ঝালকাঠির পতিত জমিতে তুলা চাষে সাফল্য, গাবখান অঞ্চলে কৃষিতে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার

- আপডেট সময় ০৩:৫৫:৫৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫
- / 52
ঝালকাঠির গাবখান নদীর তীরে পরিত্যক্ত জমিতে তুলা চাষ করে ভাগ্য বদলে দিচ্ছেন একদল উদ্যোমী কৃষক। একসময় যেখানে জঙ্গল ছাওয়া জমি পড়ে ছিল অব্যবহৃত, এখন সেই জমিতেই দুলছে তুলার শুভ্র সাদা ফুল। ‘বাংলার সুয়েজ খাল’ খ্যাত গাবখান নদীর পাশে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পরিত্যক্ত ৮ বিঘা জমিতে ১৫ বছর ধরে চলছে তুলা চাষ, যার পেছনে রয়েছে যশোর তুলা উন্নয়ন বোর্ডের নিরলস সহায়তা।
পঞ্চম চীন-মৈত্রী সেতুর পাশের রূপসিয়া গ্রাম থেকে শুরু করে গাবখান হয়ে শেখেরহাট পর্যন্ত বিস্তৃত এ কৃষিভূমি এখন পরিচিতি পেয়েছে সফল চাষাবাদের উদাহরণ হিসেবে। এখানে শুধু তুলা নয়, পেয়ারা, মাল্টা, বরই, কলা ও সৌদি খেজুরসহ নানা ফলের চাষও হচ্ছে। কৃষকদের পাশে রয়েছে জেলা কৃষি বিভাগ।
২০১১ সালে রুপালি-১ ও হোয়াইট গোল্ড জাতের তুলা দিয়ে শুরু হয় পরীক্ষামূলক চাষ। সময়ের সঙ্গে সফলতা মুঠোবন্দি করে এখন এই চাষই হয়ে উঠেছে জীবিকা ও স্বপ্ন গড়ার হাতিয়ার। বীজ রোপণের ৫৫-৬০ দিনের মাথায় গাছে ফুল ধরে, চৈত্র-বৈশাখে সংগ্রহ করা হয় তুলা। প্রতি একরে ১০-১৫ মণ পর্যন্ত ফলন মিলছে।
চাষিরা বলছেন, মাঠ থেকেই মিল মালিকরা তুলা কিনে নেওয়ায় লাভও হচ্ছে ভালো। স্থানীয় বেকার, নারী ও বয়স্কদের জন্য এ তুলা ক্ষেতই এখন কর্মসংস্থানের জায়গা। কেউ সংগ্রহ করছেন কেজি ধরে, কেউ কাজ করছেন দৈনিক মজুরিতে। লাল মিয়া ও হেনারা বেগমের মতো অনেকেই জানান, তুলার কাজ না থাকলে সংসার চালানোই কঠিন হতো।
উদ্যোক্তা আব্দুল হালিম জানান, ‘পরিস্থিতির সঙ্গে লড়াই করেই ১৫ বছর ধরে তুলা চাষ করে যাচ্ছি। শুধু তুলা নয়, এর বীজ থেকেও তৈল ও খৈড় তৈরি করে বাড়তি আয় হচ্ছে।’
তুলা উন্নয়ন কর্মকর্তা এস.এম. জাকির বিন আলম বলেন, ‘এখানকার তুলা যশোরের একটি প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানায় নিয়ে যাওয়া হয়। ঝালকাঠির পতিত জমিগুলো তুলা চাষে ব্যবহৃত হলে স্থানীয় কৃষকের জীবন বদলে যেতে পারে।’
গাবখানের তুলা এখন শুধু সাদা সুতোর উৎস নয়, এটি হয়ে উঠেছে শত মানুষকে স্বপ্ন দেখার সাহস জোগানো এক সম্ভাবনার গল্প।