গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধ ও ত্রাণ প্রবেশে চাপ বাড়াচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন

- আপডেট সময় ১২:২৫:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫
- / 4
গাজায় চলমান মানবিক সংকট ও ত্রাণ প্রবেশে বাধার বিষয়ে ইসরায়েলের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো। যুদ্ধবিধ্বস্ত এই অঞ্চলে সামরিক অভিযান বন্ধের আহ্বান জানিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন জানিয়েছে, তারা ইসরায়েলের সাথে বিদ্যমান বাণিজ্য সহযোগিতা চুক্তি পর্যালোচনা করবে।
ইইউ’র পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক প্রধান কাজা কালাস জানিয়েছেন, ২৭টি সদস্য দেশের ‘একাধিক সংখ্যাগরিষ্ঠ’ পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই পদক্ষেপের প্রতি সমর্থন দিয়েছেন। তিনি বলেন, “দেশগুলো মনে করে গাজার পরিস্থিতি অস্থির, এবং আমরা চাই মানবিক সহায়তার প্রবেশ নিশ্চিত হোক।”
এদিকে, সুইডেন জানিয়েছে, তারা ইসরায়েলি মন্ত্রীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য ইইউকে চাপ দেবে। ব্রিটেন এরইমধ্যে ইসরায়েলের সাথে মুক্ত-বাণিজ্য আলোচনা স্থগিত করেছে এবং পশ্চিম তীরের বসতি স্থাপনকারীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এছাড়া তারা ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি বলেছেন, “সহায়তা বন্ধ করা, যুদ্ধ বাড়ানো, এবং মিত্রদের উদ্বেগকে অগ্রাহ্য করা এক ধরনের অমানবিকতা, যা বন্ধ হওয়া উচিত।”
ইসরায়েল এসব পদক্ষেপ প্রত্যাখ্যান করে জানিয়েছে, এসব ‘বাস্তবতার ভুল ব্যাখ্যা’। ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওরেন মারমোরস্টাইন বলেন, “এই চাপ আমাদের নিরাপত্তা ও অস্তিত্ব রক্ষার পথ থেকে সরিয়ে দেবে না।”
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা সংস্থা কোগ্যাট জানিয়েছে, মঙ্গলবার গাজায় জাতিসংঘের ৯৩টি ট্রাক প্রবেশ করেছে। এসব ট্রাকে ছিল বেকারির জন্য ময়দা, শিশুখাদ্য, চিকিৎসা সরঞ্জাম ও ওষুধ।
তবে জাতিসংঘ জানিয়েছে, সহায়তা কার্যত বন্ধ অবস্থায় রয়েছে। সংস্থার মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেন, “আজ আমাদের একটি দল ইসরায়েলি অনুমতির জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেছে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত সরবরাহ সংগ্রহ করতে পারেনি।”
জাতিসংঘের মানবিক প্রধান টম ফ্লেচার বলেন, সোমবার অনুমতি পাওয়া ৯টি ট্রাক ‘জরুরি চাহিদার তুলনায় এক ফোঁটা পানির মতো।’ তিনি সতর্ক করে বলেন, “যদি যথাসময়ে সহায়তা না পৌঁছায়, তাহলে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রায় ১৪ হাজার শিশু মৃত্যুবরণ করতে পারে।”
মার্কিন সিনেট বৈদেশিক সম্পর্ক কমিটিতে মার্কো রুবিও বলেছেন, বর্তমানে ত্রাণ সরবরাহ প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম হলেও আগামী দিনগুলোতে এই প্রবাহ বাড়বে বলে আশা করছেন।
এদিকে, গাজার হামাস শাসকদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। তারা জানায়, হামাসকে পরাজিত করার লক্ষ্যে অভিযান জোরদার করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকেই চলমান এ যুদ্ধ শুরু হয়।
সূত্র: এএফপি ও ব্লুমবার্গ