প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে মেধা-ভিত্তিক নতুন যুগ: বাতিল হচ্ছে নারী ও পোষ্য কোটা

- আপডেট সময় ১১:৫৫:২৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৯ এপ্রিল ২০২৫
- / 28
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ ব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায়ের ভিত্তিতে তৈরি হচ্ছে নতুন নিয়োগ বিধিমালা, যেখানে ৯৩ শতাংশ পদে কেবল মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ হবে।
নতুন এই ব্যবস্থায় ৮০ শতাংশ নারী ও পোষ্য কোটা বাতিল করা হয়েছে। কেবলমাত্র ৭ শতাংশ কোটা থাকবে বিশেষ শ্রেণির জন্য এর মধ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য ১ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের নাগরিকদের জন্য ১ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত থাকবে।
মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী কোটা বিন্যাসের নতুন রূপরেখা নিয়েই নিয়োগ বিধিমালার খসড়া প্রস্তুত করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এটি অনুমোদন পেলেই নতুন নিয়মে শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম শুরু হবে।
২০১৯ সালের নিয়োগ বিধিমালায় যেখানে নারী প্রার্থীদের জন্য ৬০ শতাংশ ও পোষ্যদের জন্য ২০ শতাংশ কোটা ছিল, এবার তা পুরোপুরি তুলে দেওয়া হচ্ছে। পূর্ববর্তী বিধিমালায় সরকারি বিদ্যালয়ের বর্তমান বা সাবেক শিক্ষকের অবিবাহিত সন্তান, বিধবা স্ত্রী, বিপত্নীক স্বামী কিংবা তালাকপ্রাপ্ত মেয়েরা পোষ্য কোটার সুবিধা পেতেন।
গত বছরের ৮ ডিসেম্বর খুলনায় আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার জানিয়েছিলেন, প্রাথমিকে কেবল মেধার ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে।
এদিকে, ২০১৮ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলনের ফলে সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান ৫৬ শতাংশ কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে হাইকোর্ট সেই সিদ্ধান্ত বাতিল করে কোটা পুনর্বহালের নির্দেশ দেয়, যা থেকে আবারও ছাত্র আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে।
সর্বশেষ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ কোটা ইস্যুতে চূড়ান্ত রায় দিয়ে নতুন বিন্যাস নির্ধারণ করে দেয়। সেই অনুযায়ীই তৈরি হচ্ছে এই নতুন শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর, ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেন এবং এই নিয়োগ সংস্কারের কাজ ত্বরান্বিত করেন।
এই পরিবর্তন প্রাথমিক শিক্ষায় গুণগত মান বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।