ঢাকা ০৩:০৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫, ২১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
ইসলাম ব্যবসার ক্ষেত্রে অতিমুনাফাকে সমর্থন করে না: পরিবেশ উপদেষ্টা করাচিতে পাঁচতলা ভবন ধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৪, উদ্ধার অভিযান অব্যাহত নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগকে সহযোগিতা করাও অপরাধের শামিল : অ্যাটর্নি জেনারেল রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ দুই বছর বাড়ল, উৎপাদন শুরু নিয়ে অনিশ্চয়তা ভারতের উত্তর প্রদেশে বিয়ের গাড়ি দুর্ঘটনা, বরসহ নিহত একই পরিবারের ৮ জন শেরপুরের কাটাবাড়ী সীমান্তে বিদ্যুৎস্পর্শে বন্য হাতির মৃত্যু, উদ্বিগ্ন পরিবেশকর্মীরা নওগাঁর রায়হান আলম: আমচাষে নবজাগরণ ঘটানো এক সাহসী কৃষক গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি হতে পারে আগামী সপ্তাহেই : ট্রাম্প কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদের ডোনেশন ওয়েবসাইট উদ্বোধন কুমিল্লার মুরাদনগরে ট্রিপল মার্ডার: দুই দিন পর মামলা দায়ের, গ্রেপ্তার ২ জন

তিস্তার চরাঞ্চলে মিষ্টি কুমড়ার বাম্পার ফলন, দাম পেয়ে খুশি কৃষকরা

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০১:১৭:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ মে ২০২৫
  • / 23

ছবি সংগৃহীত

 

তিস্তার বুকজুড়ে জেগে ওঠা চরাঞ্চলে এবার মিষ্টি কুমড়ার বাম্পার ফলন হয়েছে। চাষিরা বলছেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলন আশানুরূপ হয়েছে, দাম পেয়ে খুশি তিস্তাপাড়ের কৃষকেরা। বিশেষ করে বাজারজাতকরণ ও সংরক্ষণের উপযুক্ত ব্যবস্থা না থাকায় চাষিরা তাদের পরিশ্রমের প্রকৃত মূল্য পাচ্ছেন না।

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর জেলার পাঁচটি উপজেলায় চরাঞ্চল ও সমতলে ১ হাজার ৩২০ হেক্টর জমিতে মিষ্টি কুমড়া চাষ হয়েছে। এসব জমি থেকে প্রতি হেক্টরে ২৫ থেকে ৩০ মেট্রিক টন কুমড়া উৎপাদন হয়েছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, ৮০ শতাংশ কুমড়া উৎপন্ন হয়েছে তিস্তা নদীর বালুচরভূমিতে।

কালীগঞ্জ উপজেলার শৈলমারী চর এলাকার কৃষক আশরাফুল রিফাত বলেন, “আগে এসব জায়গায় কোনো ফসল হতো না। পানি নেমে যাওয়ার পর জমিগুলো পড়ে থাকত। এখন সেখানে কুমড়া ফলাচ্ছি। প্রতি কেজিতে ৬-৭ টাকা খরচ পড়ে। গত বছর ১৭-১৮ টাকা কেজিতে বিক্রি করেছি, আর এ বছর পাচ্ছি ১১-১২ টাকা। আমি এক জমি থেকে ৩ হাজার কেজি কুমড়া তুলেছি, খরচ হয়েছে ১৮ হাজার টাকা। যদি গত বছরের মতো দাম পেতাম, অনেক লাভ হতো।”

সদর উপজেলার কালমাটি চরের কৃষক রজমান মুন্সির কথায়, “আমার ৪ বিঘা জমি থেকে ১২ হাজার ৫০০ কেজি কুমড়া পেয়েছি। তবে কম দামে অর্ধেক কুমড়া বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছি, বাকি অর্ধেক ঘরে রেখেছি। আগে এই জমিতে কিছুই হতো না, এখন ফলন ভালো হচ্ছে।”

চর ভোটমারী এলাকার কৃষক শামসুল আলম জানান, “আমরা ২৫ জন মিলে তিস্তার বালুচরে দল গঠন করে কুমড়া, তরমুজ, বাদাম ও মিষ্টি আলু চাষ করছি। এবার ১ হেক্টর জমিতে ২৪ মেট্রিক টন কুমড়া পেয়েছি। ফলনে খুশি হলেও বাজার ব্যবস্থাপনার অভাবে লাভ কম হচ্ছে।”

