ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনে মুসলিম দেশগুলোর ভূমি ছেড়ে দেওয়া উচিত: মার্কিন রাষ্ট্রদূত হাকাবি

- আপডেট সময় ০২:৫০:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ জুন ২০২৫
- / 8
ইসরায়েলে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মাইক হাকাবি বলেছেন, ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের জন্য মুসলিম দেশগুলোর উচিত তাদের কিছু জমি ছেড়ে দেওয়া। বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “মুসলিম দেশগুলোর রয়েছে ইসরায়েলের চেয়ে ৬৪৪ গুণ বেশি জমি।” তাই তাঁর মতে, ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের জন্য মুসলিম বিশ্বের অন্য কোনো দেশে জায়গা খুঁজে বের করাই যৌক্তিক।
কট্টর ইহুদিবাদী মনোভাবের জন্য পরিচিত হাকাবি পশ্চিম তীরকে “জুদিয়া ও সামারিয়া” নামে অভিহিত করেন এবং দখলকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলের স্থায়ী কর্তৃত্বের পক্ষে অবস্থান নেন। তাঁর এই মন্তব্যকে অনেকেই ইসরায়েলের অতিরাষ্ট্রবাদী চক্রের বক্তব্যের সঙ্গে তুলনা করছেন, যারা চায় ফিলিস্তিনিদের গাজা ও পশ্চিম তীর থেকে তাড়িয়ে দিয়ে অন্য কোনো মুসলিম দেশে তাদের স্থানান্তর করতে।
তবে ইউরোপীয় দেশ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর মতে, এই ধরনের নীতিমালা আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
সাম্প্রতিক সময়ে অধিকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে সহিংসতায় ইন্ধন দেওয়ায় ইসরায়েলের কট্টরপন্থী দুই মন্ত্রীর ওপর যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, নরওয়ে, কানাডা ও নিউজিল্যান্ড নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এর বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন হাকাবি। তিনি বলেন, “এই দুই নির্বাচিত মন্ত্রীর বিরুদ্ধে কোনো গ্রহণযোগ্য কারণ দেখিনি। এটি ইসরায়েলের সার্বভৌমত্বের ওপর হস্তক্ষেপ।”
হাকাবি ‘দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান’কে একটি উচ্চাকাঙ্ক্ষী পরিকল্পনা বলে উল্লেখ করেন। যদিও এই সমাধান অনুযায়ী, পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ইসরায়েলের পাশাপাশি গড়ে তোলার প্রস্তাব রয়েছে।
ব্লুমবার্গকে দেওয়া আরেক সাক্ষাৎকারে হাকাবি জানান, যুক্তরাষ্ট্র এখন আর স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে সক্রিয়ভাবে কাজ করবে না। তবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, রাষ্ট্রদূতের এসব মন্তব্য তার ব্যক্তিগত মতামত এবং মার্কিন নীতির নির্ধারণ প্রেসিডেন্টের এখতিয়ার।
এদিকে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে এ মাসের শেষ দিকে ফ্রান্স ও সৌদি আরবের উদ্যোগে একটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, যেখানে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ রূপরেখা নিয়ে আলোচনা হবে। হাকাবি এই সম্মেলনকে সময়োপযোগী নয় বলে মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, “একটি যুদ্ধ চলাকালে এ ধরনের পরিকল্পনা চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা ইসরায়েলের নিরাপত্তাকে আরও দুর্বল করে দেবে।”