ঢাকা ০৩:১০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
মতিঝিলে বাণিজ্যিক ভবনে আগুন, উদ্ধার তৎপরতা চলছে গাইবান্ধায় বজ্রপাতে এক কৃষকের গরুর মৃত্যু দুর্নীতি কমলে দেশ দ্রুত এগোবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা রিমান্ড শেষে কারাগারে সাবেক এমপি মমতাজ গাজার অধিবাসীদের লিবিয়ায় স্থানান্তরের প্রস্তাব যুক্তরাষ্ট্রের ধানমন্ডির পুরাতন ২৭ নম্বর রোডের নতুন নাম ‘শহীদ ফারহান ফাইয়াজ’ সড়ক পুলিশের বাধার মুখে সচিবালয় অভিমুখে ইশরাক সমর্থকদের লংমার্চ উদ্যোক্তা তৈরির লক্ষ্যে ‘ক্ষুদ্রঋণ ব্যাংক’ গঠনের প্রস্তাব প্রধান উপদেষ্টার কাঁকড়া চাষের মাধ্যমে উপকূলের উন্নয়ন ও বিদেশে হচ্ছে রপ্তানি নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দলের কার্যক্রম ও নাশকতার ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে: ডিএমপি কমিশনার

রিয়াল মাদ্রিদের জার্সির ভার নিতে পারছেন না এমবাপ্পে

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৫:১৫:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫
  • / 22

ছবি সংগৃহীত

 

রিয়াল মাদ্রিদ তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পে ৫০ ম্যাচে ৩৩ গোল! সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এ মৌসুমে রিয়ালের সর্বোচ্চ গোলদাতা তিনি। কিলিয়ান এমবাপ্পে।

কিন্তু তিনি নাকি রিয়াল মাদ্রিদের জার্সির ভার নিতে পারছেন না! কথাটা যিনি বলেছেন তিনিও বিখ্যাত মানুষ। রিয়াল মাদ্রিদেরই একসময়ের কোচ, ইউরোপেরও অন্যতম শ্রদ্ধাভাজন কোচ ফাবিও কাপেলো। কেন বলেছেন কথাটা, সেই ব্যাখ্যাও অবশ্য দিয়েছেন রিয়ালকে দুটি লা লিগা জেতানো ইতালিয়ান এই কোচ।

কাপেলোর চোখে এমবাপ্পের এসব পরিসংখ্যানের কোনো দাম নেই। এমবাপ্পেকে নিয়ে তিনি যে কথা বলেছেন সেটির মর্মার্থ অনেকটাই এমন—রিয়ালের প্রয়োজনের মুহূর্তে জ্বলে উঠতে পারেননি ফরাসি ফরোয়ার্ড। সে কারণে গোলসংখ্যায় পুষ্ট হয়েও মৌসুমের সবচেয়ে বড় দুটি প্রতিযোগিতায় রিয়ালকে শিরোপা জয়ের দৌড়ে সামনে এগিয়ে রাখতে পারেননি এমবাপ্পে।

প্রতি মৌসুমেই চ্যাম্পিয়নস লিগকে পাখির চোখ করে মাঠে নামে রিয়াল। গতবার এই শিরোপা জিতলেও এবার কোয়ার্টার ফাইনালে আর্সেনালের কাছে হেরে বিদায় নিয়েছে রিয়াল। লা লিগা শিরোপা জয়ের দৌড়েও বার্সেলোনার চেয়ে ৪ পয়েন্ট পিছিয়ে আনচেলত্তির দল। দুই দলেরই বাকি ৬টি করে ম্যাচ। বলতে গেলে এ মৌসুমে শুধু কোপা দেল রে জয়েরই ভালো সম্ভাবনা আছে রিয়ালের। আগামী রোববার সেই ফাইনালেও তাদের প্রতিপক্ষ বার্সেলোনা। যাদের কাছে এ মৌসুমে আগের দুটি ক্লাসিকোতেও হেরেছে রিয়াল।

