সাংবিধানিক স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’, বিএনপির সংশোধনী প্রস্তাব

- আপডেট সময় ০৯:৪২:১৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫
- / 2
ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’-কে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে চায়। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন এই সরকারের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে ঘোষণাপত্রের একটি খসড়া বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে পাঠানো হয়েছে। ৫ আগস্টের আগেই এটি চূড়ান্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
সরকারি সূত্রে জানা গেছে, অর্থনীতিবিদ ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদকে খসড়া তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয় এবং তিনি বিএনপির কাছে একটি খসড়া পাঠান। ঘোষণাপত্রে ১৯৪৭ থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থান পর্যন্ত বিভিন্ন ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরা হয়েছে। শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও ভারতে পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টিও এতে উল্লেখ রয়েছে। ফ্যাসিস্ট সরকারের অধীনে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার নিশ্চিত করার কথাও খসড়ায় রয়েছে।
তবে বিএনপির নেতারা মনে করেন, খসড়াটিতে ভাষাগত কিছু জটিলতা রয়েছে এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক ঘটনাকে উপেক্ষা করা হয়েছে। বিশেষ করে ভাষা আন্দোলন ১৯৫২, শিক্ষা আন্দোলন ১৯৬২ এবং ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থানের মতো ঘটনার উল্লেখ নেই। বিএনপি এগুলোর সংযুক্তি এবং ভাষাগত সংশোধনের প্রস্তাব দেবে বলে জানা গেছে।
দলটির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য প্রথম আলোকে জানান, ঘোষণাপত্রটি একটি রাজনৈতিক দলিল হিসেবে আর্কাইভে সংরক্ষিত থাকতে পারে। তবে ২০২৪ সালের অভ্যুত্থানকে সংবিধানের চতুর্থ তফসিলে যুক্ত করার বিষয়ে আলোচনা চলছে।
এদিকে দীর্ঘ পাঁচ মাস সরকারি কোনো অগ্রগতি না থাকায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আন্দোলনের মুখে গত ১০ মে উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ সভায় ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করার সিদ্ধান্ত হয়।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সাম্প্রতিক সভায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে চলমান সংলাপ, সাংবিধানিক সংস্কার এবং নারীদের সংসদীয় আসন ৫০ থেকে ১০০-তে উন্নীত করার মতো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়েও আলোচনা হয়। তবে নারীরা কীভাবে নির্বাচিত হবেন, তা নিয়ে এখনো রাজনৈতিক ঐকমত্য হয়নি।
সভায় যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কনীতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন বিএনপি নেতারা এবং আমদানি পণ্যের ওপর আরোপিত ৩৫ শতাংশ মার্কিন শুল্ক পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানান।