০৯:১৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫
শিরোনাম :
নিজামী-মীর কাসেম-সালাউদ্দিন কাদেরকে মিথ্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে: মির্জা ফখরুল ২০২৩ সাল থেকে ইসরায়েলের যুদ্ধের খরচ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫৯ থেকে ৬৭ বিলিয়ন ডলার। মার্কিন সেনা ও সিআইএ এজেন্টদের বহিষ্কারের চিন্তা কলম্বিয়া প্রেসিডেন্ট পেত্রোর পেন্টাগনের বড় চুক্তি পেল ট্রাম্পের ছেলের ড্রোন কোম্পানি কেন ট্রাম্প-পুতিনের বুদাপেস্ট বৈঠক বাতিল হলো? হুমকিতে বিশ্বব্যাপী পোলিও টিকাদান কর্মসূচি যুক্তরাষ্ট্রকে ভেনেজুয়েলার হুঁশিয়ারি: “আমাদের হাতে ৫ হাজার রুশ ক্ষেপণাস্ত্র” সিইসির সঙ্গে বিএনপির বৈঠক বঙ্গোপসাগরে সুস্পষ্ট লঘুচাপ, গভীর সমুদ্রে যাত্রা নিষেধ আতলেতিকোর জালে ১৪ মিনিটে ৪ গোল, দাপুটে জয়ে আর্সেনাল

হঠাৎ পানি বৃদ্ধিতে চলনবিলে তলিয়ে গেলো শত কৃষকের সোনালি স্বপ্ন

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১১:৫৬:৪২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১১ জুন ২০২৫
  • / 24

ছবি সংগৃহীত

 

চলনবিল অঞ্চলে হঠাৎ পানি বৃদ্ধিতে তলিয়ে গেছে কৃষকের স্বপ্নের সোনালি ধান। টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে নদ-নদীর পানি হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় সিরাজগঞ্জের তাড়াশ, উল্লাপাড়া ও শাহজাদপুর উপজেলার শত শত হেক্টর জমির কাঁচা-পাকা ধান পানির নিচে চলে গেছে। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা।

কৃষকরা জানান, অসময়ে পানি জমে যাওয়ায় একদিকে যেমন ধান নষ্ট হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে, তেমনি শ্রমিক সংকট ও অতিরিক্ত মজুরির কারণে ধান কাটাও কঠিন হয়ে পড়েছে। এই অবস্থায় লোকসানের আশঙ্কায় প্রহর গুনছেন তারা। তবে কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরি করে প্রণোদনার আওতায় আনার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

তাড়াশ উপজেলার হামকুড়িয়া গ্রামের কৃষক আলতাফ হোসেন জানান, সরিষার পরে ব্রি-২৯ জাতের ধান রোপণ করায় ফসল পাকতে একটু সময় লেগেছে। এরই মাঝে টানা বৃষ্টি ও আগাম বন্যায় তার জমির অধিকাংশ ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। তিনি বলেন, ‘১০ বিঘার মধ্যে মাত্র ৫ বিঘার ধান কাটতে পেরেছি। বাকি জমির ধান এখনো পানির নিচে। বিঘা প্রতি সাত-আট হাজার টাকা মজুরি দিয়েও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না।’

একই হতাশা প্রকাশ করেছেন কৃষক আশরাফ। তিনি বলেন, ‘ঋণ করে ধান চাষ করেছিলাম। কিন্তু ফসল উঠানোর আগেই সব পানিতে তলিয়ে গেছে। এখন কাটাও যাচ্ছে না। কীভাবে পরিবার চালাবো, বুঝতে পারছি না।’

তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, চলনবিল অঞ্চলে প্রায় ৯৩ ভাগ বোরো ধান ইতোমধ্যে কাটা হয়ে গেছে। তবে হঠাৎ পানি প্রবেশ করায় বিলের নিচু এলাকাগুলোতে কিছু নাবি জাতের ধান কাটতে সমস্যা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ‘আশা করছি আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে অবশিষ্ট ধানও কাটা শেষ হবে।’