কাপেলো নিজেও দুই মেয়াদে রিয়ালের কোচ ছিলেন। ১৯৯৬-৯৭ ও ২০০৬-৭ মৌসুমে রিয়ালের কোচ হিসেবে লা লিগা জিতেছেন। স্বাভাবিকভাবেই মাদ্রিদের ক্লাবটির পরিবেশ এবং প্রত্যাশার বিষয়ে ইতালিয়ান এই কোচের খুব ভালো জানাশোনা। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই মনে করেন, রিয়ালের জার্সির ওজনটা বহন করতে কষ্ট হচ্ছে এমবাপ্পের। পিএসজি ছেড়ে এমবাপ্পে আসলে কোথায় খেলতে গেছেন, সেটা সম্ভবত তিনি এখনো বুঝতে পারেননি বলেই মনে করেন কাপেলো।

গত রাতে লরিয়াস স্পোর্টস অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে কাপেলো বলেছেন, ‘রিয়াল মাদ্রিদের জার্সির ওজন অনেক বেশি। সম্ভবত সে (এমবাপ্পে) কোথায় খেলতে গেছে, সেটা এখনো ভালোভাবে বুঝে উঠতে পারেনি। সমস্যা হলো সে সেন্টার ফরোয়ার্ড নয়, তাকে এবং ভিনিসিয়ুসকে একসঙ্গে খেলতে হচ্ছে।’

৭৮ বছর বয়সী কাপেলো মনে করেন, মৌসুম বাঁচাতে এবার কোপা দেল রে জিততেই হবে রিয়ালকে, ‘সবাই ভেবেছিল এমবাপ্পে, ভিনিসিয়ুস ও বেলিংহামকে নিয়ে মাদ্রিদ ভালো করবে। সেটা তো হলো না। কিন্তু এ বছর তাদের কাপ জিততেই হবে। কিছু একটা জিততেই হবে।’

গত জানুয়ারিতে স্প্যানিশ সুপার কোপা ফাইনালে বার্সার কাছে ৫–২ গোলে হারে রিয়াল। এ ম্যাচে এমবাপ্পে একটি গোল করলেও বেশ কিছু সুযোগ নষ্ট করেছিলেন। তার আগে গত বছর অক্টোবরে রিয়ালের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে লিগে ৪–০ গোলে হারে স্বাগতিকরা। এমবাপ্পে এ ম্যাচে পুরো সময় খেলেও গোল পাননি। শুধু তা–ই নয়, আর্সেনালের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগ কোয়ার্টার ফাইনালের দুই লেগেও গোল করতে পারেননি এমবাপ্পে। বার্নাব্যুতে অনুষ্ঠিত সেই ফিরতি লেগে রিয়ালের পারফরম্যান্স নিয়ে কাপেলো বলেছেন, ‘সবাই যেমনটা ভেবেছিল, তেমন হয়নি, মাদ্রিদ আসলে মাদ্রিদের মতো খেলেনি। ঘুরে দাঁড়ানোর যেমন ইচ্ছা ও খেলার মান প্রয়োজন, সেটা তাদের খেলায় ছিল না।’

গুরুত্বপূর্ণ এসব ম্যাচে প্রয়োজনের সময়ে গোল না পাওয়ায় রিয়ালও সাফল্যের দেখা পায়নি। এতে চাপ বেড়েছে আনচেলত্তির ওপর। ইতালিয়ান এই কোচ রিয়ালে আর কত দিন থাকবেন, তাঁকে ছাঁটাই করা হবে কি না, মৌসুম শেষ করতে পারবেন কি না—এমন সব আলোচনা চলছে ইউরোপিয়ান ফুটবলে। এমনকি কোনো কোনো সংবাদমাধ্যম আগেভাগেই জানিয়ে দিয়েছে, রিয়ালে আনচেলত্তির জায়গা নিতে যাচ্ছেন জাবি আলোনসো। কাপেলো মনে করেন, এসব আলোচনার মাধ্যমে আনচেলত্তির প্রতি আসলে অবিচার করা হচ্ছে, প্রাপ্য সম্মানটা তাকে দেওয়া হচ্ছে না, ‘আমি একজন আনচেলোতিস্তা (আনচেলত্তির ভক্ত)। আনচেলত্তির সঙ্গে যা করা হয়েছে, সেটা তার প্রতি অবিচার এবং রিয়ালকে তিনি যত শিরোপা জিতিয়েছেন, সেসব বিচারে তার প্রতি অসম্মান।’

