “ব্যাংকগুলোর অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, সরকার টাকা ছাপিয়েও পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছে না। বিদেশে অর্থ পাচার ও নিয়ন্ত্রণহীন খরচের কারণে রিজার্ভের ওপরও চাপ পড়ছে।”
তিনি আরও বলেন, “বর্তমানে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহ হারাচ্ছেন। তবে আশার কথা, রপ্তানি আয় কিছুটা বেড়েছে এবং প্রবাসী আয়ও উর্ধ্বমুখী। হুন্ডি ব্যবসা কমায় বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে, যা অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক।”
দেশের অভ্যন্তরীণ বাজার নিয়েও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। বলেন, “পণ্যের দাম কিছুটা কমেছে, যা সাধারণ মানুষের জন্য স্বস্তির বার্তা। তবে দীর্ঘমেয়াদে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে হলে পরিকল্পনা কমিশনসহ অর্থনৈতিক খাতগুলোতে আরও স্বচ্ছতা আনতে হবে।”
তিনি উল্লেখ করেন, “যত বেশি অনিয়ম প্রকাশ্যে আসবে, ততই জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা বাড়বে। আগের সরকার যেভাবে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছিল, তাতে অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়ার উপক্রম হয়েছিল। ব্যাংকগুলো খালি হয়ে বন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল।”
ইফতার মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন ডিজেএফবির সভাপতি হামিদ-উজ-জামান এবং সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আবু হেনা মুহিব।
বিশ্লেষকদের মতে, ড. মাহমুদের বক্তব্য থেকে স্পষ্ট যে, কাগজে ছাপানো টাকা দিয়ে দীর্ঘমেয়াদে অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা সম্ভব নয়। কাঠামোগত সংস্কার ছাড়া সামনে কঠিন সময় অপেক্ষা করছে বাংলাদেশের ব্যাংক খাত ও অর্থনীতির জন্য।