এদিকে কৃষকদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, শুধু তাড়াশ ও শাহজাদপুর এলাকায় প্রায় ১১৩ হেক্টর জমির ধান পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নাটোরের সিংড়া ও গুরুদাসপুর এলাকায়ও ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে।

চলনবিল অঞ্চলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের এই হঠাৎ আঘাতে কৃষকের কষ্টের ফসল বিপন্ন হয়ে পড়েছে। এখন কৃষকের একমাত্র ভরসা সরকারি সহায়তা ও সময়মতো প্রণোদনার ব্যবস্থা।

নিউজটি শেয়ার করুন

হঠাৎ পানি বৃদ্ধিতে চলনবিলে তলিয়ে গেলো শত কৃষকের সোনালি স্বপ্ন

আপডেট সময় ১১:৫৬:৪২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১১ জুন ২০২৫

 

চলনবিল অঞ্চলে হঠাৎ পানি বৃদ্ধিতে তলিয়ে গেছে কৃষকের স্বপ্নের সোনালি ধান। টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে নদ-নদীর পানি হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় সিরাজগঞ্জের তাড়াশ, উল্লাপাড়া ও শাহজাদপুর উপজেলার শত শত হেক্টর জমির কাঁচা-পাকা ধান পানির নিচে চলে গেছে। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা।

কৃষকরা জানান, অসময়ে পানি জমে যাওয়ায় একদিকে যেমন ধান নষ্ট হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে, তেমনি শ্রমিক সংকট ও অতিরিক্ত মজুরির কারণে ধান কাটাও কঠিন হয়ে পড়েছে। এই অবস্থায় লোকসানের আশঙ্কায় প্রহর গুনছেন তারা। তবে কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরি করে প্রণোদনার আওতায় আনার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

তাড়াশ উপজেলার হামকুড়িয়া গ্রামের কৃষক আলতাফ হোসেন জানান, সরিষার পরে ব্রি-২৯ জাতের ধান রোপণ করায় ফসল পাকতে একটু সময় লেগেছে। এরই মাঝে টানা বৃষ্টি ও আগাম বন্যায় তার জমির অধিকাংশ ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। তিনি বলেন, ‘১০ বিঘার মধ্যে মাত্র ৫ বিঘার ধান কাটতে পেরেছি। বাকি জমির ধান এখনো পানির নিচে। বিঘা প্রতি সাত-আট হাজার টাকা মজুরি দিয়েও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না।’

একই হতাশা প্রকাশ করেছেন কৃষক আশরাফ। তিনি বলেন, ‘ঋণ করে ধান চাষ করেছিলাম। কিন্তু ফসল উঠানোর আগেই সব পানিতে তলিয়ে গেছে। এখন কাটাও যাচ্ছে না। কীভাবে পরিবার চালাবো, বুঝতে পারছি না।’

তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, চলনবিল অঞ্চলে প্রায় ৯৩ ভাগ বোরো ধান ইতোমধ্যে কাটা হয়ে গেছে। তবে হঠাৎ পানি প্রবেশ করায় বিলের নিচু এলাকাগুলোতে কিছু নাবি জাতের ধান কাটতে সমস্যা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ‘আশা করছি আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে অবশিষ্ট ধানও কাটা শেষ হবে।’

এদিকে কৃষকদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, শুধু তাড়াশ ও শাহজাদপুর এলাকায় প্রায় ১১৩ হেক্টর জমির ধান পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নাটোরের সিংড়া ও গুরুদাসপুর এলাকায়ও ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে।

চলনবিল অঞ্চলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের এই হঠাৎ আঘাতে কৃষকের কষ্টের ফসল বিপন্ন হয়ে পড়েছে। এখন কৃষকের একমাত্র ভরসা সরকারি সহায়তা ও সময়মতো প্রণোদনার ব্যবস্থা।