টেকনাফ সীমান্তের আলোচিত মানবপাচারকারী আবদুল আলী গ্রেপ্তার

- আপডেট সময় ০৫:০৮:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ মে ২০২৫
- / 4
কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তে দীর্ঘদিন ধরে আলোচিত মানবপাচারকারী এবং স্থানীয় বিএনপি নেতা আবদুল আলী (৫২) অবশেষে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন। রবিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে টেকনাফ পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইসলামাবাদ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে টেকনাফ থানা পুলিশ।
টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন গণমাধ্যমকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গ্রেপ্তার হওয়া আবদুল আলী বাহারছড়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের জুম্মা পাড়ার বাসিন্দা (নোয়াখালী পাড়া) এবং মৃত নওশেদ আলীর ছেলে। মানবপাচারের মামলায় এজাহারভুক্ত পলাতক আসামি ছিলেন তিনি।
আবদুল আলীর বিরুদ্ধে টেকনাফ থানায় ৯টি মামলাসহ মোট ১৫টি মামলা রয়েছে, যার বেশিরভাগই মানবপাচার ও অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে রয়েছে ইয়াবা পাচারের অভিযোগও।
গত এপ্রিল কালের কণ্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে ‘টেকনাফ সীমান্তে মানবপাচারের ১৫ চক্র মাঝি থেকে পাচারকারী আবদুল’ শিরোনামে আবদুল আলীর মানবপাচার চক্র এবং অপহরণ বাণিজ্য নিয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনে তার নৌকাজীবন থেকে অপরাধ জগতে পা রাখার নানা দিক তুলে ধরা হয়।
সূত্র জানায়, একসময় সাগরে মাছ ধরার নৌকায় জেলে হিসেবে কাজ করতেন আবদুল আলী। সেখান থেকেই ধীরে ধীরে মানবপাচারে জড়িয়ে পড়েন। পরবর্তীতে বাহারছড়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি হিসেবে এলাকায় দাপটের সঙ্গে অপরাধ জগত পরিচালনা করতে থাকেন।
তার নিজ গ্রাম জুম্মা পাড়ার পাহাড়ের পাদদেশে রয়েছে একটি বিশাল আস্তানা, যেখানে রয়েছে একাধিক গুদামঘর। এসব ঘরে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতারণার মাধ্যমে মানুষ এনে আটকে রাখা হতো এবং নির্যাতনের মাধ্যমে আদায় করা হতো মুক্তিপণ। এ পর্যন্ত পুলিশ একাধিকবার এসব বন্দিশালা থেকে লোকজনকে উদ্ধার করেছে।
ওসি আরও জানান, গ্রেপ্তার হওয়া আবদুল আলীকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে আবেদন জানানো হবে। তদন্তের স্বার্থে তাকে ব্যাপকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন বলে জানান তিনি।
মানবপাচার রোধে প্রশাসনের এ ধরনের অভিযান এলাকাবাসীর মাঝে স্বস্তি এনে দিয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, এই চক্রের পেছনে থাকা অন্যান্য প্রভাবশালী সদস্যদেরও দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক।