ম্যারাডোনার মৃত্যুর পেছনে অবহেলা?: সাত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা ও বিচার শুরু
২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর, ফুটবল দুনিয়ার কিংবদন্তি ডিয়েগো ম্যারাডোনার আকস্মিক মৃত্যু সারা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করে। তার মৃত্যুর কারণ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে অসুস্থতার কারণে স্বাভাবিক মৃত্যু, নাকি চিকিৎসকদের অবহেলায় তার জীবন শেষ হয়ে গেছে? তার মৃত্যুর পর ম্যারাডোনার চিকিৎসায় নিয়োজিত আটজন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। এর মধ্যে সাতজনের বিরুদ্ধে চিকিৎসা অবহেলা এবং অপরাধের অভিযোগে বিচার শুরু হয়েছে ১১ মার্চ।
ম্যারাডোনার মৃত্যু মস্তিষ্কের অস্ত্রোপচারের দু’সপ্তাহ পর। তিনি বুয়েনস আয়ার্সের এক অভিজাত এলাকায় ভাড়া করা একটি বাড়িতে থাকতেন। বিশ্বকাপ জয়ী এই ফুটবল কিংবদন্তির মৃত্যু হয়েছিল হার্ট অ্যাটাকে। দীর্ঘদিন ধরে কোকেইন ও মদ্যপানসহ নানা আসক্তির কারণে তার স্বাস্থ্য পরিস্থিতি অবনতির দিকে চলে গিয়েছিল।
এই মামলার অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন নিউরোসার্জন, মনোরোগবিশেষজ্ঞ, মনোবিজ্ঞানী, মেডিকেল কো-অর্ডিনেটর, নার্স কো-অর্ডিনেটর, চিকিৎসক এবং রাতের পালার নার্স। ম্যারাডোনাকে দিনের বেলায় দেখভাল করতেন এক নার্স, যার বিচার আলাদাভাবে হবে। সরকারি কৌঁসুলি দাবি করেছেন, এই চিকিৎসক দল ম্যারাডোনাকে বাড়িতে চিকিৎসাসেবা নেয়ার জন্য চাপ দিয়েছিল, যা ছিল ‘অবিবেচনাপ্রসূত’ এবং ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ সিদ্ধান্ত।
আধিকারিকরা জানিয়েছেন, যদি চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে অবহেলা প্রমাণিত হয়, তবে তাদের ৮ থেকে ২৫ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। তারা এমন একটি পদক্ষেপ গ্রহণে দায়ী, যা তারা জানতেন ম্যারাডোনার মৃত্যুর কারণ হতে পারে।
বিচারপ্রক্রিয়া এখনও চলমান এবং বুয়েনস আইরেসের সান ইসিদ্রো শহরতলীতে এই বিষয়ে ১০০ জনের বেশি সাক্ষী সাক্ষ্য দেবেন। ম্যারাডোনার পরিবারের সদস্যসহ তার বহু বছরের চিকিৎসকও এই মামলায় সাক্ষ্য দেবেন। শুনানি জুলাই পর্যন্ত চলতে পারে।
ম্যারাডোনার ফুটবল ক্যারিয়ার অসাধারণ ছিল। ১৯৮৬ বিশ্বকাপে তার একক নৈপুণ্যে আর্জেন্টিনা জয়ী হয়েছিল বিশ্বকাপ। এরপর থেকে তিনি বিশ্বব্যাপী এক অমর কিংবদন্তি হয়ে উঠেছিলেন।