ঢাকা ০৭:৩১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৫ জুন ২০২৫, ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য প্রসারিত, ভারতে রপ্তানি ঊর্ধ্বমুখী, আমদানি কমছে

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১০:৫০:০০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / 70

ছবি সংগৃহীত

 

দক্ষিণ এশিয়ার দুই পরাশক্তি ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক বরাবরই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। ভূ-রাজনৈতিক টানাপোড়েন, ঐতিহাসিক যুদ্ধ, আর বাণিজ্যের ওঠানামার প্রভাব বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও কম-বেশি পড়ে। বিশেষ করে, সদ্য বিদায়ী আওয়ামী লীগ সরকারের ভারতঘেঁষা নীতির সমালোচনা করে অনেকে বলছেন, এর ফলে বাংলাদেশ প্রকৃত বাণিজ্যিক সুবিধা নিতে পারেনি।

তবে সরকার বদলের পর দৃশ্যপট কিছুটা পাল্টেছে। পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের পাশাপাশি বাণিজ্যের গতিও বেড়েছে, আর ভারতের বাজারেও নতুন বাস্তবতা তৈরি হয়েছে।

ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যের চিত্র

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য অনুসারে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ ভারত থেকে ৩.২১ কোটি মেট্রিক টন পণ্য আমদানি করেছিল, যার মূল্য ছিল ১,১৬,৬৩৩ কোটি টাকা। কিন্তু ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে আমদানির পরিমাণ কমে ২.৭১ কোটি মেট্রিক টনে দাঁড়ালেও ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১,১৮,০৯৩ কোটি টাকা।

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে আমদানি আরও কমে দাঁড়িয়েছে ১.২৪ কোটি মেট্রিক টনে, যার মূল্য ৬৬,১৬০ কোটি টাকা। তবে ইতিবাচক দিক হলো, ভারতে বাংলাদেশের রপ্তানি কিছুটা বেড়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১৭,৬৫৯ কোটি টাকার পণ্য রপ্তানির পর, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রপ্তানির পরিমাণ প্রায় একই থেকে ১৭,৪২৫ কোটি টাকা হয়। চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে রপ্তানি দাঁড়িয়েছে ১১,৫৭৭ কোটি টাকা।

পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্যের চিত্র

দীর্ঘদিনের বৈরিতা ভুলে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। এর ফলে দেশটির সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি দুটোই বেড়েছে।

২০২২-২৩ অর্থবছরে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ ১২.৯৪ লাখ মেট্রিক টন পণ্য আমদানি করেছিল, যার মূল্য ছিল ৭,৯২৪ কোটি টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আমদানি বেড়ে ১৯.৩১ লাখ মেট্রিক টনে পৌঁছায়, যার মূল্য ছিল ৯,১২৯ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসেই আমদানি দাঁড়িয়েছে ১০.৮১ লাখ মেট্রিক টনে, যার বিপরীতে পরিশোধ করা হয়েছে ৫,৩৫৬ কোটি টাকা।

বাংলাদেশের রপ্তানিও ধীরে ধীরে বাড়ছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে পাকিস্তানে রপ্তানি হয়েছিল ৮৩১ কোটি টাকা, যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরে কিছুটা কমে ৬৮৮ কোটিতে নেমেছিল। তবে চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসেই রপ্তানি বেড়ে হয়েছে ৪৭৫ কোটি টাকা।

ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্যে সাম্প্রতিক পরিবর্তন বাংলাদেশের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করছে। ভারসাম্যপূর্ণ নীতির মাধ্যমে বাংলাদেশ যদি সঠিক কৌশল নেয়, তবে উভয় দেশের বাজারেই নিজের অবস্থান আরও শক্তিশালী করতে পারবে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য প্রসারিত, ভারতে রপ্তানি ঊর্ধ্বমুখী, আমদানি কমছে

আপডেট সময় ১০:৫০:০০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

 

দক্ষিণ এশিয়ার দুই পরাশক্তি ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক বরাবরই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। ভূ-রাজনৈতিক টানাপোড়েন, ঐতিহাসিক যুদ্ধ, আর বাণিজ্যের ওঠানামার প্রভাব বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও কম-বেশি পড়ে। বিশেষ করে, সদ্য বিদায়ী আওয়ামী লীগ সরকারের ভারতঘেঁষা নীতির সমালোচনা করে অনেকে বলছেন, এর ফলে বাংলাদেশ প্রকৃত বাণিজ্যিক সুবিধা নিতে পারেনি।

তবে সরকার বদলের পর দৃশ্যপট কিছুটা পাল্টেছে। পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের পাশাপাশি বাণিজ্যের গতিও বেড়েছে, আর ভারতের বাজারেও নতুন বাস্তবতা তৈরি হয়েছে।

ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যের চিত্র

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য অনুসারে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ ভারত থেকে ৩.২১ কোটি মেট্রিক টন পণ্য আমদানি করেছিল, যার মূল্য ছিল ১,১৬,৬৩৩ কোটি টাকা। কিন্তু ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে আমদানির পরিমাণ কমে ২.৭১ কোটি মেট্রিক টনে দাঁড়ালেও ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১,১৮,০৯৩ কোটি টাকা।

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে আমদানি আরও কমে দাঁড়িয়েছে ১.২৪ কোটি মেট্রিক টনে, যার মূল্য ৬৬,১৬০ কোটি টাকা। তবে ইতিবাচক দিক হলো, ভারতে বাংলাদেশের রপ্তানি কিছুটা বেড়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১৭,৬৫৯ কোটি টাকার পণ্য রপ্তানির পর, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রপ্তানির পরিমাণ প্রায় একই থেকে ১৭,৪২৫ কোটি টাকা হয়। চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে রপ্তানি দাঁড়িয়েছে ১১,৫৭৭ কোটি টাকা।

পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্যের চিত্র

দীর্ঘদিনের বৈরিতা ভুলে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। এর ফলে দেশটির সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি দুটোই বেড়েছে।

২০২২-২৩ অর্থবছরে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ ১২.৯৪ লাখ মেট্রিক টন পণ্য আমদানি করেছিল, যার মূল্য ছিল ৭,৯২৪ কোটি টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আমদানি বেড়ে ১৯.৩১ লাখ মেট্রিক টনে পৌঁছায়, যার মূল্য ছিল ৯,১২৯ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসেই আমদানি দাঁড়িয়েছে ১০.৮১ লাখ মেট্রিক টনে, যার বিপরীতে পরিশোধ করা হয়েছে ৫,৩৫৬ কোটি টাকা।

বাংলাদেশের রপ্তানিও ধীরে ধীরে বাড়ছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে পাকিস্তানে রপ্তানি হয়েছিল ৮৩১ কোটি টাকা, যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরে কিছুটা কমে ৬৮৮ কোটিতে নেমেছিল। তবে চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসেই রপ্তানি বেড়ে হয়েছে ৪৭৫ কোটি টাকা।

ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্যে সাম্প্রতিক পরিবর্তন বাংলাদেশের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করছে। ভারসাম্যপূর্ণ নীতির মাধ্যমে বাংলাদেশ যদি সঠিক কৌশল নেয়, তবে উভয় দেশের বাজারেই নিজের অবস্থান আরও শক্তিশালী করতে পারবে।