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপরিচালক ড. সাইখুল আরিফিন জানান, “এ বছর আলুর দাম কম থাকায় কুমড়ার বাজারও পড়েছে। একসাথে সব চাষি কুমড়া উত্তোলন করায় সরবরাহ বেশি হয়েছে। যত্ন নিয়ে সংরক্ষণ করলে ৬-৭ মাস রাখা যায়, কিন্তু চাষিদের অধিকাংশেরই নগদ টাকার দরকার পড়ে, তাই তারা সংরক্ষণ করতে পারেন না।”

সঠিক বাজার ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণের সুযোগ পেলে চরাঞ্চলের এই সম্ভাবনাময় কুমড়া চাষ আরও লাভজনক হতে পারে এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

তিস্তার চরাঞ্চলে মিষ্টি কুমড়ার বাম্পার ফলন, দাম পেয়ে খুশি কৃষকরা

আপডেট সময় ০১:১৭:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ মে ২০২৫

 

তিস্তার বুকজুড়ে জেগে ওঠা চরাঞ্চলে এবার মিষ্টি কুমড়ার বাম্পার ফলন হয়েছে। চাষিরা বলছেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলন আশানুরূপ হয়েছে, দাম পেয়ে খুশি তিস্তাপাড়ের কৃষকেরা। বিশেষ করে বাজারজাতকরণ ও সংরক্ষণের উপযুক্ত ব্যবস্থা না থাকায় চাষিরা তাদের পরিশ্রমের প্রকৃত মূল্য পাচ্ছেন না।

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর জেলার পাঁচটি উপজেলায় চরাঞ্চল ও সমতলে ১ হাজার ৩২০ হেক্টর জমিতে মিষ্টি কুমড়া চাষ হয়েছে। এসব জমি থেকে প্রতি হেক্টরে ২৫ থেকে ৩০ মেট্রিক টন কুমড়া উৎপাদন হয়েছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, ৮০ শতাংশ কুমড়া উৎপন্ন হয়েছে তিস্তা নদীর বালুচরভূমিতে।

কালীগঞ্জ উপজেলার শৈলমারী চর এলাকার কৃষক আশরাফুল রিফাত বলেন, “আগে এসব জায়গায় কোনো ফসল হতো না। পানি নেমে যাওয়ার পর জমিগুলো পড়ে থাকত। এখন সেখানে কুমড়া ফলাচ্ছি। প্রতি কেজিতে ৬-৭ টাকা খরচ পড়ে। গত বছর ১৭-১৮ টাকা কেজিতে বিক্রি করেছি, আর এ বছর পাচ্ছি ১১-১২ টাকা। আমি এক জমি থেকে ৩ হাজার কেজি কুমড়া তুলেছি, খরচ হয়েছে ১৮ হাজার টাকা। যদি গত বছরের মতো দাম পেতাম, অনেক লাভ হতো।”

সদর উপজেলার কালমাটি চরের কৃষক রজমান মুন্সির কথায়, “আমার ৪ বিঘা জমি থেকে ১২ হাজার ৫০০ কেজি কুমড়া পেয়েছি। তবে কম দামে অর্ধেক কুমড়া বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছি, বাকি অর্ধেক ঘরে রেখেছি। আগে এই জমিতে কিছুই হতো না, এখন ফলন ভালো হচ্ছে।”

চর ভোটমারী এলাকার কৃষক শামসুল আলম জানান, “আমরা ২৫ জন মিলে তিস্তার বালুচরে দল গঠন করে কুমড়া, তরমুজ, বাদাম ও মিষ্টি আলু চাষ করছি। এবার ১ হেক্টর জমিতে ২৪ মেট্রিক টন কুমড়া পেয়েছি। ফলনে খুশি হলেও বাজার ব্যবস্থাপনার অভাবে লাভ কম হচ্ছে।”

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপরিচালক ড. সাইখুল আরিফিন জানান, “এ বছর আলুর দাম কম থাকায় কুমড়ার বাজারও পড়েছে। একসাথে সব চাষি কুমড়া উত্তোলন করায় সরবরাহ বেশি হয়েছে। যত্ন নিয়ে সংরক্ষণ করলে ৬-৭ মাস রাখা যায়, কিন্তু চাষিদের অধিকাংশেরই নগদ টাকার দরকার পড়ে, তাই তারা সংরক্ষণ করতে পারেন না।”

সঠিক বাজার ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণের সুযোগ পেলে চরাঞ্চলের এই সম্ভাবনাময় কুমড়া চাষ আরও লাভজনক হতে পারে এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।