শেরপুরের কাটাবাড়ী সীমান্তে বিদ্যুৎস্পর্শে বন্য হাতির মৃত্যু, উদ্বিগ্ন পরিবেশকর্মীরা

- আপডেট সময় ০১:৫৭:৫৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ জুলাই ২০২৫
- / 4
শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার কাটাবাড়ী সীমান্তে বৈদ্যুতিক শক লেগে মারা গেছে একটি বন্য হাতি। শনিবার সকালে স্থানীয়দের খবরের ভিত্তিতে বন বিভাগের মধুটিলা রেঞ্জ ও এলিফেন্ট রেসপন্স টিম (ইআরটি) ঘটনাস্থলে পৌঁছে হাতিটির মরদেহ উদ্ধার করে।
বন বিভাগের মধুটিলা রেঞ্জ কর্মকর্তা দেওয়ান আলী জানান, নিহত হাতিটির বয়স আনুমানিক ১৫ থেকে ২০ বছর এবং এটি একটি মাদি হাতি। তার শুঁড়ে পুড়ে যাওয়ার দাগ স্পষ্ট, যা বিদ্যুৎস্পর্শে মৃত্যুর প্রমাণ বহন করে। তিনি বলেন, ‘পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, পাহাড় থেকে খাবারের সন্ধানে নামা হাতিটি বৈদ্যুতিক ফাঁদে আটকা পড়ে মারা যায়। যদিও এলাকায় বৈদ্যুতিক ফাঁদের উপস্থিতি দেখা যায়নি, তবে আশপাশের বসতবাড়িতে বিদ্যুতের সংযোগ রয়েছে বলে জানা গেছে।
সম্প্রতি মধুটিলা রেঞ্জ এলাকায় বন্য হাতির লোকালয়ে ঢুকে পড়ার ঘটনা বেড়েছে। ফসলের মাঠ খালি থাকায় হাতির দল প্রায়ই গ্রামে ঢুকে পড়ছে, এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও আতঙ্ক ছড়াচ্ছে স্থানীয়দের মধ্যে।
পরিবেশকর্মীরা জানান, গত চার মাসে মধুটিলা রেঞ্জ এলাকায় এটি নিয়ে তিনটি বন্য হাতির মৃত্যু ঘটেছে। এর আগে গত ২০ মার্চ পূর্ব সমশ্চুড়া এবং ২৯ মে দাওধারা পাহাড় এলাকায় আরও দুটি হাতির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল।
এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পরিবেশকর্মী নিধারঞ্জন কোচ। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, ‘আবারও বন্য হাতির মৃত্যু। এর শেষ কোথায়? হাতি-মানুষের দ্বন্দ্ব নিরসনে সরকার কী করছে? ক্ষতিপূরণই কি যথেষ্ট? সহাবস্থানের পথ খুঁজতে খুঁজতে এশিয়ান হাতি হারিয়ে যাবে!’
স্থানীয় বাসিন্দারাও দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন। তাদের মতে, হাতি-মানুষের সংঘাত বন্ধ করতে টেকসই সমাধান না হলে একদিকে যেমন মানুষের ক্ষতি হবে, তেমনি বিলুপ্তির ঝুঁকিতে পড়বে মহামূল্যবান এই বন্যপ্রাণী।
পরিবেশ সচেতন মহলের প্রশ্ন, বন ও বিদ্যুৎ বিভাগ সমন্বিত পরিকল্পনা নিলে কি এই মৃত্যুগুলো রোধ করা যেত না? বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে দায়িত্বশীল ভূমিকা এবং মানুষের জীবিকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এখনই যথাযথ পদক্ষেপ প্রয়োজন বলে মনে করছেন সবাই।