পোশাক খাতে গত আট মাসে দেশের রপ্তানি আয় হয়েছে ২৬.৭৯ বিলিয়ন ডলার, অর্থনীতিতে নতুন দিগন্ত
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প বিশ্ববাজারে ধারাবাহিক সাফল্যের পথ ধরে এগিয়ে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধির পর এবার ইউরোপ ও অন্যান্য বাজারেও রপ্তানি আয় বেড়েছে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ২৬.৭৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ১০.৬৪ শতাংশ বেশি।
বিশ্বের অন্যতম প্রধান বাজার ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩.৪২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে, যা মোট রপ্তানির ৫০.১০ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি আয় হয়েছে ৫.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (১৮.৯১ শতাংশ), যুক্তরাজ্যে ২.৯৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (১০.৯৪ শতাংশ) এবং কানাডায় ৮৪৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (৩.১৬ শতাংশ)।
বিশেষত, জার্মানি, স্পেন, ফ্রান্স, ইতালি ও নেদারল্যান্ডসের বাজারে বাংলাদেশি পোশাকের চাহিদা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। জার্মানিতে রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ৩.৩৮ বিলিয়ন ডলার, স্পেনে ২.৩৫ বিলিয়ন, ফ্রান্সে ১.৪৩ বিলিয়ন, ইতালিতে ১.৫ বিলিয়ন এবং নেদারল্যান্ডসে ১.৪৩ বিলিয়ন ডলার।
তবে প্রচলিত বাজারের তুলনায় নতুন বা অপ্রচলিত বাজারে প্রবৃদ্ধির হার কিছুটা কম। এই সময়ে নতুন বাজারে রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ৪.৫২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা মোট রপ্তানির ১৬.৯০ শতাংশ। জাপানে রপ্তানি হয়েছে ৮৩৯ মিলিয়ন, অস্ট্রেলিয়ায় ৫৮২ মিলিয়ন এবং ভারতে ৪৭৮ মিলিয়ন ডলার। তুরস্ক ও মেক্সিকোতেও রপ্তানি বেড়েছে, তবে রাশিয়া, কোরিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মালয়েশিয়ায় রপ্তানি কমেছে।
বিজিএমইএ’র সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, “বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের অবস্থান আরও শক্তিশালী হচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চীন ও মেক্সিকোর ওপর শুল্ক নীতি পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশ সুবিধা পাচ্ছে। নতুন বাজারেও সম্ভাবনা রয়েছে, তবে প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বাড়াতে হবে।”
বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যিক পরিবর্তনের সুযোগ কাজে লাগিয়ে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, প্রযুক্তির উন্নয়ন এবং নতুন বাজারে প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করা জরুরি। বাংলাদেশ যদি এই দিকগুলোতে নজর দেয়, তবে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে আরও বড় সাফল্য অর্জন করা সম্ভব হবে।