রিয়ালের কোচ হিসেবে এটা দ্বিতীয় মেয়াদ চলছে আনচেলত্তির। ২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ক্লাবটির কোচের দায়িত্বে ছিলেন। এরপর ২০২১ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেন। তাঁর অধীনে দুবার লা লিগা, তিনবার চ্যাম্পিয়নস লিগ, দুবার কোপা দেল রে, ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ, স্প্যানিশ সুপার কোপা ও তিনবার উয়েফা সুপার কাপ জিতেছে রিয়াল।

নিউজটি শেয়ার করুন

রিয়াল মাদ্রিদের জার্সির ভার নিতে পারছেন না এমবাপ্পে

আপডেট সময় ০৫:১৫:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫

 

রিয়াল মাদ্রিদ তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পে ৫০ ম্যাচে ৩৩ গোল! সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এ মৌসুমে রিয়ালের সর্বোচ্চ গোলদাতা তিনি। কিলিয়ান এমবাপ্পে।

কিন্তু তিনি নাকি রিয়াল মাদ্রিদের জার্সির ভার নিতে পারছেন না! কথাটা যিনি বলেছেন তিনিও বিখ্যাত মানুষ। রিয়াল মাদ্রিদেরই একসময়ের কোচ, ইউরোপেরও অন্যতম শ্রদ্ধাভাজন কোচ ফাবিও কাপেলো। কেন বলেছেন কথাটা, সেই ব্যাখ্যাও অবশ্য দিয়েছেন রিয়ালকে দুটি লা লিগা জেতানো ইতালিয়ান এই কোচ।

কাপেলোর চোখে এমবাপ্পের এসব পরিসংখ্যানের কোনো দাম নেই। এমবাপ্পেকে নিয়ে তিনি যে কথা বলেছেন সেটির মর্মার্থ অনেকটাই এমন—রিয়ালের প্রয়োজনের মুহূর্তে জ্বলে উঠতে পারেননি ফরাসি ফরোয়ার্ড। সে কারণে গোলসংখ্যায় পুষ্ট হয়েও মৌসুমের সবচেয়ে বড় দুটি প্রতিযোগিতায় রিয়ালকে শিরোপা জয়ের দৌড়ে সামনে এগিয়ে রাখতে পারেননি এমবাপ্পে।

প্রতি মৌসুমেই চ্যাম্পিয়নস লিগকে পাখির চোখ করে মাঠে নামে রিয়াল। গতবার এই শিরোপা জিতলেও এবার কোয়ার্টার ফাইনালে আর্সেনালের কাছে হেরে বিদায় নিয়েছে রিয়াল। লা লিগা শিরোপা জয়ের দৌড়েও বার্সেলোনার চেয়ে ৪ পয়েন্ট পিছিয়ে আনচেলত্তির দল। দুই দলেরই বাকি ৬টি করে ম্যাচ। বলতে গেলে এ মৌসুমে শুধু কোপা দেল রে জয়েরই ভালো সম্ভাবনা আছে রিয়ালের। আগামী রোববার সেই ফাইনালেও তাদের প্রতিপক্ষ বার্সেলোনা। যাদের কাছে এ মৌসুমে আগের দুটি ক্লাসিকোতেও হেরেছে রিয়াল।

কাপেলো নিজেও দুই মেয়াদে রিয়ালের কোচ ছিলেন। ১৯৯৬-৯৭ ও ২০০৬-৭ মৌসুমে রিয়ালের কোচ হিসেবে লা লিগা জিতেছেন। স্বাভাবিকভাবেই মাদ্রিদের ক্লাবটির পরিবেশ এবং প্রত্যাশার বিষয়ে ইতালিয়ান এই কোচের খুব ভালো জানাশোনা। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই মনে করেন, রিয়ালের জার্সির ওজনটা বহন করতে কষ্ট হচ্ছে এমবাপ্পের। পিএসজি ছেড়ে এমবাপ্পে আসলে কোথায় খেলতে গেছেন, সেটা সম্ভবত তিনি এখনো বুঝতে পারেননি বলেই মনে করেন কাপেলো।

