পুরনো খেলায় নতুন প্লেয়ার না, নিয়মই বদলাতে এসেছি”: নাহিদ ইসলাম

- আপডেট সময় ০৬:০৫:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ জুলাই ২০২৫
- / 3
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, “গণ-অভ্যুত্থানের পর আমরা বারবার বলেছি নতুন বাংলাদেশ দরকার, নতুন সিস্টেম দরকার। আমরা পুরনো খেলায় অংশ নেব না, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের রাজনীতি থেকে দূরে থাকব। পুরনো খেলায় নতুন প্লেয়ার হতে আসিনি, খেলার নিয়মটাই বদলাতে এসেছি।”
শনিবার দুপুর দেড়টার দিকে বগুড়া শহরের সাতমাথায় মুক্তমঞ্চে জুলাই পদযাত্রা শেষে এক পথসভায় তিনি এ কথা বলেন। নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, “জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে টালবাহানা হচ্ছে। এটি অবশ্যই সংবিধানে যুক্ত হবে। এটা কোনো আবেগের বিষয় নয়, আগামী বাংলাদেশের দিকনির্দেশনা জুলাই ঘোষণাপত্রই নির্ধারণ করবে।”
আওয়ামী লীগের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, “মুজিববাদীরা পলাতক, তারা ভারতে পালিয়ে গেছে। এরা কোনো বাংলাদেশের দল নয়, ভারতীয় পার্টি ছিল। গণ-অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশ আর কোনো বিদেশি ইশারায় চলবে না। দেশের রাজনীতি, নির্বাচন—সবই ঠিক করবে এ দেশের জনগণ।”
নাহিদ ইসলাম জানান, আগামী ৩ আগস্ট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নতুন বাংলাদেশের শপথ হবে এবং ঘোষণা করা হবে জুলাই ঘোষণাপত্র।
বগুড়ার প্রতি আওয়ামী লীগের ১৬ বছরের শাসনকালে বৈষম্যের অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, “বগুড়ার নাম শুনলেই চাকরি দেওয়া হতো না, সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হতো, বরং মিথ্যা মামলায় হয়রানি করা হয়েছে। অথচ বগুড়া ছিল বাংলার রাজধানী, পুণ্ড্র সভ্যতার সূতিকাগার, শিক্ষা-সংস্কৃতির প্রাণকেন্দ্র। সেই গৌরব ফেরাতে আমরা বদ্ধপরিকর।”
তিনি জোর দিয়ে বলেন, এনসিপি কোনো বৈষম্য চায় না এবং বগুড়াবাসীর ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে লড়াই চালিয়ে যাবে। প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি, বলেন, “বগুড়ায় দলবাজ প্রশাসন ও পুলিশের কোনো স্থান হবে না। প্রশাসন, পুলিশ ও আদালতকে নিরপেক্ষ থাকতে হবে। কেউ যদি ২০১৮ সালের মতো ভোট ডাকাতির ঘটনা ঘটায়, তার পরিণতিও হবে একই রকম।”
এ সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসাইন, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, তাসনিম জারা, সামান্তা শারমিন, নাহিদা সারওয়ার ও সাকিব মাহদী।
পথসভায় স্থানীয় সাধারণ মানুষের উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মতো। কেউ এসেছেন কৌতূহলবশে, কেউবা বক্তব্য শুনতে। কাহালুর কৃষক ইউনুস আলী বলেন, “মোবাইলে শুনতাম, এবার সরাসরি দেখতে এলাম।”
মালগ্রামের নজরুল ইসলাম বলেন, “জুলাই আন্দোলন থেকে তরুণদের সক্রিয়তা দেখেই এনসিপিতে যুক্ত হয়েছি। তবে এই দল যেন বিতর্কিত রাজনীতিতে না জড়ায়, সেদিকেও সজাগ থাকতে হবে।”