গত রাতে লরিয়াস স্পোর্টস অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে কাপেলো বলেছেন, ‘রিয়াল মাদ্রিদের জার্সির ওজন অনেক বেশি। সম্ভবত সে (এমবাপ্পে) কোথায় খেলতে গেছে, সেটা এখনো ভালোভাবে বুঝে উঠতে পারেনি। সমস্যা হলো সে সেন্টার ফরোয়ার্ড নয়, তাকে এবং ভিনিসিয়ুসকে একসঙ্গে খেলতে হচ্ছে।’

৭৮ বছর বয়সী কাপেলো মনে করেন, মৌসুম বাঁচাতে এবার কোপা দেল রে জিততেই হবে রিয়ালকে, ‘সবাই ভেবেছিল এমবাপ্পে, ভিনিসিয়ুস ও বেলিংহামকে নিয়ে মাদ্রিদ ভালো করবে। সেটা তো হলো না। কিন্তু এ বছর তাদের কাপ জিততেই হবে। কিছু একটা জিততেই হবে।’

গত জানুয়ারিতে স্প্যানিশ সুপার কোপা ফাইনালে বার্সার কাছে ৫–২ গোলে হারে রিয়াল। এ ম্যাচে এমবাপ্পে একটি গোল করলেও বেশ কিছু সুযোগ নষ্ট করেছিলেন। তার আগে গত বছর অক্টোবরে রিয়ালের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে লিগে ৪–০ গোলে হারে স্বাগতিকরা। এমবাপ্পে এ ম্যাচে পুরো সময় খেলেও গোল পাননি। শুধু তা–ই নয়, আর্সেনালের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগ কোয়ার্টার ফাইনালের দুই লেগেও গোল করতে পারেননি এমবাপ্পে। বার্নাব্যুতে অনুষ্ঠিত সেই ফিরতি লেগে রিয়ালের পারফরম্যান্স নিয়ে কাপেলো বলেছেন, ‘সবাই যেমনটা ভেবেছিল, তেমন হয়নি, মাদ্রিদ আসলে মাদ্রিদের মতো খেলেনি। ঘুরে দাঁড়ানোর যেমন ইচ্ছা ও খেলার মান প্রয়োজন, সেটা তাদের খেলায় ছিল না।’

গুরুত্বপূর্ণ এসব ম্যাচে প্রয়োজনের সময়ে গোল না পাওয়ায় রিয়ালও সাফল্যের দেখা পায়নি। এতে চাপ বেড়েছে আনচেলত্তির ওপর। ইতালিয়ান এই কোচ রিয়ালে আর কত দিন থাকবেন, তাঁকে ছাঁটাই করা হবে কি না, মৌসুম শেষ করতে পারবেন কি না—এমন সব আলোচনা চলছে ইউরোপিয়ান ফুটবলে। এমনকি কোনো কোনো সংবাদমাধ্যম আগেভাগেই জানিয়ে দিয়েছে, রিয়ালে আনচেলত্তির জায়গা নিতে যাচ্ছেন জাবি আলোনসো। কাপেলো মনে করেন, এসব আলোচনার মাধ্যমে আনচেলত্তির প্রতি আসলে অবিচার করা হচ্ছে, প্রাপ্য সম্মানটা তাকে দেওয়া হচ্ছে না, ‘আমি একজন আনচেলোতিস্তা (আনচেলত্তির ভক্ত)। আনচেলত্তির সঙ্গে যা করা হয়েছে, সেটা তার প্রতি অবিচার এবং রিয়ালকে তিনি যত শিরোপা জিতিয়েছেন, সেসব বিচারে তার প্রতি অসম্মান।’

রিয়ালের কোচ হিসেবে এটা দ্বিতীয় মেয়াদ চলছে আনচেলত্তির। ২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ক্লাবটির কোচের দায়িত্বে ছিলেন। এরপর ২০২১ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেন। তাঁর অধীনে দুবার লা লিগা, তিনবার চ্যাম্পিয়নস লিগ, দুবার কোপা দেল রে, ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ, স্প্যানিশ সুপার কোপা ও তিনবার উয়েফা সুপার কাপ জিতেছে রিয়াল।